USA

জনপ্রিয়তায় ট্রাম্পকে ফের পেছনে ফেললেন কমলা

নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী কমলা হ্যারিস জনপ্রিয়তায় তার প্রতিদ্বন্দ্বী রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ফের পেছনে ফেলেছেন। বৃহস্পতিবার বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও জরিপকারী প্রতিষ্ঠান ইপসোসের জরিপে বিষয়টি উঠে এসেছে। এতে দেখা যাচ্ছে, কমলা ট্রাম্পের চেয়ে চার পয়েন্টে এগিয়ে রয়েছেন। ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা যেখানে ৪১ শতাংশ, সেখানে কমলার জনপ্রিয়তা ৪৫ শতাংশ।

তবে দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যগুলোতে কমলার চেয়ে ২ পয়েন্ট এগিয়ে রয়েছেন ট্রাম্প। খবর দ্য গার্ডিয়ান ও সিএনএন অনলাইনের।
ডেমোক্রেটিক পার্টি থেকে জো বাইডেন প্রার্থিতা প্রত্যাহারের পর ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসকে ঘিরে ভোটারদের মধ্যে নতুন উৎসাহ তৈরি হয়েছে। প্রতিদ্বন্দ্বিতার হিসাব-নিকাশও পাল্টে যাচ্ছে।

বাইডেনের চেয়ে যেখানে ট্রাম্প এগিয়ে ছিলেন, সেখানে কমলা এখন ট্রাম্পকে ছাড়িয়ে যাচ্ছেন। গত সপ্তাহে ডেমোক্রেটিক দলের জাতীয় সম্মেলনে দলীয় মনোনয়ন নিশ্চিত করেন ৫৯ বছর বয়সী কমলা। এর পর থেকে নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতা আরও জোরালো হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের নিবন্ধিত ভোটারদের মধ্যে এই জরিপ করেছে রয়টার্স। এর আগে গত জুলাই মাসের শেষে করা রয়টার্স/ইপসোস জরিপেও কমলা হ্যারিস ট্রাম্পের চেয়ে এগিয়ে ছিলেন। তবে তখন তাদের মধ্যে ব্যবধান ছিল ৩ পয়েন্টের। অর্থাৎ কমলা গত এক মাসে ব্যবধান আরও ১ পয়েন্ট বাড়িয়েছেন। নতুন এই জরিপ আট দিন ধরে চালানো হয়।

এতে দেখা গেছে, নারী ও হিস্পানিক ভোটারদের মধ্যে কমলার প্রতি সমর্থন বেড়েছে। নতুন জরিপে দেখা গেছে, নারী ও হিস্পানিক ভোটারদের মধ্যে কমলার জনপ্রিয়তা ৪৯ শতাংশ, যেখানে ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা ৩৬ শতাংশ। অর্থাৎ ট্রাম্পের সঙ্গে কমলার ব্যবধার ১৩ শতাংশ। এর আগে গত জুলাইয়ে রয়টার্স/ইপসোসের জরিপে নারী ও হিস্পানিক ভোটারদের মধ্যে কমলা ৯ পয়েন্টে ট্রাম্পের চেয়ে এগিয়ে ছিলেন।

গত এক মাসে তিনি ৪ শতাংশ ব্যবধান বাড়িয়েছেন। তবে কমলার চেয়ে শেতাঙ্গ ও পুরুষ ভোটারদের মধ্যে জনপ্রিয়তায় ট্রাম্প এগিয়ে রয়েছেন। গত জুলাই ও আগস্টের মধ্যে এ ব্যবধান খুব বেশি বাড়েনি। তবে কলেজ ডিগ্রিধারী ভোটারদের মধ্যে ব্যবধান ৭ শতাংশ কমিয়ে এনেছেন কমলা।

বাইডেন সরে দাঁড়ানোর পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা কতটা পরিবর্তন এসেছে, এ জরিপ থেকে সেটা উঠে এসেছে। ট্রাম্পের সঙ্গে বিতর্কের বাজে ফলের জেরে গত ২১ জুলাই সরে দাঁড়ান বাইডেন। এর পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় জরিপ ও গুরুত্বপূর্ণ দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যগুলোর জরিপে দ্রুত জনপ্রিয়তা অর্জন করেন কমলা। এসব জরিপ থেকে ভোটারদের মতামত সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ ধারণা পাওয়া যায়।

তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী নির্ধারণে প্রতিটি অঙ্গরাজ্যের ইলেকটোরাল ভোট গুরুত্বপূর্ণ। এ ক্ষেত্রে কয়েকটি দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। এর আগে ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সাতটি দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছিল। রাজ্যগুলো হলো উইসকনসিন, পেনসিলভানিয়া, জর্জিয়া, অ্যারিজোনা, নর্থ ক্যারোলাইনা, মিশিগান ও নেভাদা। নিবন্ধিত ভোটারদের মধ্যে করা জরিপে এসব অঙ্গরাজ্যে কমলা হ্যারিসের চেয়ে ট্রাম্প ২ পয়েন্টে এগিয়ে রয়েছেন। ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা এসব অঙ্গরাজ্যে ৪৫ শতাংশ আর কমলার ৪৩ শতাংশ। 
এর আগে ২০২০ সালে ট্রাম্পের সঙ্গে কাজ করা রিপাবলিকান প্রচারশিবিরের কৌশলবিদ ম্যাট ওকিং বলেন, ‘জরিপে ফলাফল পরিবর্তনের বিষয়টি দেখলে এটা স্পষ্ট যে কমলা হ্যারিসের বিরুদ্ধে লড়াই করা ট্রাম্পের জন্য আরও চ্যালেঞ্জিং, তবে তা অপ্রতিরোধ্য নয়। ম্যাট আরও বলেন, এখন ট্রাম্পকে যতটা সম্ভব তার নির্বাচনী প্রচারে মনোযোগী হতে হবে। 

যারা বাইডেনকে পছন্দ করেন না বলে তার দিকে ঝুঁকেছিলেন, তারা যেন আর ভয় না পান, সেটি ট্রাম্পকে দেখতে হবে। দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পর কমলা হ্যারিস দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্য হিসেবে পরিচিত জর্জিয়া সফর করছেন। জরিপে অংশ নেওয়া ৭৩ শতাংশ ভোটার বলেছেন, কমলা প্রার্থী হওয়ার পর তারা নভেম্বরে নির্বাচনে ভোট দিতে উৎসাহী হয়েছেন।

এর আগের জরিপে বাইডেনকে ভোট দিতে উৎসাহের কথা বলেছিলেন মাত্র ৬১ শতাংশ ভোটার। নারী ভোটারদের নিয়ে কাজ করা সংগঠন শি দ্য পিপলের প্রতিষ্ঠাতা আইমি অ্যালিসন বলেন, ‘এ জরিপে আমরা দেখেছি, আগের চেয়ে অনেকেই ভোট দিতে উৎসাহী হয়েছেন। তারা কমলা হ্যারিসকে ভবিষ্যৎ প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেখেন। রিপাবলিকানরা এ নির্বাচনকে শুধু ট্রাম্পের বিষয়টিকে দেখেন।

ট্রাম্পকে হারানো ছাড়া জনগণকে অন্য কিছু করার সুযোগ দিলে জনগণ তাতে আরও বেশি আকৃষ্ট হবে। অবশ্য উৎসাহের দিক বিবেচনায় ট্রাম্পের ভোটাররাও পিছিয়ে নেই। ৬৪ শতাংশ ভোটার বলেছেন, হ্যারিসের বিরোধিতা করার চেয়ে ট্রাম্পকে সমর্থন করেই তাঁরা বেশি অনুপ্রেরণা পান। ভোটারদের মধ্যে মার্কিন অর্থনীতি ব্যবস্থাপনায় কমলার চেয়ে ট্রাম্প অনেকটাই এগিয়ে।

৪৫ শতাংশ ভোটার মনে করেন, অর্থনীতি সামলাতে ট্রাম্প বেশি যোগ্য। কমলার ক্ষেত্রে এ সমর্থন মাত্র ৩৬ শতাংশ। তবে গর্ভপাত নীতিতে হ্যারিস ট্রাম্পের চেয়ে বেশি সুবিধা পাবেন। ট্রাম্পের সমর্থন যেখানে ৩১ শতাংশ, সেখানে কমলার ৪৭ শতাংশ। ৪ হাজার ২৫৩ জনের মধ্যে রয়টার্স/ইপসোসের এ জরিপ চালানো হয়, যার মধ্যে নিবন্ধিত ভোটার ৩ হাজার ৫৬২ জন।

সম্প্রতি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থীপদ গ্রহণ করে কমলা হ্যারিস প্রথম ভাষণেই নিজের নীতি স্পষ্ট করেন। গাজা যুদ্ধ বন্ধের আহ্বানও জানান এই নারী। যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোয় ডেমোক্র্যাটিক পার্টির চার দিনের জাতীয় সম্মেলনের শেষ তাকে  দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়। এরপর হাস্যোজ্জল কমলা হ্যারিস বলেন, আমি সকল আমেরিকানের নেতৃত্ব দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি। আমি দেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ রাখার মতো একজন প্রেসিডেন্ট হতে চাই।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
Toto Slot
slot gacor
slot gacor
slot toto
Bacan4d Login
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot bacan4d
bacan4d togel
bacan4d game
slot gacor
bacan4d login
bacantoto 4d
toto gacor
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
slot77 gacor
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
bacansports
slot toto
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d