Hot

জনসম্পৃক্ত কর্মসূচি বাড়াচ্ছে সতর্ক বিএনপি

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবি সামনে রেখে মাঠ দখলে রাখতে চায় বিএনপি। এ জন্য জনসম্পৃক্তমূলক কর্মসূচি বাড়াচ্ছে দলটি। নির্বাচন পর্যন্ত এসব কর্মসূচি নিয়ে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যেতে চায় দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি। একইসঙ্গে সংগঠন গোছানোর পাশাপাশি নেতাকর্মীদেরও গণমুখী কাজে ব্যস্ত রাখার কৌশল নেয়া হয়েছে। দেয়া হচ্ছে নানা সতর্ক বাণী। এ ছাড়া রাষ্ট্র মেরামতের লক্ষ্যে ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব নিয়েও তৃণমূলে যাচ্ছে বিএনপি। শুরু হয়েছে বিভাগীয় কর্মশালা। ১৯শে নভেম্বর ঢাকা বিভাগ থেকে এই কর্মসূচি শুরু হয়েছে। শেষ হবে আগামী ২১শে ডিসেম্বর। 

বিএনপি’র পাশাপাশি ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, কৃষক দলও সারা দেশে কর্মসূচি পালনের উদ্যোগ নিয়েছে। এ ছাড়া অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ এসেছে তার ভিত্তিতে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। সামনে যাতে কেউ দলের কোনো ধরনের অপকর্মে জড়াতে না পারে সেজন্য কঠোর বার্তা দেয়া হচ্ছে কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকে। নতুন রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে কোনো ধরনের রাজনৈতিক বিরোধ বা বিতর্কে জড়াতে চান না দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। এজন্য সিনিয়র নেতাদের বার্তাও দেয়া হয়েছে। সরকারের সঙ্গে সরাসরি কোনো বিরোধে না জড়ানো, অন্যান্য দলের সঙ্গে কোনো ধরনের দূরত্ব  তৈরি না করার কৌশল নিয়ে এগোচ্ছেন নেতারা। 

৫ই আগস্ট শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর বিএনপি বলছে, তারা প্রতিহিংসার রাজনীতি চায় না। তারা এখন নতুন ধারার রাজনীতি শুরু করতে চাচ্ছে। এই বার্তা সাধারণ মানুষকে দেয়া হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে জনদুর্ভোগ এড়াতে সাংগঠনিক কাজের উদ্দেশ্যে সফরকালে কোনো ধরনের মোটরসাইকেল বহর ও কারসহ অন্য কোনো যানবাহনে শোভাযাত্রা পরিহার করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া ঢাকাসহ সারা দেশে বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের রং-বেরংয়ের পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন ব্যবহার থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেয়া হয়। দলের এই নির্দেশনায় দেয়াল থেকে ব্যানার ও পোস্টার অপসারণ করছেন নেতাকর্মীরা। 

বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান মানবজমিনকে বলেন, ১৫ বছর দেশে দুঃশাসন চলেছে। ওই দুঃশাসনের কারণে আমরা সাংগঠনিক কার্যক্রম চালাতে পারি নাই। বিএনপি একটি বড় রাজনৈতিক দল। জনগণ বিএনপির মূলশক্তি। তাদের সঙ্গে সম্পৃক্ততা রেখেই বিএনপি রাজনীতি করে। সেই সম্পৃক্ততা জনগণের মাঝে আরও বেশি করে ছড়িয়ে দিতেই এই কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে।

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল মানবজমিনকে বলেন, ৩১ দফা নিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে আমরা যাচ্ছি এবং তাদের বোঝাচ্ছি। এটা সাংগঠনিক তৎপরতা এবং রাজনৈতিক কার্যক্রম। পাশাপাশি প্রশাসনে এবং চাঁদাবাজিতে নেতাকর্মীরা যাতে প্রলুব্ধ হয়ে অন্ধকার পথে যাতে হাতছানি না দেয়, সে বিষয়ে সতর্ক করা হচ্ছে।   

জানা গেছে, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সারা দেশে বিএনপি’র নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, দখলবাজির অভিযোগ ওঠে। এমনকি অর্থের বিনিময়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের শেল্টার দেয়ারও অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসবের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে যায় বিএনপির হাই-কমান্ড। বহিষ্কার, কারণ দর্শানোর নোটিশ এবং পদ স্থগিতসহ নানা শাস্তি দেয়া হয় নেতাকর্মীদের। বিভিন্ন সেমিনার এবং সমাবেশেও বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার বার্তা দিয়েছেন। 

ওদিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ব্যর্থ হোক তা চায় না বিএনপি। তাদের সঙ্গে দূরত্বও সৃষ্টি করতে চায় না; বরং দলটি বলছে, অন্তর্বর্তী সরকারকে তারা সমর্থন দিচ্ছে। তাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে না। কিন্তু যৌক্তিক সময়ের মধ্যে নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানাচ্ছে। এটা না হলে রাজপথে কর্মসূচির মধ্যদিয়ে সরকারের ওপর চাপও তৈরি করা হবে। তবে সম্প্রতি রাজনৈতিক দল, বিশেষ করে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে বিএনপি’র দূরত্ব সৃষ্টির আলোচনার বিষয়টি সামনে আসে। যদিও সম্প্রতি বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে যে, তারা সরকার এবং জামায়াতের সঙ্গে বিরোধে জড়াবে না। 

সেলিমা রহমান বলেন, আমরা কোনো দলের সঙ্গে দূরত রাখি নাই। রাখতেও চাই না এবং অদূর ভবিষ্যতেও রাখবো না। বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু মানবজমিনকে বলেন, আমরা সাংগঠনিক কর্মসূচি করছি। এখানে অন্তর্বর্তী সরকারকে চাপ সৃষ্টি করছি না। আর সরকারকে চাপ সৃষ্টির প্রশ্নই আসে না।  

এ ছাড়া সরকার যেসব সংস্কার উদ্যোগ নিয়ে এগোচ্ছে তাতে বিএনপি সর্বাত্মক সমর্থন দিয়ে যাবে। তবে এসব সংস্কারের কারণে যাতে নির্বাচন দীর্ঘায়িত না হয় সেজন্যও চাপ তৈরি করবে। দলটির নেতারা মনে করেন, অনির্বাচিত সরকার দীর্ঘদিন থাকলে নতুন রাজনৈতিক সংকট তৈরি হতে পারে। এতে দেশ এবং মানুষের ক্ষতি হতে পারে। ইতিমধ্যে কিছু সংস্কারের বিষয়ে বিএনপি সরকারকে মতামত দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দলীয় ফোরামে এই প্রস্তাবনা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। চূড়ান্ত হলে তা সংশ্লিষ্ট সংস্কার কমিশনে জমা দেয়া হবে। 

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
Toto Slot
slot gacor
slot gacor
slot toto
Bacan4d Login
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot bacan4d
bacan4d togel
bacan4d game
slot gacor
bacan4d login
bacantoto 4d
toto gacor
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
slot77 gacor
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
bacansports
slot toto
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d