Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
Hot

জড়িত পুলিশ র‌্যাব বিজিবি কর্মকর্তা আড়ালে, শাপলা চত্বরের গণহত্যার বিচার কতদূর?

রাজধানীর শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের অবস্থান কর্মসূচিতে রাতের অন্ধকারে চালানো হয়েছিল গণহত্যা। ২০১৩ সালের ৫ মে’র মহাসমাবেশে যৌথ বাহিনীর রাতের অভিযান ‘অপারেশন সিকিউর শাপলা’য় কতজন নিরীহ সাধারণ মাদরাসার শিক্ষক-ছাত্রকে হত্যা করা হয় তার কোন সঠিক পরিসংখ্যান এখনও পাওয়া যায়নি। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে আওয়ামীলীগ সরকারের পতন হলেও এ গণহত্যার সাথে সংশ্লিষ্টদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার কোন উদ্যোগ নেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের। শিক্ষক-ছাত্রদের খুনের অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবির কর্মকর্তা এখনও আড়ালেই রয়ে গেছেন।

তবে ওই রাতে যৌথ বাহিনীর অভিযানে কয়েক শত সাধারণ শিক্ষক-ছাত্রকে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছিল। পুরো মতিঝিল ও এর আশপাশ এলাকার বিদ্যুৎ লাইন বন্ধ করে দিয়ে নিরীহ মাদরাসা ছাত্রদের ওপর গণহত্যা চালানো হয়। অভিযানের পর দ্রুত সিটি করপোরেশনের গাড়ি এনে লাশগুলো অজ্ঞাত স্থানে গুম করে ফেলে বলে অভিযোগ রয়েছে। অন্যদিকে সেই রাতের ভয়াবহ ও নিষ্ঠুর অভিযানে ৬১ জন নিহত হওয়ার তথ্য দিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’। তবে পুলিশের দাবি, রাতের অভিযানে কেউ মারা যাননি। দিনভর সংঘাতে নিহত হয়েছেন ১১ জন। এছাড়া ১১ বছর পর আগষ্ট ‘গণহত্যার’ অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৩৪ জনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আবেদনকারীর জবানবন্দি শুনে মতিঝিল থানার ওসিকে এই অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দেন ঢাকা মহানগর হাকিম জাকী-আল ফারাবী। তবে পুলিশ এখনও মামলার তদন্ত শুরু করেনি। বাংলাদেশ পিপলস পার্টির (বিপিপি) চেয়ারম্যান বাবুল সরদার চাখারী মামলাটির আবেদন করেন।

পুলিশের বেশ কয়েকজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা ইনকিলাবকে বলেন, আলেম ও মাদরাসার ছাত্রদের একটি সমাবেশে রাতের অন্ধকারে যেভাবে গণহত্যা চালানো হয়েছিল তা কোন সভ্য সমাজে মেনে নেয়া যায় না। আওয়ামীলীগ সরকারের নির্দেশে পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবির যেসব কর্মকর্তা এ ধরনের নিষ্ঠুর কাজের সাথে সম্পৃক্ত ছিল তাদের দ্রুত শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনতে হবে। এ জন্য অতি দ্রুত তদন্ত কমিশন গঠনের মাধ্যমে জড়িতদের এবং নেপথ্যে থেকে যারা নির্দেশনা দিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। দেশের মানুষ এ ধরনের গণহত্যায় জড়িতদের শাস্তি দেখতে চায় বলে ওই কর্মকর্তারা মন্তব্য করেন। তারা আরও বলেন, বর্তমান ছাত্র-জনতার সরকার বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে সরাসরি জড়িত ও নেপথ্যে নির্দেশ দাতাদের শনাক্ত করার পাশাপাশি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করার এখনই উপযুক্ত সময়।

সাবেক আইজিপি খোদা বকশ চৌধুরী ইনকিলাবকে বলেন, শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের অবস্থান কর্মসূচিতে রাতের অন্ধকারে পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবি যৌথভাবে অভিযান চালায় এবং ওই অভিযানে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে বলে তখন মিডিয়ায় প্রচার করা হয়েছে। আহত হয়েছিলেন অনেক মাদরাসার শিক্ষক ও ছাত্র। এ ঘটনায় এখন ভিকটিমের পক্ষে ফৌজদারি আইনে সরাসরি থানায় মামলা করা যায়। থানা পুলিশ মামলা গ্রহণ না করলে আদালতের মাধ্যমে মামলা করে ভিকটিম ন্যায় বিচার পেতে পারেন।

মেজর জেনারেল (প্রকৌশলী) অব. আব্দুল মতিন ইনকিলাবকে বলেন, শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের অবস্থান কর্মসূচিতে রাতের অন্ধকারে যে গণহত্যা চালানো হয়েছিল তার বিচার বিভাগীয় তদন্ত হওয়া উচিত। একজন সাবেক বিচারপতির নেতৃত্বে ওই গণহত্যার বিচার হতে পারে। কারণ ২০১৩ সালের ৫ মে’র হেফাজতের মহাসমাবেশে যৌথ বাহিনীর রাতের অভিযানে কতজন নিরীহ সাধারণ মাদরাসার শিক্ষক-ছাত্রকে হত্যা করেছে তার কোন সঠিক পরিসংখ্যান এখনও পাওয়া যায়নি। এছাড়া নিরীহ ও নিরস্ত্র মানুষের উপর এ ধরনের হত্যাকাণ্ডকে আওয়ামীলীগ সরকার বৈধতা দিলেও কার্যত এটি বড় ধরনের গণহত্যা ছিল।

মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুল মতিন আরও বলেন, রাতের আঁধারে পুরো মতিঝিল ও এর আশপাশের এলাকার বিদ্যুত বন্ধ করে যেভাবে যৌথ অভিযান চালানো হয় তা কখনোই কোন সভ্য সমাজে মেনে নেয়া যায় না। হত্যাকাণ্ড আড়াল করতে মিডিয়াও বন্ধ করে দেয়া হয়। তাছাড়া হেফাজতের সমাবেশে শিক্ষকের সাথে যে সব মাদরাসার ছাত্ররা এসেছিলেন, তাদের একটা বড় অংশ ছিল এতিম। এদের সম্পর্কে সঠিত তথ্য সংগ্রহ করা বেশ কষ্টকর। শাপলা চত্বরের গণহত্যা, ২০০৯ সালের বিডিআর-এর সংঘটিত ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪জন হত্যাকাণ্ড এবং জুলাই-আগষ্টের ছাত্র-জনতার উপর বর্বর নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পৃথক তদন্ত কমিশন গঠন করে দ্রুত জড়িতদের আইনের আওতায় আনা খুবই জরুরী বলে আব্দুল মতিন মন্তব্য করেন।

হেফাজত নেতারা বলেছেন, হেফাজতের ওই কর্মসূচি ভণ্ডুল করার জন্য সেই সময় র‌্যাবের এডিজি অপারেশন কর্নেল জিয়াউল আহসান এবং ডিএমপি কমিশনার বেনজীর আহমেদের নেতৃত্বে সব সড়কবাতি নিভিয়ে দিয়ে হেফাজত নেতাকর্মীদের ওপর নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়। এই ঘটনায় আহতদের মধ্যে ১০ হাজার নেতাকর্মী পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। ‘গণহত্যার’ অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৩৪ জনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার আবেদনে বলা হয়, ওই রাতে শেখ হাসিনার মদদে অন্য আসামিরা রাস্তা ও বিদ্যুৎ লাইন বন্ধ করে দিয়ে নিরীহ মাদরাসা ছাত্র ও পথচারীদের ওপর গণহত্যা চালায়। তারা সিটি করপোরেশনের গাড়ি এনে লাশগুলো অজ্ঞাত স্থানে গুম করে ফেলে। মামলার আবেদনে বাদী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার দীর্ঘদিন বিনা ভোটে ক্ষমতায় থাকার কারণে এবং আসামিরা সরকারি ও দলীয় লোকজন হওয়ায় মামলা করতে এত দেরি হয়েছে।

সূত্র জানায়, শাপলা চত্বরের ঘটনার রেশ ধরে পরদিন হাটহাজারী, নারায়ণগঞ্জ, বাগেরহাটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানেও নাশকতার অভিযোগ আনা হয়। এসব ঘটনায় রাজধানীর বিভিন্ন থানায় ৪৯টি মামলা করা হয়। এর মধ্যে ৩টি মামলার তদন্ত শেষ হয়েছে। বাকি ৪৬টি মামলার তদন্ত থমকে আছে। রাজধানী ছাড়াও দেশের বিভিন্ন এলাকায় হেফাজত নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে আরও অন্তত ৩০টি মামলা হয়েছে। রাজধানীর বিভিন্ন থানায় করা হেফাজতের মামলার তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ২০১৩ সালে মামলা হয়েছে ৪৯টি। এর মধ্যে রমনা বিভাগে ৫টি, মতিঝিলে ২৬টি, ওয়ারীতে ৩টি, ডিবির মতিঝিল বিভাগে ১২টি, ডিবির লালবাগ বিভাগে ২টি ও ডিবির ওয়ারী বিভাগে ১টি। এর মধ্যে রমনা বিভাগের ৩টি মামলার অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। এ ছাড়া ২০২০ সালে হেফাজতের বিরুদ্ধে রাজধানীতে ৪টি ও ২০২১ সালে ১৩টি মামলা হয়েছে। সব মিলিয়ে ঢাকায় হেফাজতের মামলার সংখ্যা ৬৬টি। তবে দেশের বিভিন্ন স্থানে হেফাজতের নাশকতার ঘটনায় তিন হাজার ৪১৬ জনের নামে এবং ৮৪ হাজার ৭৯৬ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছিল। আসামিদের মধ্যে হেফাজতে ইসলাম, ইসলামী ঐক্যজোট, জামায়াতে ইসলামী, বিএনপি, ইসলামী ছাত্রশিবির, ছাত্রদল, যুবদল, নেজামে ইসলাম, খেলাফত মজলিস, খেলাফত আন্দোলন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের নেতাকর্মীর নাম রয়েছে। ঢাকা মহানগর পুলিশ, পিবিআইসহ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটে এসব মামলা তদন্তাধীন। তবে এসব মামলায় দ্রুত আসামিদের অব্যাহতি দিয়ে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা উচিত।

ফিরে দেখা: ১১ বছর আগে ঢাকার শাপলা চত্বরে অবস্থান নিয়ে আলোচনায় এসেছিল কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম। কয়েকজন ব্লগারের বিরুদ্ধে ইসলাম ধর্ম নিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগ ও নারী নীতির বিরোধিতা করাসহ ১৩ দফা দাবি তুলে হেফাজতে ইসলাম ওই কর্মসূচি নিয়েছিল। ২০১৩ সালের ৫ মে দিনভর উত্তেজনা ও সহিংসতা ছড়িয়েছিল সংগঠনটির ওই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে। সেই রাতে রাজধানীর অন্যতম বাণিজ্যিক এলাকা মতিঝিলের শাপলা চত্বর ঘিরে তৈরি হয়েছিল এক ভীতিকর পরিবেশ। পুলিশ, র‌্যাব ও সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবির অভিযানে খালি করা হয়েছিল শাপলা চত্বর। রাত দেড়টার দিকে বিজিবি, র‌্যাব ও পুলিশ সদস্যরা এগোনোর চেষ্টা করেন। তারা প্রথমে হাতমাইক ব্যবহার করে অবস্থানকারীদের সরে যেতে বলেন। কিন্তু মঞ্চ থেকে তখনো আসতে থাকে বক্তব্য। ঘণ্টাখানেক এভাবে চলে।

মূল অভিযান শুরু রাত পৌনে তিনটায়। বিজিবি, র‌্যাব ও পুলিশ তিন বাহিনীর তখনকার শীর্ষ কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে সদস্যরা ফাঁকা গুলি আর কাঁদানে গ্যাস ছুড়তে থাকেন। থেমে থেমে সাউন্ড গ্রেনেডও ব্যবহার করা হয়। শত শত গুলি, সাউন্ড গ্রেনেডের শব্দ এবং অন্ধকার এলাকায় এসবের আলোর ঝলকানি মুহূর্তেই ভীতিকর পরিবেশের সৃষ্টি করেছিল। ২০ মিনিট ধরে চলে এ পরিস্থিতি। এরই মধ্যে একপর্যায়ে মঞ্চের মাইক বন্ধ হয়ে যায়। তখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা গুলি, কাঁদানে গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করে এগোতে শুরু করেন শাপলা চত্বরের দিকে। বিরতিহীন গুলি, কাঁদানে গ্যাস আর সাউন্ড গ্রেনেডের শব্দের মধ্যেই ২০০ মিনিটেই পৌঁছে যান শাপলা চত্বরে। সেখানে দেখা যায়, নটর ডেম কলেজের সামনে রাস্তা ও দিলকুশা এলাকা থেকেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা প্রায় একই সময়ে শাপলা চত্বরে পৌঁছেন। তখন তিন দিক থেকে আসা পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবির দখলে শাপলা চত্বর। সেখানে মঞ্চের পাশে একটি ভ্যানের ওপর কাফনের কাপড় এবং পলিথিন দিয়ে মোড়ানো চারটি লাশসহ ১১টি লাশ ছিল।

হেফাজতের শত শত কর্মী-সমর্থক মাথার ওপর দুই হাত তুলে লাইন ধরে পুলিশের কর্ডনের মধ্য দিয়ে ওই এলাকায় বিভিন্ন ভবন থেকে বেরিয়ে আসছিলেন। তাদের বেশির ভাগ ছিল মাদরাসার ছাত্র ও কিশোর। তাদের চোখেমুখে ছিল অজানা আতঙ্ক, ভয়। রাতের অভিযানে নিহতের সংখ্যা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক বিতর্ক দেখা দিয়েছিল। আড়াই হাজারের মতো নিহত হওয়ার অভিযোগ তুলেছিল বিভিন্ন দল। তবে পুলিশ কর্মকর্তারা বলেছিলেন, অভিযানের সময় আহত একজন পরে হাসপাতালে মারা যান। আর দিনের সহিংসতায় নিহত চারজনের লাশ পাওয়া গিয়েছিল মঞ্চের কাছে একটি ভ্যানে। ২০১৩ সালের ৫ মে দিনের সহিংসতা এবং পরদিন ৬ মে দুই দিনে সারা দেশে সহিংসতায় ২৮ জনের নিহত হওয়ার কথা বলেছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacantoto4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d toto
slot toto
bacan4d
bacan4d
togel online
Toto Slot
saraslot88
Bacan4d Login
bacantoto
Bacan4d Login
bacan4d
bacan4drtp
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot maxwin
slot bacan4d
slot maxwin
bacan4d togel
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d login
bacantoto 4d
slot gacor
bacansport
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot77 gacor
JAVHD
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
gacor slot
slot gacor777
slot gacor bacan4d
bacan4d
bacansport
toto gacor
bacan4d
bacansports login
slot maxwin
slot dana
slot gacor
slot dana
slot gacor
bacansports
bacansport
bacansport
bacansport
bawan4d
bacansports
bacansport
slot gacor
judi bola
slot maxwin
slot maxwin
bacansport
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot demo
slot gacor
slot gacor
slot gacor
toto slot
slot gacor
demo slot gacor
slot maxwin
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot toto