International

জলবায়ুর প্রভাবে বাস্তুচ্যুত কোটি কোটি শিশু

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্ব জুড়ে বাস্তুচ্যুত হয়েছে কোটি কোটি শিশু। মূলত আবহাওয়ার বিপর্যয়ের জেরে সৃষ্ট বন্যা, খরা, ঝড় ও দাবানলে ২০১৬ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছরে ৪ কোটি ৩০ লাখ শিশু বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক রিপোর্টে জাতিসংঘের শিশু তহবিল ইউনিসেফ এই তথ্য সামনে এনেছে। এছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি মনোযোগ না দেওয়ার অভিযোগও করেছে সংস্থাটি। শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম দ্য স্ট্রেইট টাইমস।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ইউনিসেফের রিপোর্টে ক্ষতিগ্রস্ত বেশ কিছু শিশুর মর্মান্তিক কাহিনির বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরা হয়েছে এবং রিপোর্টের সহ-লেখক লরা হিলি বলেছেন, এই পরিসংখ্যান কেবল ‘সামান্য অংশই’ প্রকাশ করেছে। যার মধ্যে আরো অনেক ক্ষতিগ্রস্তদের হিসাব উঠে আসেনি।  লরা হিলি বলেন, এটি প্রতিদিন প্রায় ২০ হাজার শিশুর বাস্তুচ্যুত হওয়ার সমতুল্য। রিপোর্টে সুদানি শিশু খালিদ আব্দুল আজিমের দুর্দশার কথা বর্ণনা করা হয়েছে। ঐ শিশু জানিয়েছে, আমরা আমাদের জিনিসপত্র হাইওয়েতে সরিয়ে নিয়েছি, যেখানে আমরা কয়েক সপ্তাহ ধরে বাস করেছি। খালিদ আব্দুল আজিমের প্লাবিত গ্রামটিতে কেবল নৌকায় করেই যাওয়া সম্ভব।

অন্যদিকে ২০১৭ সালে বোন মিয়া এবং মায়া ব্রাভো ক্যালিফোর্নিয়ায় পারিবারিক মিনিভ্যানের পেছন থেকে তাদের ট্রেলারে আগুনের শিখা দেখেছেন। মায়া রিপোর্টে বলেছে, আমি ভয় পেয়েছিলাম, হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম। আমি সারা রাত জেগে থাকতাম। জলবায়ু বিপর্যয়ের কারণে সৃষ্ট অভ্যন্তরীণ স্থানতচ্যুতির পরিসংখ্যান সাধারণত ক্ষতিগ্রস্তদের বয়সের হিসাব করে না। কিন্তু ইউনিসেফ বেসরকারি অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুতি মনিটরিং সেন্টারের সঙ্গে কাজ করেছে এবং ডেটা যাচাই করে এর মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত শিশুদের সংখ্যা তুলে ধরেছে।

রিপোর্টে বলা হয়েছে, বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণে ২০১৬ থেকে ২০২১ পর্যন্ত একের পর এক ক্রমবর্ধমান চার ধরনের জলবায়ু বিপর্যয় (বন্যা, ঝড়, খরা এবং দাবানল) ৪৪টি দেশে ৪ কোটি ৩১ লাখ শিশু বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এই বাস্তুচ্যুতির ৯৫ শতাংশই হয়েছে বন্যা এবং ঝড়ের কারণে। এছাড়া কীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত শিশুরা তাদের বাবা-মায়ের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া শিশুরা পাচারকারীদের শিকার হওয়ার মতো অন্যান্য ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে তা এই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button