জাপানি স্পেস স্টার্টআপের রকেট উৎক্ষেপণে আবারো ব্যর্থতা
টোকিওভিত্তিক জাপানি মহাকাশ স্টার্টআপ স্পেস ওয়ানের রকেট উৎক্ষেপণের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলো। কাইরোস নামের ছোট রকেটটি স্যাটেলাইট নিয়ে মহাকাশে পাঠানোর জন্য উৎক্ষেপণ করা হয়। কিন্তু উৎক্ষেপণের মাত্র ১০ মিনিট পর এটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। এটা ছিল কোম্পানিটির দ্বিতীয় প্রচেষ্টা। এর আগে তাদের প্রথম চেষ্টা ৯ মাস আগে একটি বিস্ফোরণের মাধ্যমে শেষ হয়েছিল।
কাইরোস-২ নামের ১৮ মিটার দীর্ঘ সলিড-প্রোপেলান্ট রকেটটি স্থানীয় সময় সকাল ১১টায় জাপানের ওয়াকায়ামা অঞ্চলের পার্বত্য উৎক্ষেপণ কেন্দ্র স্পেসপোর্ট কিই থেকে উৎক্ষেপণ করা হয়। তবে মহাকাশে সঠিক পথে গমন না করায় মাত্র ১০ মিনিট পর মিশন বন্ধ করার ঘোষণা দেয় স্পেস ওয়ান।
স্পেস ওয়ানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মিশন সফল হওয়া সম্ভব নয় বলে মনে হওয়ায় অভিযান থামিয়ে দেওয়া হয়। তবে ব্যর্থতার সঠিক কারণ এখনো জানা যায়নি। সামাজিক মাধ্যমে প্রচারিত ভিডিওতে দেখা যায়, রকেটটি উৎক্ষেপণের পরই তার গতিপথে অস্থিরতা দেখা দেয়।
রকেটটির লক্ষ্য ছিল ৫টি ছোট উপগ্রহ মহাকাশে পাঠানো, যার মধ্যে একটি ছিল তাইওয়ান স্পেস এজেন্সির। এই উপগ্রহগুলোকে সূর্যের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ কক্ষপথে (৫০০ কিলোমিটার উচ্চতায়) স্থাপন করার কথা ছিল।
স্পেস ওয়ান জানিয়েছে, তারা এ ঘটনায় তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে এবং বিকাল ২টায় স্থানীয় সময় একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করবে।
এ বছরের মার্চ মাসে কাইরোস রকেটের প্রথম ফ্লাইটও ব্যর্থ হয়েছিল। জাপানের সরকারি উপগ্রহসহ রকেটটি উড়াল দেওয়ার মাত্র পাঁচ সেকেন্ডের মাথায় বিস্ফোরণ ঘটে। উপগ্রহটি মূলত উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ ও অন্যান্য সামরিক কার্যক্রম পর্যবেক্ষণের উদ্দেশ্যে পাঠানো হচ্ছিল।
সেসময় স্পেস ওয়ান জানিয়েছিল, রকেটের হার্ডওয়্যারে কোনো সমস্যা ছিল না, তবে ভুল ফ্লাইট সেটিংসের কারণে স্বয়ংক্রিয় সেলফ-ডেস্ট্রাক্ট সিস্টেম সক্রিয় হয়ে যায়। পরে সমস্যার সমাধান করার কথা জানায় কোম্পানিটি।
২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠিত স্পেস ওয়ান কোম্পানিটি ক্যানন ইলেকট্রনিকস, আইএইচআই এর এয়ারোস্পেস ইউনিট, নির্মাণ প্রতিষ্ঠান শিমিজু এবং রাষ্ট্রীয় ব্যাকিংকৃত একটি ব্যাংকের যৌথ উদ্যোগ। তাদের লক্ষ্য ২০২৯ সালের মধ্যে বছরে ২০টি ছোট রকেট উৎক্ষেপণ করা।
জাপান আশা করছে, স্পেস ওয়ান দেশের মহাকাশ শিল্পকে এগিয়ে নিয়ে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য মহাকাশশক্তি সম্পন্ন দেশের সাথে প্রতিযোগিতার উপযোগী করবে। তবে টানা দুটি ব্যর্থ উৎক্ষেপণের পর জাপানের মহাকাশ শিল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।