জীবনযাত্রার ব্যয় সাশ্রয়ে কমলা হ্যারিসের ব্যাপক অর্থনৈতিক প্রস্তাব
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী কমলা হ্যারিস শুক্রবার জীবনযাত্রার মূল্য নিয়ন্ত্রণে ব্যাপক অর্থনৈতিক প্রস্তাব ঘোষণা করেছেন। অর্থনৈতিক পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বেশ কয়েকটি নীতির কথা জানিয়েছেন কমলা হ্যারিস৷ রোজকার মুদিপণ্যের ‘দাম বাড়াতে’ চায় যারা, মূল্য নিয়ন্ত্রণে তেমন সংস্থাগুলোকে জরিমানা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
কমলা বলেছেন, এর ফলে আবাসনগুলোকে আরো সাশ্রয়ী করা সম্ভব, মার্কিনদের জীবনযাত্রার ব্যয় নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব৷ উত্তর ক্যারোলাইনায় প্রচারণার সময় কমলা বলেন, ‘খরচ বেড়েই চলেছে৷ খাবার, ভাড়া, গ্যাস, স্কুলের জামা, প্রেসক্রিপশনের ওষুধ। এত কিছু খরচের পর অনেক পরিবারের জন্য মাসের শেষে হাতে আর খুব বেশি টাকা থাকে না।
একই সঙ্গে নিত্যনৈমিত্তিক জিনিস বা মুদিপণ্যের খরচ বাড়াতে চাওয়া কম্পানিগুলোর ওপর ‘কঠোর শাস্তি’ আরোপের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।
প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ফেডারেল ট্রেড কমিশনের প্রতি বড় করপোরেশনগুলোকে শাস্তি দেওয়ার আহ্বান জানানো হবে, যদি সেগুলো মূল্যবৃদ্ধিতে জড়িত বলে জানা যায়। তবে এটা কংগ্রেসে পাস হতে হবে।
হ্যারিস প্রথমবার বাড়ি কেনা কিছু মানুষের জন্য ২৫ হাজার ডলার ঋণ এবং নতুন বাড়ি তৈরির ক্ষেত্রে কর ছাড়ের প্রস্তাবও দিয়েছেন।
তিনি পরিবারের জন্য কর বিরতির কথাও বলেছেন, যার মধ্যে নবজাতকদের পরিবারগুলোর জন্য ছয় হাজার ডলার পর্যন্ত নতুন ‘চাইল্ড ট্যাক্স ক্রেডিট’ রয়েছে৷
ট্রাম্প ও হ্যারিসের অর্থনীতি ভাবনার বৈপরীত্য
হ্যারিসের প্রস্তাবগুলো ডোনাল্ড ট্রাম্পের অর্থনৈতিক পরিকল্পনার বিপরীত। ট্রাম্পের কথায়, কমলা হ্যারিস এভাবে ‘সোভিয়েত-ধাঁচের কমিউনিজম’ করছেন।
ট্রাম্পের প্রচারণায় বলা হয়েছে, ‘কমলা হ্যারিসের অফিসে মাত্র সাড়ে তিন বছর হয়েছে। তিনি যা করেছেন তা হলো অর্থনীতি ভেঙে দেওয়া।
যদিও যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যস্ফীতি একটা স্থির নিম্নগামী প্রবণতায় রয়ে গেছে। শক্তিশালী চাকরির বৃদ্ধি এবং রেকর্ড স্টক মার্কেটের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি মন্দা এড়িয়ে যেতে পেরেছে। করোনাসংক্রান্ত অর্থনৈতিক উত্থানের কিছু প্রভাব রয়েছে, যার মধ্যে খাবারের প্রচুর দাম ও বাড়ির ক্রেতাদের জন্য উচ্চ সুদের হারের মতো বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত।
ট্রাম্প এদিকে নানা কর বসানোর প্রস্তাব করেছেন। তার দাবি, এর ফলে অর্থনীতি চাঙ্গা হবে। শুক্রবার উত্তর ক্যারোলাইনায় কমলা পাল্টা যুক্তি দেন, এর ফলে মার্কিনরা আরো বিপদে পড়বেন।
কমলা হ্যারিস বলেন, ‘তিনি (ট্রাম্প) দৈনন্দিন পণ্য ও মৌলিক প্রয়োজনীয় জিনিসগুলোর ওপর জাতীয় বিক্রয় কর আরোপ করতে চান, যা আমরা অন্যান্য দেশ থেকে আমদানি করি। এটা মার্কিনদের ধ্বংস করে দেবে।’
কমলার কথায়, ‘এর অর্থ হলো আপনার প্রতিদিনের প্রায় প্রতিটা চাহিদার দাম বাড়বে। গ্যাসের ওপর কর বসাবেন ট্রাম্প। খাদ্যের ওপর কর বসাবেন ট্রাম্প। পোশাকের ওপর কর বসাবেন ট্রাম্প। এ ছাড়া প্রেসস্ক্রিপশন লাগে না—এমন ওষুধের ওপর কর বসাতে চান ট্রাম্প।’