International

জার্মানিতে দূরপাল্লার মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের সিদ্ধান্ত, ক্রুদ্ধ রাশিয়া

জার্মানিতে ২০২৬ সাল থেকে দূরপাল্লার মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করা হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে ন্যাটোর তিন দিনব্যাপী ৭৫তম শীর্ষ সম্মেলনের শেষ দিন এই ঘোষণা দেওয়া হয়।

গতকাল যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানি এক যৌথ বিবৃতিতে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের ঘোষণাটি দেয়। ঘোষণা অনুযায়ী, জার্মানিতে পর্যায়ক্রমে টমাহক ক্রুজ, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র বিধ্বংসী স্ট্যান্ডার্ড মিসাইল বা এসএম-৬ ও হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করা হবে। ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের যেসব ক্ষেপণাস্ত্র আছে সেগুলোর চেয়ে এসবের পাল্লা অনেক বেশি।

এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র নিষিদ্ধ করে ১৯৮৮ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও তৎকালীন সোভিয়েত রাশিয়ার মধ্যে একটি চুক্তি হয়েছিল। কিন্তু পাঁচ বছর আগে চুক্তিটি বাতিল হয়ে যায়।

জার্মানিতে সর্বশেষ দূরপাল্লার মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করা হয়েছিল স্নায়ুযুদ্ধের সময়। এখন দেশটিতে নতুন করে আবার দূরপাল্লার মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের সিদ্ধান্তে ক্রুদ্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে রাশিয়া।

‘নতুন হুমকিকে সামরিকভাবে মোকাবিলা’ করা হবে জানিয়ে রাশিয়ার উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই রিয়াবকভ বলেছেন, ‘এটা ধারাবাহিক উসকানির একটি যোগসূত্র মাত্র।’ ন্যাটো ও যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়াকে ভয় দেখাচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন এই রুশ মন্ত্রী। 

যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানির যৌথ বিবৃতিতে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, পর্যায়ক্রমে ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের বিষয়টিকে প্রাথমিকভাবে সাময়িক সিদ্ধান্ত বলে বিবেচনা করা হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে তা স্থায়ী করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ন্যাটো ও ইউরোপের সমন্বিত প্রতিরোধের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। 

নিজের মাটিতে দূরপাল্লার মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের সিদ্ধান্তের বিষয়ে ন্যাটো সম্মেলনে জার্মানির প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরিস পিস্টোরিয়াস বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র চায় আমরাও দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি ও সংগ্রহ করি। এই বিষয়ে জার্মানি ও ইউরোপের অন্য দেশগুলোকে উৎসাহ দিতেই যুক্তরাষ্ট্র এটি করেছে।’

পিস্টোরিয়াস বৃহস্পতিবার পরবর্তী সময়ে ফ্রান্স, ইতালি ও পোল্যান্ডের প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের সঙ্গে একটি পত্রে স্বাক্ষর করেন। এতে ইউরোপে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির কথা বলা হয়েছে। দ্য ইউরোপিয়ান লং-রেঞ্জ স্ট্রাইক অ্যাপ্রোচ (ইলসা) এই ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করবে।

এদিকে জার্মানির বিভিন্ন রাজনৈতিক দল নিজেদের মাটিকে দূরপাল্লার মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছে। চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসের জোট সরকারের শরিক গ্রিন পার্ট বা দ্য গ্রিনসের মুখপাত্র সারা নান্নি ক্ষোভে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে কথা পর্যন্ত বলতে চাননি। তিনি জার্মানির সংবাদমাধ্যম রাইনিশশে পস্টকে বলেছেন, ‘এই সিদ্ধান্ত আতঙ্ক ছড়াবে। গুজব ও উসকানিতে ঘি ঢালবে।’

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button