চীনের সামরিক বাহিনীতে পরিবর্তন : শক্তি প্রদর্শনী নাকি কৌশল বদল
চীনের সামরিক বাহিনীতে এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় পরিবর্তন হয়েছে। দেশটির পরমাণু অস্ত্রভাণ্ডার তদারকির দায়িত্বে নিয়োজিত শীর্ষ দুই জেনারেল দৃশ্যপট থেকে আড়াল হওয়া এবং এরপর তেমন কোনো ব্যাখ্যা ছাড়াই তাদেরকে সরিয়ে দেয়ার প্রেক্ষাপটে এসব পরিবর্তন হয়।
চীনা রাজনীতির ওপর নজর রাখা কানাডাভিত্তিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান সারসিয়াস গত মাসে জানায় যে পিপলস লিবারেশন আর্মি রকেট ফোর্স (পিএলএআরএফ)-এর সাবেক কমান্ডার লি ইউচাও এবং তার ডেপুটি লিউ গুইঙবিনসহ বাহিনীটির প্রায় ১০ বর্তমান ও অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তার অবস্থান এখনো অস্পষ্ট।
হংকংভিত্তিক ইংরেজিভাষী পত্রিকা সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট জানিয়েছে, লি এবং তার বর্তমান ও সাবেক সহকারীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত চলছে। আর তা করছে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের নেতৃত্বাধীন সেন্ট্রাল মিলিটারি কমিশন (সিএমসি)।
গত জুলাই মাসে পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীকে সামনে রেখে অন্য একটি উচ্চপর্যায়ের সামরিক সম্মেলনে শি ‘কঠোর শৃঙ্খলার’ ওপর জোর দিয়েছিলেন। তিনি সামিরক বাহিনীর ওপর চীনা কমিউনিস্ট পার্টির (সিসিপি) ‘নিরঙ্কুশ কর্তৃত্বের’ কথাও বলেছিলেন।
এদিকে সিএমসি যে নিদের্শনা জারি করেছে তাতে সেনাবাহিনীকে বৃহত্তর যুদ্ধপ্রস্তুতির কথা বলা হয়েছে।
এ রনের বক্তব্যের ব্যাপক তাৎপর্য রয়েছে বলে জল্পনা শুরু হয়েছে।
চীনের সরকারি সিনহুয়া বার্তা সংস্থার মতে, নৌবাহিনীল সাবেক ডেপুটি কমান্ডার ওয়াং হবিন পিএলএআরএফের নতুন প্রধান হবে। আর সাউদার্ন থিয়েটার কমান্ডের ঝু ঝিশেং হবেন নতুন রাজনৈতিক কমিসার।
এশিয়া সোসাইটি পলিসি ইনস্টিটিউটের সেন্টার ফর চায়না এনালাইসিসের সিনিয়র ফেলো লাইল মরিস বলেন, বেইজিং নজিরবিহীনভাবে শীর্ষ কর্মকর্তাদের সরিয়ে দিয়ে রকেট বাহিনীতে অভিজ্ঞতা নেই, এমনদের সেখানে দায়িত্ব দিচ্ছে।
তিনি বলেন, এটি অপারেশনগত পদক্ষেপ নয়, বরং রাজনৈতিক বিষয়। শির আস্থাভাজনদের সামনে আনার ব্যবস্থা।
পিএলএআরএফের শীর্ষ নেতাদের সরিয়ে দেয়ার মতো একই ঘটনা ঘটেছে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিন গঙের অপসারিত হওয়ার এক মাস আগে হঠাৎ করে অন্তরালে চলে যাওয়ার ঘটনায়। তার স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন তার পূর্বসূরী ওয়াং ইয়ি।
অনেকেই এখন মনে করছেন, তাইওয়ানকেন্দ্রিক অভিযানে পরিবর্তন আনার জন্যই শীর্ষ পদগুলোতে বদল করেছেন শি।