USA

জনপ্রিয়তায় এখনো পিছিয়ে ট্রাম্প

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন দুই সপ্তাহেরও কম সময় বাকি। শেষ মুহূর্তে এসে দেখা যাচ্ছে, ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কমলা হ্যারিস তার  রিপাবলিকান প্রতিদ্বন্দ্বী ডোনাল্ড ট্রাম্পের চেয়ে আরও এগিয়েছেন। সোমবার প্রকাশিত রয়টার্স ও ইপসোসের করা এক জরিপে এমন ইঙ্গিত পাওয়া যায়।  সর্বশেষ ওই জরিপে উঠে এসেছে, সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের চেয়ে বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা তিন পয়েন্টে এগিয়ে রয়েছেন।
সোমবার শেষ হওয়া রয়টার্স/ইপসোস জরিপ অনুযায়ী, জরিপে অংশগ্রহণকারী নিবন্ধিত ভোটারদের ৪৬ শতাংশ বলেছেন, তারা কমলা হ্যারিসকে ভোট দেবেন। এদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ভোট দেওয়ার কথা বলেছেন ৪৩ শতাংশ ভোটার। এর আগে গত সপ্তাহে করা রয়টার্স/ইপসোস জরিপে কমলা হ্যারিসকে ৪৫ শতাংশ ভোটার এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ৪২ শতাংশ ভোটার সমর্থন দিয়েছিলেন। রয়টার্স ও ইপসোসের সর্বশেষ দুই জরিপেই দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির বর্তমান পরিস্থিতি ও অভিবাসন নিয়ে ভোটাররা অখুশি। এসব বিষয়ে ট্রাম্পের অবস্থানের পক্ষে ভোটাররা।

জরিপে দেখা গেছে, নিবন্ধিত ৭০ শতাংশ ভোটার জীবনযাপনের ব্যয় ভুল পথে যাচ্ছে বলে মনে করেন। অর্থনীতি ভুল পথে যাচ্ছে মনে করেন ৬০ শতাংশ ভোটার। অভিবাসন নীতি নিয়ে এই অবস্থান ৬৫ শতাংশের। খবর আলজাজিরা,সিএনএন ও বিবিসি অনলাইনের। 
ভোটাররা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এখন প্রধান তিনটি সমস্যা অর্থনীতি, অভিবাসন ও গণতন্ত্রের জন্য হুমকি। এসব বিষয়ে কোন প্রার্থীর অবস্থান ভালো, এমন প্রশ্নে ট্রাম্পের পক্ষে সমর্থন বেশি পড়েছে। জরিপে উঠে এসেছে, অর্থনীতি নিয়ে ট্রাম্পের পক্ষে ৪৬ শতাংশ ও কমলার পক্ষে ৩৮ শতাংশের সমর্থন রয়েছে। এদিকে অভিবাসনের ক্ষেত্রে ট্রাম্প ও কমলার পক্ষে সমর্থনের এ হার ৪৮ ও ৩৫ শতাংশ।

তবে রাজনৈতিক চরমপন্থা ও গণতন্ত্রের জন্য হুমকি মোকাবিলার ক্ষেত্রে ট্রাম্পের চেয়ে হ্যারিসের ওপর ভরসা বেশি রাখছেন মার্কিন ভোটাররা। জরিপে দেখা গেছে, রাজনৈতিক চরমপন্থা ও গণতন্ত্রের জন্য হুমকি মোকাবিলায় কমলা হ্যারিসের প্রতি সমর্থন রয়েছে ৪২ শতাংশ ভোটারের। অন্যদিকে ট্রাম্পের প্রতি সমর্থন আছে ৩৫ শতাংশের। গর্ভপাত ও স্বাস্থ্যসেবা নীতিতে ট্রাম্পের চেয়ে এগিয়ে কমলা।
পরবর্তী প্রেসিডেন্টের মেয়াদের প্রথম ১০০ দিনে কোন বিষয়ে সবচেয়ে গুরুত্ব দেওয়া উচিত, জরিপে অংশগ্রহণকারীদের এমন প্রশ্ন করে দেখা গেছে অভিবাসনের বিষয়টি সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার পেয়েছে। ভোটারদের ৩৫ শতাংশ মনে করেন, নতুন প্রেসিডেন্টকে সবার আগে অভিবাসনে নজর দেওয়া উচিত। আর ১১ শতাংশ ভোটার আয়বৈষম্য এবং ১০ শতাংশ স্বাস্থ্যসেবা ও করের কথা বলেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সামনে রেখে এখন শেষ মুহূর্তের প্রচারে ব্যস্ত ডোনাল্ড ট্রাম্প ও কমলা হ্যারিস।

সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগা ভোটারদের কাছে টানার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন ডেমোক্রেটিক প্রার্থী। মঙ্গলবার ডেমোক্র্যাটিক প্রতিদ্বন্দ্বী কমলা হ্যারিস জাতীয় নেটওয়ার্কে সাক্ষাৎকারে বসার পাশাপাশি ল্যাটিনো ভোটারদের কাছে একটি বিশেষ ক্ষেত্র তৈরি করছেন। 
দোদুল্যমান, সিদ্ধান্তহীন ভোটারদের নিজের পক্ষে টানায় চূড়ান্ত চাপ প্রয়োগে উভয় প্রচারে ব্যয় হচ্ছে শ শ মিলিয়ন ডলার।
ফলাফল যাই হোক না কেন, আমেরিকানরা ৫ নভেম্বর নির্বাচনে ইতিহাস তৈরি করবে। বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় পরাশক্তিতে প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করবে অথবা তারা প্রথম হোয়াইট হাউসে আনবে কোনো দোষী সাব্যস্ত অপরাধীকে। জরিপগুলো ট্রাম্পের দিকে ঝুঁকে আছে বলে মনে হচ্ছে। ৭৮ বছর বয়সী ট্রাম্প মার্কিন ইতিহাসের একটি প্রধান দলের সবচেয়ে বয়স্ক প্রার্থী।
মঙ্গলবার সাক্ষাৎকার দেবেন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তার পরিবর্তে সমর্থন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর গত জুলাই মাসে নির্বাচনী প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার সুযোগ পান হ্যারিস। 
৬০ বছর বয়সী হ্যারিস সপ্তাহান্তে তার জন্মদিন উদযাপন করেছেন, তিনি তার দলের অন্যতম জনপ্রিয় দূত বারাক ওবামাকে আবার মাঠে নামাবেন।
সাবেক ডেমোক্রেটিক প্রেসিডেন্ট উইসকনসিন ও মিশিগানে একাধিক সমাবেশ করবেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরোক্ষ সার্বজনীন ভোটাধিকার ব্যবস্থার অধীনে নির্বাচনে সাতটি সবচেয়ে উত্তপ্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতাতাপূর্ণ সুইং স্টেটের মধ্যে দুটি প্রদেশ ফলাফলকে প্রভাবিত করবে।
ট্রাম্পের অভিবাসী বিরোধী বক্তব্য দিন দিন আরও কঠোর এবং চরম হয়ে উঠছে। তিনি ফ্লোরিডায় ল্যাটিন আমেরিকান ভোটারদের সঙ্গে একটি গোলটেবিল আলোচনায় অংশ  নেবেন। তিনি পরে আরেক সুইং স্টেট উত্তর ক্যারোলিনায় যাবেন।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button