Hot

ছাত্রলীগের পদ পেয়েই কোটিপতি বনে যান তারা

দেশের ইতিহাসে ছাত্ররাজনীতির অন্যতম প্রাচীন সংগঠন ছাত্রলীগ। দেশের স্বাধিকার আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধের মতো গৌরবগাথা অধ্যায়ের সঙ্গে ছাত্রলীগের নাম অবিচ্ছেদ্য। তবে গত কয়েক দশকে ছাত্রলীগের পরিচিতি সন্ত্রাসী, দখলদার, চাঁদাবাজ আর লুটপাটকারী সংগঠন হিসেবে। টানা ১৬ বছর ক্ষমতায় থাকার কারণে এই সংগঠনের নেতাকর্মীরা একেকজন আঙুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছেন।

শুধু কেন্দ্রীয় নেতারাই নন; জেলা পর্যায়ের নেতাদেরও কোটি কোটি টাকার মালিক হওয়ার বিস্তর অভিযোগ। দেশ-বিদেশেও সম্পদের পাহাড়।

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালে বাংলাদেশ থেকে লন্ডনে চলে যান ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম। ২০১৯ সালে তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অনুসন্ধান শুরু করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ২০১১ সালে ছাত্রলীগে তিনি যোগ দেন। জানা যায়, তিনি ব্রিটিশ পাসপোর্টধারী।

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, দেশের টাকায় লন্ডনে চারটি কম্পানি খুলে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন নাজমুল। এসব প্রতিষ্ঠানে শতকোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন তিনি।

ক্যাসিনো কেলেঙ্কারিতে জড়িতসহ ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডের অনেকের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ রয়েছে। নাজমুলের নামে ব্রিটেনের কম্পানি হাউসে আবাসন, গাড়ির অ্যাকসিডেন্ট ক্লেইম ম্যানেজমেন্ট, পণ্যের পাইকারি বিক্রেতা, বিজ্ঞাপন, চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠান, সেবা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন ধরনের ছয়টি কম্পানির অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। এর মধ্যে দুটি কম্পানির পরিচালক পদে তাঁর নাম নেই। বাকি চারটি কম্পানির মধ্যে একটির একক পরিচালক এবং আরো তিনটি কম্পানির যৌথ পরিচালক হিসেবে তিনি রয়েছেন।

ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের দুর্নীতির ব্যাপক অভিযোগ তুলেছিল খোদ সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির একটি অংশ।

২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে তাঁদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগও জানানো হয়। তৎকালীন সভাপতি ও সম্পাদকের নানা অপকর্মের বিস্তারিত তুলে ধরে করা ওই অভিযোগে তখন ১০০ কেন্দ্রীয় নেতার সই নেওয়া হয়।

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতারা জানান, আগস্টে জাতীয় শোক দিবসের মাসে কেন্দ্রীয় কমিটি বর্ধিতকরণ, ছাত্রলীগের দুই কাণ্ডারির স্বেচ্ছাচারিতা, কেন্দ্রীয় নেতাদের অবমূল্যায়ন, পদ বাণিজ্য, প্রেস রিলিজের মাধ্যমে যাচাই-বাছাই ছাড়া রাতের আঁধারে কমিটি গঠন অভিযোগে জায়গা পেয়েছে। এ ছাড়াও বিবাহিত, চাঁদাবাজ, মাদকসেবী, ছাত্রদল ও শিবিরকর্মীদের কমিটিতে পদায়ন, সাধারণ সভা না করা এবং সংগঠনের নিয়মভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ারও অভিযোগ ছিল।

২০১৯ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দরপত্র ঘিরে চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অভিযোগ ছিল ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর বিরুদ্ধে। তখন অবশ্য তাঁদের সংগঠন থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল।

আলোচিত ফরিদপুরের দুই হাজার কোটি : ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নিশান মাহমুদ শামীম দুই হাজার কোটি টাকা পাচার করেছিলেন। ২০২০ সালের ২৬ আগস্ট তিনি আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে এটি স্বীকারও করেন। ওই বছরের ২৬ জুন ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের অব্যাহতিপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও তাঁর ভাই ইমতিয়াজ হাসান রুবেলকে প্রধান আসামি করে অবৈধ উপায়ে দুই হাজার কোটি টাকা আয় ও পাচারের অভিযোগে ঢাকার কাফরুল থানায় মামলাটি করে সিআইডি।

শিবির নেতা থেকে ছাত্রলীগ নেতা বায়জিদ হাতিয়েছেন শত শত কোটি টাকা : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও সাবেক ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগ নেতা বায়জিদ আহম্মেদ খান। শিবির নেতা থেকে ছাত্রলীগ নেতা বনে গিয়ে শত শত কোটি টাকার বাণিজ্য করে বিশাল বিত্তবৈভবের মালিক হয়েছেন। ছাত্রলীগের পদ বাগিয়ে তিনি বেপরোয়া টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি ও ক্যাসিনো ব্যবসা থেকে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। কেন্দ্রীয় যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটের অন্যতম সহযোগী হয়ে নানা অবৈধ সম্পদ অর্জন করেন। এলাকায় এখন বায়জিদ খানের পরিচিতি ক্যাসিনো বায়জিদ হিসেবে।

স্থানীয় রাজনীতিতে তাঁর কোনো উপস্থিতি না থাকলেও তিনি গত উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে অংশ নেওয়ার পর তাঁর পরিচিতি বাড়ে। এ সময় নিজ দলের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে অস্ত্র ও কালো টাকার বিনিময়ে নির্বাচিত হন।

ছাত্রলীগের পদ পেয়ে শূন্য থেকে কোটিপতি আতিক : ঢাকা সাভার উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আতিকুর রহমান আতিক। একসময় নুন আনতে পান্তা ফুরোয় অবস্থা ছিল তাঁর পরিবারের। ২০১৬ সালে সাভার ছাত্রলীগের সভাপতির পদ পাওয়ার মধ্য দিয়ে যেন আলাদিনের জাদুর প্রদীপ হাতে পান। কয়েক বছরের মধ্যে বনে যান কোটি কোটি টাকার মালিক।

স্থানীয়দের অভিযোগ, জমি দখল, বাড়ি থেকে উচ্ছেদ, জাল দলিল, অবৈধভাবে একচেটিয়া ঠিকাদারি ব্যবসা, ফুটপাত থেকে শুরু করে শিল্পপতির কাছ থেকে কোটি কোটি টাকার চাঁদাবাজি, ডিশ ব্যবসা, মার্কেট দখলসহ নানা উপায়ে হাতিয়ে নেন কোটি কোটি টাকা। ঘুরতেন অবৈধ অস্ত্র নিয়ে। কেউ চাঁদা দিতে না চাইলে নিজস্ব বাহিনী দিয়ে প্রকাশ্যে রাস্তায় ফেলে মারধর করতেন।

গাজীপুরে অপকর্মে কোটিপতি ডজনখানেক ছাত্রলীগ নেতা : গাজীপুরে হাসিনা সরকারের সময়ে শূন্য থেকে কোটিপতি হয়েছেন এক ডজনের বেশি ছাত্রলীগ নেতা। তাঁদের কেউ কেউ শতকোটি টাকার মালিক। গড়েছেন বাড়ি, ফ্ল্যাট ও গাড়ি। জনপ্রতিনিধিও হয়েছেন কয়েকজন। তাঁদের বিরুদ্ধে রয়েছে উপজেলা ইউনিয়ন ও কলেজ কমিটি বিক্রি, মাদক বাণিজ্য, চাঁদাবাজি, জমি দখল, ঝুট ব্যবসা ও তদবির বাণিজ্যের অভিযোগ।

এরশাদ : মাসুদ রানা এরশাদ গাজীপুর মহানগর ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। ২০১৩ সালে সভাপতি হয়ে শুরু করেন ঝুট ব্যবসা, জমি দখল ও শহরের বিভিন্ন স্ট্যান্ডে চাঁদাবাজি। অল্প দিনেই কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যান। হয়ে যান গাড়ি ও বাড়ির মালিকও।

মশিউর রহমান সরকার বাবু : টঙ্গীর ৫৪ নম্বর ওয়ার্ডের সরকার বাবু প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল পরিবারের ঘনিষ্ঠ। ২০২২ সালে মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি হয়েই দুই বছরে শূন্য থেকে হয়েছেন কোটিপতি। তাঁর বিরুদ্ধে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কমিটি বিক্রি, মাদক ব্যবসায়ীদের আশ্রয়-প্রশ্রয়, ঝুট ব্যবসা, কিশোর গ্যাং লালন ও তদবির বাণিজ্যের অভিযোগও বিস্তর।

রেজাউল করিম : দরিদ্র পরিবারের সন্তান রেজাউল করিম টঙ্গী সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি হওয়ার পর জড়িয়ে পড়েন মাদক ব্যবসায়। কয়েক বছরেই গড়েন একাধিক বাড়ি ও ফ্ল্যাট।

সোহেল রানা : টঙ্গী থানা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পদ সোহেল রানা সাবেক এমপি জাহিদ আহসান রাসেলের পরিবারের কাছের লোক। তাঁর বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসা, ঝুট ও চাঁদাবাজির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়ে ওঠার অভিযোগ রয়েছে।

উত্তম অপু : পুবাইলে জোরপূর্বক জমি দখল, টিপসই নিয়ে লিখে নেওয়া, বালুর ব্যবসা ও মাদক ব্যবসা করে দুই বছরেই কোটিপতি বনে যান পুবাইল থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক। এলাকায় কারখানা ও বাড়িঘর নির্মাণে চাঁদা দিতে হতো বলে জানায় স্থানীয়রা।

দেলোয়ার হোসেন : ছাত্রলীগের সভাপতি দেলোয়ার পদ পেয়েই শুরু করেন ঠিকাদারি, জমির ব্যবসা, বদলি ও তদবির বাণিজ্য। অল্প দিনে মালিক হন কোটি কোটি টাকার।

খাত্তাব  মোল্লা : ২০১৫ সালে কালিয়াকৈর পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক পদ পাওয়ার পর আর্থিক উত্থান ঘটে খাত্তাব মোল্লার। হয়ে ওঠেন ত্রাস। মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের ছত্রচ্ছায়ায় তিনি ঝুট ব্যবসা করতেন। ঝুট ব্যবসা করে রাতারাতি বনে যান কোটিপতি।

সাদ্দাম হোসেন : কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাদ্দাম গাজীপুর-৫ আসনের সাবেক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকির বিশ্বস্ত সহচর। ঠিকাদারি, চাঁদাবাজি, তদবির বাণিজ্য, বালু ভরাট, ফসলি জমি থেকে মাটি কেটে বিক্রিসহ নানা কাজে জড়িয়ে কোটি কোটি টাকা অর্জন করার অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে।

গাজীপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সুলতান সিরাজুল ইসলাম। পদ পাওয়ার পর যেন তাঁর ভাগ্য খুলে যায়। দুই বছরের ব্যবধানে কোটিপতি বনে যান তিনি, হাঁকান দামি ব্র্যান্ডের গাড়ি। কিনেছেন জমি, দোকান ও ফ্ল্যাট। অন্তত আটটি ব্যাংক হিসাবে জমা তাঁর কয়েক কোটি টাকা।

নারায়ণগঞ্জে ছাত্রলীগ নেতা থেকে কোটিপতি বনে যান যাঁরা : নারায়ণগঞ্জে ছাত্র নয় এমন নেতাও ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িয়ে অঢেল সম্পদের মালিক বনে গেছেন। তাঁদের মধ্যে হাজি শাহ মুহাম্মদ সোহাগ ২০১১ সালে জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি ছিলেন। বর্তমানে তিনি সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। ছাত্রলীগের রাজনীতিতে প্রবেশের আগে সোনারগাঁর মোগরাপাড়া এলাকায় পুরান বাজারে মাটির তৈরি হাঁড়ি-পাতিল বিক্রি করতেন। পরে প্রভাবশালী এমপি শামীম ওসমানের ছেলে অয়ন ওসমানের বন্ধু হওয়ার সুবাদে তিনি এখন নানা ব্যবসা ও টাকার সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন।

আহমেদ কাউসার স্কুলের গণ্ডি পার হয়নি, কিন্তু শামীম ওসমানের ছেলে অয়ন ওসমানের সঙ্গে পরিচয় হওয়ার পর থেকে তাঁর উত্থান শুরু।  নলুয়ায় দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে একটি দুই তলা ভবন নির্মাণ করেন। গত বছর পাশেই আরো একটি পাঁচতলা ভবন কেনেন। শহীদনগর ও আশপাশ এলাকায় প্রচুর জমির মালিক হোন তিনি।

হাবিবুর রহমান রিয়াদ অয়ন ওসমানের বন্ধু ও মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। ছাত্রলীগের প্রভাবে অয়নের মাধ্যমে গত কয়েক বছরে কোটি টাকা কামিয়েছেন ঝুট ব্যবসা ও টেন্ডারবাজি করে।

চিনির মিঠায় কোটিপতি সিলেট ছাত্রলীগ সভাপতি, সম্পাদক : সিলেট জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি নাজমুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক রাহেল সিরাজ পদ পেয়ে বছর ঘুরতেই হন কোটিপতি। এরপর শুধু বেড়েছে অর্থ। ফ্ল্যাট, দামি গাড়ি, এলপিজি ফিলিং স্টেশনসহ নানা সম্পদ গড়েছেন। তাঁদের হাতে সিলেটে চিনি চোরাচালান সাম্রাজ্য বিস্তৃত হয়েছে বলে অভিযোগ।

ছাত্রলীগের সভাপতি হয়েই শতকোটি টাকার মালিক সাদ্দাম : এস এম সাদ্দাম হোসেন কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি। গ্রামের মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে উঠে আসা এই তরুণ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হয়েই গড়ে তুলেছেন শতকোটি টাকার সম্পদ। পাহাড় কেটে সাবাড়, একের পর এক জমি রেজিস্ট্রি, স্বর্ণ চোরাচালান থেকে শুরু করে মাদক ব্যবসা, অপরাধ জগতের কোনো কিছুই বাদ যায়নি তাঁর হাত থেকে। আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানকের ‘আপন লোক’ পরিচয়ে সব জায়গায় প্রভাব খাটিয়ে সাদ্দাম হোসেন নিজের সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছিলেন। অনেকের মতে, তিনি এখন কয়েক শ কোটি টাকার মালিক।

সাবেক জনপ্রশাসনমন্ত্রীর মদদে কোটিপতি মেহেরপুরের  ছাত্রলীগ নেতা বাঁধন : সাবেক জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের মদদপুষ্ট মেহেরপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুস সালাম বাঁধন কয়েক কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। মন্ত্রীর মদদে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের ঠিকাদারি বাগিয়ে নিয়ে তিনি সম্পদের মালিক হন। এ ছাড়া অনলাইন জুয়ার পরিচালনা করেও হয়েছেন টাকার মালিক।

ছাত্রলীগের টিকিটে কোটিপতি বনে যান ভালুকার মামুন : ছাত্রলীগ করে বিপুল অর্থবিত্তের মালিক হয়েছে ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার সীমান্তবর্তী রাজৈ ইউনিয়নের সোহাল গ্রামের আবদুল আলীর ছেলে মনিরুজ্জমান মামুন। স্থানীয় সূত্র থেকে জানা যায়, পদ পেয়েই ভালুকা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় কিনেছেন একতলা বাড়ি, সাত-আটটি রুমের টিনশেড বাসা আর মালিক হয়েছেন চার-পাঁচটি ডাম্প ট্রাকের। নিজ এলাকায় কিনেছেন প্রচুর পরিমাণে জমি, ছোট ভাইয়ের নামে করেছেন একাধিক বিশাল মৎস্য খামার।

আখাউড়া ছাত্রলীগের শূণ্য থেকে ‘কোটিপতি’ মুরাদ : অচেনা মুখ মুরাদ হোসেন। ছাত্রলীগের উপজেলা কমিটির আহ্বায়ক হয়ে এলাকায় হৈ-হুল্লোড় ফেলে দেন। দুইবার উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান হন। পরে চেয়ারম্যান হয়ে আলাদিনের চেরাগ হাতে পান। দ্রুত সময়ে কোটি কোটি টাকার সম্পদ বানিয়েছেন। করেছেন  চাকরি বাণিজ্য, ইটভাটা, জমি, স্বর্ণালংকারও কেনা নানা ব্যবসায়। সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের পিএ আলাউদ্দিন বাবুর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার সুবাদে বেশি বেপরোয়া ছিলেন মুরাদ।

ঝিনাইদহ সাবেক ছাত্রলীগ নেতার সম্পদের পাহাড় : দুটি টিনের ঘর আর নামমাত্র জমির মালিক থেকে ছাত্রলীগ নেতা দিনার বিশ্বাস এখন কোটিপতি। ঝিনাইদহের শৈলকুপার সাবেক সভাপতি দিনার বিশ্বাস ২০১১ সালে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যোগ দেন। চাঁদাবাজি, নিয়োগ বাণিজ্য, জমি দখল, সরকারি প্রকল্প হাতিয়ে, হামলা-মামলা, প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোসহ হিন্দুদের কাছ থেকে ধারকর্জের কথা বলে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।

চুয়াডাঙ্গার নেতাদের আয়ের উৎস নেই, আছে বিপুল সম্পদ : চুয়াডাঙ্গার বেশ কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতার মধ্যে সম্পদ নিয়ে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আরেফিন আলম রঞ্জু ও মোহাইমান হাসান জোয়ার্দ্দার অনিকের বিরুদ্ধে।

অভিযোগ রয়েছে, ছাত্ররাজনীতি করার সময় থেকেই আরেফিন আলম রঞ্জু ঠিকাদারি ব্যবসায় সম্পৃক্ত হন। ক্ষমতাসীন দলের প্রভাব খাটিয়ে তিনি বিপুল অর্থবিত্তের মালিক হন। গড়ে তোলেন আলিশান বাড়ি, গাড়ি ও নানা ব্যবসা।

চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রলীগের সর্বশেষ কমিটির সভাপতি ছিলেন মোহাইমেন হাসান জোয়ার্দ্দার অনিক। তিনিও নগদ টাকা ও নামে-বেনামে সম্পদ গড়ে তুলেছেন।

বরিশালে চাঁদার আয়ের উৎস কোটিপতি : রইচ আহমেদ মান্না ছিলেন ছাত্রলীগকর্মী। পদ পেয়েই শুরু করেন বাস টার্মিনালে চাঁদাবাজি। ছাত্রলীগ থেকে শ্রমিকলীগ, পরে হয়ে যান বাস মালিক।  আর এভাবেই বনে যান কোটিপতি।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
Toto Slot
slot gacor
slot gacor
slot toto
Bacan4d Login
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot bacan4d
bacan4d togel
bacan4d game
slot gacor
bacan4d login
bacantoto 4d
toto gacor
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
slot77 gacor
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
bacansports
slot toto
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d