চীন-ভারত-পাকিস্তান, সবাই কেন তালেবানকে কাছে টানছে

তালেবান আজকের আফগানিস্তানের বাস্তবতা। কারণ, তারা পুরো ভূখণ্ড ও সীমান্তের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সেজন্য আঞ্চলিক দেশগুলো এই বাস্তবতাকে স্বীকার করে ইসলামিক আমিরাতের সাথে বিভিন্ন পর্যায়ে যোগাযোগ করছে। এটি বাস্তববাদী ও যুক্তিসঙ্গত পন্থা।’
জাতিসঙ্ঘ কিংবা বিশ্বের কোনো দেশই আফগানিস্তানের বর্তমান সরকারকে এখনো স্বীকৃতি দেয়নি। তবু আফগানিস্তানের ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকির সময়টা সম্প্রতি ছিল ব্যতিক্রমধর্মীভাবে ব্যস্ত।
তিনি পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে আতিথ্য দিয়েছেন। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে ফোনে কথা বলেছেন। সফর করেছেন ইরান ও চীনে। বেইজিংয়ে আবার পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে দ্বিতীয়বার দেখা করেছেন। এমনকি বুধবার তিনি চীন ও পাকিস্তানের প্রতিনিধিদের সাথে একটি ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে অংশ নেন।
তালেবান সরকারের ঐতিহাসিকভাবে এই দেশগুলোর অনেকের সাথেই ছিল টানাপোড়েনের সম্পর্কে। পাকিস্তান একসময় তাদের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্র হলেও বর্তমানে পারস্পরিক আস্থা প্রায় তলানিতে।
বিশ্বের কেউই তালেবান সরকারকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি না দিলেও বিশ্লেষকদের মতে, সাম্প্রতিক কূটনৈতিক তৎপরতা প্রমাণ করে যে তালেবানকে আর উপেক্ষা করা যাচ্ছে না।
তবে প্রশ্ন হলো, আফগানিস্তানের আশেপাশের দেশগুলো কেন এখনো স্বীকৃতি না দিয়েও তালেবানের সাথে আলোচনায় আগ্রহী হয়ে উঠছে?
চলুন দেখে নেই তালেবানদের সাম্প্রতিক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকগুলো কী বলছে। কেন ভারত, পাকিস্তান ও ইরান তালেবান-শাসিত কাবুলের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নে আগ্রহী হয়ে উঠেছে।
মুত্তাকি কার কার সাথে দেখা করেছেন?
১৯ এপ্রিল : পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার কাবুল সফর করেন। তিনি মুত্তাকি ও অন্যান্য আফগান নেতাদের সাথে সাক্ষাৎ করেন। বৈঠকে আফগান শরণার্থীদের প্রত্যাবাসন, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হয়।
৬ মে : পহেলগামে হামলার পর ভারত-পাকিস্তান সঙ্ঘাত শুরু হয়। পরস্পরের বিরুদ্ধে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলায় চার দিনে প্রাণ হারায় অন্তত ২৬ জন।
১৫ মে : ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর মুত্তাকিকে ফোন করে পেহেলগাম হামলার নিন্দা জানান।
১৭ মে : মুত্তাকি ইরানের রাজধানী তেহরানে ‘তেহরান সংলাপ ফোরামে’ অংশ নেন। সেখানে তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি ও রাষ্ট্রপতি মাসুদ পাজেশকিয়ানের সাথে বৈঠক করেন।
২১ মে : তিনি বেইজিং সফর করেন এবং আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও চীনের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় আলোচনা হয়। আলোচনার মূল লক্ষ্য ছিল বাণিজ্য ও নিরাপত্তা সহযোগিতা বাড়ানো।
তালেবানদের অবস্থান কী?
তালেবানের কাতার-ভিত্তিক রাজনৈতিক দফতরের প্রধান সুহাইল শাহীন বলেন, তারা আজকের আফগানিস্তানের বাস্তবতা। কারণ, তারা পুরো ভূখণ্ড ও সীমান্তের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তার মতে, ‘আঞ্চলিক দেশগুলো এই বাস্তবতাকে স্বীকার করছে। তাই তারা ইসলামিক আমিরাতের সাথে বিভিন্ন পর্যায়ে যোগাযোগ করছে। এটি বাস্তববাদী ও যুক্তিসঙ্গত পন্থা।’
তিনি আরো বলেন, ‘আলোচনার মাধ্যমেই সমস্যা সমাধান সম্ভব। তাই তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দিতে আর দেরি করা উচিত নয়।’ তার মতে, ‘প্রতিটি দেশের নিজস্ব স্বার্থ ও লক্ষ্য রয়েছে। আমাদের উচিত সেগুলো অনুসরণ করা।’
ভারত কেন তালেবানের দিকে ঝুঁকছে?
ভারত ও তালেবানের সম্পর্ক এক সময় ছিল একেবারেই শীতল। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তালেবানের প্রথম শাসনামলে ভারত তাদের স্বীকৃতি দেয়নি। বরং তাদের পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থার হাতের পুতুল মনে করতো। তালেবানের আগমনের পর ভারত কাবুলে তাদের দূতাবাস বন্ধ করে দেয়। তখন ভারত সমর্থন দিয়েছিল তালেবানবিরোধী ‘নর্দার্ন অ্যালায়েন্স’ গোষ্ঠীকে।
২০০১ সালে তালেবান ক্ষমতা হারালে ভারত কাবুলে আবার দূতাবাস চালু করে। পরবর্তী ২০ বছরে ভারত আফগানিস্তানে অবকাঠামো, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও জলসম্পদে ৩ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি বিনিয়োগ করে। তবে আফগানিস্তানে ভারতীয় স্থাপনাগুলোর ওপর হামলা চালায় তালেবান ও তাদের মিত্ররা, বিশেষ করে হাক্কানি নেটওয়ার্ক। ২০২১ সালের আগস্টে তালেবান পুনরায় ক্ষমতায় ফিরলে নয়াদিল্লি তাদের দূতাবাস বন্ধ করে। ভারত তখনো এই গোষ্ঠীকে স্বীকৃতি দিতে অস্বীকৃতি জানায়। তবে আগেরবারের তুলনায় এবার ভিন্ন কৌশল নেয় ভারত। তারা তালেবানের সাথে কূটনৈতিক যোগাযোগ শুরু করে- প্রথমে গোপনে, পরে ক্রমে প্রকাশ্যে।
বিশ্লেষকদের মতে, ভারতের অবস্থান পরিবর্তনের যুক্তি ছিল সরল। তারা বুঝে ফেলেছিল যে তালেবানকে উপেক্ষা করে তারা কার্যত আফগানিস্তানকে পাকিস্তানের প্রভাবের কাছে ছেড়ে দিচ্ছে।
ক্ষমতা দখলের এক বছরের মধ্যেই ২০২২ সালের জুনে ভারত আবার কাবুলে দূতাবাস খোলে। তারা সেখানে ‘প্রযুক্তিগত বিশেষজ্ঞদের’ একটি দল মোতায়েন করে। ২০২৪ সালের নভেম্বরে তালেবান মুম্বাইয়ের আফগান কনস্যুলেটে একজন ভারপ্রাপ্ত কনসাল নিয়োগ করে। এরপর চলতি বছরের জানুয়ারিতে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিস্রি এবং তালেবান পররাষ্ট্রমন্ত্রী মুত্তাকি দু’জনই দুবাইয়ে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে মিলিত হন। এটি ছিল তালেবান ও ভারতের মধ্যে এযাবৎকালের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মুখোমুখি সংলাপ।
নয়াদিল্লিভিত্তিক থিংকট্যাংক অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক কবির তানেজা বলেন, ‘কাবুলে যে রাজনৈতিক বাস্তবতাই আসুক না কেন, তা উপেক্ষা করা ভারতের জন্য কখনোই বিকল্প ছিল না।’
তিনি বলেন, ‘কেউই খুশি নয় যে বাস্তবতা হলো তালেবান।’ তবু তালেবান-ক্ষমতাগ্রহণের পর ভারতের আফগান জনতার প্রতি গুডউইল গঠনের বহু বছরের প্রচেষ্টা পুরোপুরি বন্ধ হয়নি।
তানেজা আরো বলেন, ‘তালেবানের আদর্শিক ঘাঁটি দারুল উলুম দেওবন্দ মাদরাসা নিজেই ভারতের মাটিতে অবস্থিত। এই দেশ এবং তার প্রভাবশালী শক্তিগুলোর সাথে সম্পর্ক কখনো একেবারে বিচ্ছিন্ন হয় না। এসব বাস্তবতা মেনে নিয়েই চলতে হয়।’
পাকিস্তানের হিসাব?
১৯৯৬ থেকে ২০২১ পর্যন্ত তালেবানের অন্যতম প্রধান পৃষ্ঠপোষক ছিল পাকিস্তান। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোয় তাদের সম্পর্কের ভিত টলতে শুরু করেছে। ২০২১ সালে তালেবান ক্ষমতায় ফেরার পর পাকিস্তানে সশস্ত্র হামলার ঘটনা বেড়ে যায়। পাকিস্তান এসব হামলার জন্য দায়ী করে তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি)-কে।
ইসলামাবাদ দাবি করে, টিটিপি আফগান মাটি ব্যবহার করে। তারা তালেবান সরকারকে দোষ দেয় টিটিপিকে আশ্রয় দেয়ার জন্য। তবে তালেবান সরকার এসব অভিযোগ অস্বীকার করে।
২০০৭ সালে ‘উগ্রবাদবিরোধী যুদ্ধে’র আবহে গঠিত টিটিপি বহুদিন ধরে সহিংস উপায়ে ইসলামাবাদের রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করে আসছে। যদিও তারা আফগান তালেবান থেকে আলাদা। তবু আদর্শিকভাবে অনেকটাই মিল রয়েছে।
লাহোর বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর সিকিউরিটি, স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড পলিসি রিসার্চের পরিচালক রাবিয়া আখতার বলেন,
দার-এর কাবুল সফর এবং মুত্তাকির সাথে পাকিস্তানি সংলাপ আসলে বড় কোনো রূপান্তর নয়। বরং একটি ‘কৌশলগত, সাময়িক বরফ গলা।’
তিনি বলেন, সাম্প্রতিক ভারত-পাক উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে পাকিস্তান উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে যে নয়াদিল্লি আফগান ভূখণ্ড ব্যবহার করে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অপারেশন চালাতে পারে। এ কারণে ইসলামাবাদ তার পশ্চিম সীমান্ত নিরাপদ করতে আগ্রহী হয়ে উঠেছে।
এদিকে, এ বছরের শুরুতে পাকিস্তান বহু আফগান শরণার্থীকে বহিষ্কার করে। অনেকেই ছিলেন যারা সারা জীবন পাকিস্তানেই কাটিয়েছেন। তদুপরি, ঘন ঘন সীমান্ত বন্ধের কারণে বাণিজ্য ব্যাহত হচ্ছে। এসবই সম্পর্কের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে।
আখতার বলেন, বিশেষ করে শরণার্থীদের ইস্যু ভবিষ্যতের দুই দেশের সম্পর্ককে গভীরভাবে প্রভাবিত করতে পারে। পাকিস্তান অনিবন্ধিত আফগানদের ফেরত পাঠাতে চায়। কিন্তু কাবুল মনে করে এটি শাস্তিমূলক পদক্ষেপ।’
তিনি বলেন, ‘যদি এই সংলাপ ইঙ্গিত দেয় যে উভয় দেশই সংঘর্ষকে স্থায়ী সমাধান মনে করে না, বিশেষ করে অঞ্চলজুড়ে জটিল বাস্তবতা ও অর্থনৈতিক চাপের মধ্যে। তবে সেটি একটি ইতিবাচক সঙ্কেত।’
তালেবানের মুখপাত্র শাহীন বলেন, ‘আমরা ইসলামাবাদের সাথে ভালো সম্পর্ক চাই। তবে ভালো সম্পর্কের জন্য প্রতিদানও পাওয়া উচিত। দোষারোপের রাজনীতি কাউকেই লাভবান করে না।’
শাহীন জানান, আফগানিস্তান ইতোমধ্যে সীমান্তে চেকপোস্ট নির্মাণ শুরু করেছে। এর উদ্দেশ্য- যেন সীমান্ত অবৈধভাবে কেউ পার না হতে পারে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, তাদের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা পাকিস্তানের দায়িত্ব; আমাদের নয়।’
চীনের ভূমিকায় নতুন গতি
বুধবার বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে চীন জানায়, কাবুল ও ইসলামাবাদ নীতিগতভাবে কূটনৈতিক সম্পর্ক বাড়াতে সম্মত হয়েছে। দুই দেশই যত দ্রুত সম্ভব রাষ্ট্রদূত পাঠাবে।
তবু রাবিয়া আখতার বিশ্বাস করেন না যে দুই দেশের ‘গভীর অনাস্থা’, বিশেষ করে টিটিপিকে ঘিরে অনাস্থা সহজে দূর হবে। তিনি বলেন, এই পরিবর্তনকে কাঠামোগত পুনর্মিলন ভাবার সুযোগ নেই। বরং এটি ভারত-পাক উত্তেজনার পর ইসলামাবাদের বৃহত্তর সঙ্কট ব্যবস্থাপনার একটি অংশ।’
ইরানের হিসাব?
ভারতের মতো, ইরানও তালেবানকে স্বীকৃতি দিতে প্রথমে অস্বীকৃতি জানায়। বিশেষ করে ১৯৯৮ সালে মাজার-ই-শরীফে তালেবান যোদ্ধাদের হাতে ইরানি কূটনীতিক হত্যার পর তাদের মনোভাব আরো কঠোর হয়ে ওঠে। এই ঘটনার জেরে ইরান তার পূর্ব সীমান্তে হাজার হাজার সৈন্য মোতায়েন করে। পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায়, যেন তালেবানের সাথে যুদ্ধ অনিবার্য হয়ে উঠেছিল।
৯/১১-পরবর্তী সময়ে এই অঞ্চলে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে তেহরান। ফলে নীরবে তালেবানদের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করে ইরান। মার্কিন প্রভাব মোকাবিলা এবং নিজস্ব কৌশলগত স্বার্থ রক্ষায় সীমিত সহায়তা দেয় তারা।
বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রায় চার বছর আগে তালেবান আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পাওয়ার পর ইরান আবারো কাবুলের শাসকদের সাথে সম্পর্ক গড়ার আগ্রহ দেখাতে শুরু করে। নিরাপত্তা, মানবিক সহায়তা ও বাণিজ্য, এই তিনটি ক্ষেত্রেই ইরান সক্রিয়ভাবে এগিয়ে আসে।
দোহায় তালেবান কার্যালয়ের প্রধান শাহীন বলেন, ‘ইরান ও ভারত এক সময় ভাবত, আমরা নাকি পাকিস্তানের প্রভাবে আছি। কিন্তু এখন তারা বুঝেছে, সেটি সত্য নয়। এই বাস্তবতা উপলব্ধি করেই তারা নতুন, বাস্তববাদী এক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করেছে, যা সকলের মঙ্গল বয়ে আনবে।’
আন্তর্জাতিক সঙ্কটের বিশ্লেষক ইব্রাহিম বাহিস বলেন, ‘মুত্তাকি ও ইরানের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ানের বৈঠক
তালেবান সরকারকে ‘স্বীকৃতি দেওয়ার ইঙ্গিত’ নয়।’ তবে তিনি বলেন, ইরান বাধ্য হয়েছে বাস্তববাদী বিবেচনায় তালেবানের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে। কারণ আফগানিস্তানে তাদের ‘গভীর স্বার্থ’ নিহিত রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ‘নিরাপত্তার প্রশ্নে তেহরান চায় আইএসআইএল-এর স্থানীয় শাখা -আইএসকেপি- নিয়ন্ত্রণে থাকুক। এই লক্ষ্যে তারা আঞ্চলিক মিত্র খুঁজছে। অন্যদিকে, বাণিজ্যিক সম্পর্কও ইরান জোরদার করতে চায়। বর্তমানে আফগানিস্তান তাদের প্রধান বাণিজ্যিক অংশীদারদের একজন।’
২০২৪ সালের জানুয়ারিতে ইরানের কেরমান শহরে জোড়া আত্মঘাতী হামলা ঘটে। এটি ছিল ইরানে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ হামলাগুলোর একটি। নিহত হয় অন্তত ৯৪ জন। এই হামলার দায় স্বীকার করে আইএসকেপি -আইএসআইএল-এর আফগানিস্তান-ভিত্তিক শাখা।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আইএসকেপি তালেবান শাসনের জন্য এক বড় হুমকি হয়ে উঠেছে। তারা আফগানিস্তানজুড়ে একাধিক আলোচিত হামলা চালিয়েছে।
বাহিস আরো বলেন, ইরানে থাকা প্রায় ৭ লাখ ৮০ হাজার আফগান শরণার্থীর সমস্যা সমাধানে তেহরানের একজন ‘ইচ্ছুক অংশীদার’ প্রয়োজন। এছাড়া হেলমান্দ নদী থেকে আসা আন্তঃসীমান্ত জলের প্রবাহও একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু।
২০২৩ সালের মে মাসে দুই প্রতিবেশীর মধ্যে উত্তেজনা তীব্র আকার ধারণ করে। সীমান্ত সংঘর্ষে নিহত হন দুই ইরানি সীমান্তরক্ষী এবং একজন তালেবান যোদ্ধা। এই সহিংসতা শুরু হয় ইরানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির এক সতর্কবার্তার পর। তিনি তালেবানদের হেলমান্দ নদী থেকে ইরানের পূর্বাঞ্চলে জলপ্রবাহ সীমিত না করতে বলেন। এটি ১৯৭৩ সালের একটি চুক্তির লঙ্ঘন বলেও অভিযোগ করেন তিনি। তবে তালেবান শাসকরা এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে।