Bangladesh

জাতিসংঘের ই-সরকার উন্নয়ন সূচকে বাংলাদেশের উন্নতি

জাতিসংঘের ই-সরকার উন্নয়ন সূচকে এ বছর ১১ ধাপ এবং ই-পার্টিসিপেশন সূচকে ৫ ধাপ উন্নতি ঘটেছে বাংলাদেশের। ২০০৩ সালের পর এবার সর্বোচ্চ ইজিডিআই ভ্যালু (০.৬৫৭০) অর্জন করেছে। তবে এই অর্জন নিয়ে তুষ্ট থাকতে পারছেন না খাত সংশ্লিষ্টরা। কেননা, অনলাইন সেবা সূচকে উন্নতি হলেও মানব সম্পদ ও টেলিযোগাযোগ অবকাঠামো উন্নয়ন সূচকে বাংলাদেশ ততটা ভালো করেনি। একইভাবে প্রতিবেদনে খাত সংশ্লিষ্ট বেসরকারি খাতের অবদানও উপেক্ষিত রয়েছে বলে মনে করেন প্রযুক্তিবোদ্ধারা। 

প্রতিবেদন নিয়ে বেসিস সাবেক সহ-সভাপতি (প্রশাসন) ও বিজনেস অটোমেশন পরিচালক শোয়েব আহমেদ মাসুদ মনে করেন, সার্ভে করলে দেখা যাবে এই সফলতার পেছনে আছে দেশীয় তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানিগুলো। সময় এসেছে মূল্যায়ন করার যে বিদেশি প্রতিষ্ঠানের করা সিস্টেম কতটা সহায়ক হয়েছে। এতে যেমন দেশীয় তথ্যপ্রযুক্তিবিদদের কর্মসংস্থান হয়েছে তেমনি প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিদেশি প্রতিষ্ঠানে কাজ করার কারণে দেশীয় তথ্যপ্রযুক্তিবিদদের কর্মসংস্থান হ্রাস পাবার পাশাপাশি বিদেশি প্রতিষ্ঠানের প্রতি নির্ভরশীলতা, তথ্যের নিরাপত্তা এবং বৈদেশিক মুদ্রার ঝুঁকি বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিদেশি প্রতিষ্ঠানের করা কাজটি কী কারণে আন্তর্জাতিক টেন্ডারে যেতে হলো এবং আসলেই এখানে পুরোটাই দেশে করা সম্ভব ছিল নাকি আংশিকভাবে বিদেশে দেওয়া যেত-তা জানা খুব জরুরি। দেশীয় স্বার্থ রক্ষায় ভবিষ্যতের পরিকল্পনায় অতীতের সম্পাদিত সফল বা অসফল প্রকল্পগুলোর মূল্যায়ন করা দরকার।

এ বিষয়ে সিনেসিস আইটির গ্রুপ সিইও রূপায়ন চৌধুরী বলেন, ‘১১ ধাপ এগোলেও সামগ্রিকভাবে এই অগ্রগতি খুব একটা ভালো না। কেননা ই-সরকার উন্নয়ন সূচক তৈরি হয় তিনটা ইনডেক্স থেকে। সেগুলোর অবস্থা খুব একটা ভালো না। দক্ষিণ এশিয়াতে ভারতের পরে আমরা। আমাদের তুলনামূলক নম্বর ০.৭৩৭৪। অবস্থান ৬৭তম। এর পুরোপুরি কৃতিত্ব এই সফটওয়‍্যার ইন্ডাস্ট্রির সকল কোম্পানির। অথচ সবচেয়ে কম বরাদ্দ থাকত সফটওয়‍্যারে। বছরে মনে হয় না ৫০০ কোটি টাকা শুধু সফটওয়‍্যারে বরাদ্দ থাকত। কোম্পানি কাজ করে ১৩০০’রও বেশি। বেশি বরাদ্দ থাকে হার্ডওয়‍্যার, ট্রেনিং-এ, বিদেশি ট্রেনিং ও সরকারের বিভিন্নভাবে থাকা কনসালটেন্টদের পেছনে সবচেয়ে বেশি টাকা খরচ হয়েছে। সেখানেই পিছিয়ে রয়েছে দেশ। 

জাতিসংঘের ই-গভর্নমেন্ট সার্ভে ২০২৪ অনুযায়ী, এ বছর ১৯৩টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ এখন ১০০তম। গত বছর ছিল ১১১তম। ২০২০ সালের প্রতিবেদনে এই সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১১৯তম। অন্যদিকে, ই-পার্টিসিপেশন সূচকে বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থান ৭০তম। গত বছর ২০ ধাপ এগিয়ে উঠেছিল ৭৫তম অবস্থানে।’

সম্প্রতি নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে প্রকাশিত ত্রয়োদশ এই জরিপে ই-গভর্নমেন্ট ডেভেলপমেন্ট ইনডেক্স বা ইজিডিআই-এ বাংলাদেশ ০.৬৫৭০ স্কোর নিয়ে ১৯৩টি দেশের মধ্যে ১০০তম স্থানে রয়েছে। আগে এই স্কোর ছিল ০.৫৬৩০। একইভাবে এ বছরের ০.৬১৬৪ স্কোর নিয়ে ই-পার্টিসিপেশন বা ইপিআইতে ৭০তম স্থান অর্জন করেছে। ইপিআইতে বাংলাদেশ সর্বশেষ ০.৫২২৭ স্কোর নিয়ে ৭৫ এবং এর আগের বছর আগে ০.৫৭১৪ স্কোর নিয়ে ৯৫তম স্থানে ছিল। অনলাইনে সেবা প্রদান, আইন ও পলিসি কাঠামো, ই-পার্টিসিপেশনের অবস্থার পাশাপাশি টেলিযোগাযোগ অবকাঠামো এবং হিউম্যান ক্যাপিটালকে মূল্যায়নের ভিত্তিতে এই জরিপ সম্পন্ন হয়েছে। সকল সদস্য রাষ্ট্রের ই-সরকার উন্নয়ন মূল্যায়নে বিভিন্ন প্রকাশনা এবং অনলাইনভিত্তিক বিভিন্ন সেবার তথ্য- উপাত্ত বিশ্লেষণের ভিত্তিতে তৈরি হয়েছে এই জরিপ। 

জরিপ মতে, অনলাইন সেবা সূচকে বাংলাদেশ গতবারের ০.৬৫২১ স্কোর থেকে এবার বেড়ে ০.৭৩৭৪ স্কোর অর্জন করেছে। টেলিকমিউনিকেশন অবকাঠামো সূচকে অবস্থানের কিছুটা উন্নতি হয়েছে। আগের ০.৪৪৬৯০ স্কোর থেকে এবারের স্কোর বেড়ে দাঁড়িয়েছে ০.৬৫০১। 

প্রতিবেদনের সফটওয়‍্যার খাতে বেসরকারি উদ্যোক্তাদের কথা উল্লেখ না থাকার বিষয়ে আক্ষেপ প্রকাশ করে এই খাতে ব্যবসায়ীরা বলেন, ‘নাগরিকবান্ধব কাঠামো তৈরিতে দেশীয় কোম্পানিগুলোর অবদান কোনো অংশেই কম নয়। আমাদের এই বিষয়গুলো হাইলাইট করা উচিত।’

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
Toto Slot
slot gacor
slot gacor
slot toto
Bacan4d Login
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot bacan4d
bacan4d togel
bacan4d game
slot gacor
bacan4d login
bacantoto 4d
toto gacor
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
slot77 gacor
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
bacansports
slot toto
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d