Science & Tech

টিকটক বিক্রি হবে? কারা আছে কেনার দৌড়ে

ইমার্কেটারের প্রধান বিশ্লেষক জেসমিন এনবার্গ বলেন, “সম্ভাব্য ক্রেতার অবশ্যই প্রচুর অর্থ ও পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার ক্ষমতা থাকতে হবে। যদিও অনেকেই লোভনীয় অ্যাপটিকে নিজেদের আয়ত্তে নিতে চাইবে, তবে বেশিরভাগই অ্যান্টিট্রাষ্টের প্রতিবন্ধকতা দূর করতে পারবে না।”

টিকটকের বিক্রি যেন এখন অনেকটা সময়ের ব্যাপার। কেননা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অ্যাপটিকে নিষিদ্ধ করতে গত বুধবার আইন পাশ করেছে বাইডেন প্রশাসন।

এক্ষেত্রে দেশটিতে টিকটককে টিকিয়ে রাখতে মালিক কোম্পানি বাইটড্যান্সকে তা বিক্রি করতে হবে। যদিও কোম্পানিটির পক্ষ থেকে আইনটিকে চ্যালেঞ্জের জন্য আদালতের শরণাপন্ন হওয়ার পরিকল্পনা করছে। কিন্তু এই প্রচেষ্টাটি ব্যর্থ হলে কোম্পানিটিকে হয়তো দ্রুত উপযুক্ত ক্রেতা খুঁজে বের করতে হবে।

ঠিক তাই প্রশ্ন উঠছে ১৭০ মিলিয়ন মার্কিনিদের ব্যবহার করা তুমুল জনপ্রিয় অ্যাপটি ঠিক কারা কিনে নিতে পারেন। এক্ষেত্রে দেশটির সরকারেরও কাদের প্রতি সুনজর রয়েছে সেটিও ভাবা হচ্ছে। যেখানে অ্যাপটি বর্তমানে মেটার মতো জায়ান্ট প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানকে টক্কর দিচ্ছে।

টিকটকের সম্ভাব্য ক্রেতা সম্পর্কে এখনই নিশ্চিতভাবে খুব একটা আভাস পাওয়া যাচ্ছে না। তবে কিছু কোম্পানি অন্যদের চেয়ে বেশি এগিয়ে রয়েছে বলে মনে করছেন আইন বিশেষজ্ঞ ও ব্যবসায়িক বিশ্লেষকরা।

মেটা ইতোমধ্যেই ফেডারেল ট্রেড কমিশনের সাথে হোয়াটসঅ্যাপ ও ইনস্টাগ্রাম ক্রয় সংক্রান্ত মামলা লড়ছে। কোম্পানিটির বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা মার্কিন অ্যান্টিট্রাস্ট আইন লঙ্ঘন করেছে।

অন্যদিকে গুগল মূলত দুটি ফ্রন্টে বিচার বিভাগের অনাস্থা মামলার বিরুদ্ধে লড়াই করছে। এক্ষেত্রে একটি সার্চ সম্পর্কিত এবং অন্যটি বিজ্ঞাপন প্রযুক্তি ব্যবসার সাথে যুক্ত। সেক্ষেত্রে টেক জায়ান্ট কোম্পানিটি টিকটক কেনার ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে রয়েছে।

এই বিষয়ে বিচার বিভাগের সাবেক অ্যান্টিট্রাস্ট কর্মকর্তা জিন কিমেলম্যান বলেন, “যদি ক্রেতা হিসেবে অ্যামাজন, মাইক্রোসফট, গুগল কিংবা মেটার নাম আসে তবে আমি মনে করি অ্যান্টিট্রাস্ট সম্পর্কিত উদ্বেগ দেখা যাবে।”

তিনি আরও বলেন, “তবে আপনি ইন্টেল, সিসকো, ওরাকলের নাম বলতে পারেন। এমনকি ভেরিজন কিংবা এটিএন্ডটি-এর নামও। এগুলো সম্ভবত তেমন বড় সমস্যা নয়।”

ইমার্কেটারের প্রধান বিশ্লেষক জেসমিন এনবার্গ এক্ষেত্রে অবশ্য একটি প্যারাডক্সের উল্লেখ করেন। তার মতে, শুধু বৃহত্তম ও প্রভাবশালী প্রযুক্তি জায়ান্টদের পক্ষেই টিকটক কেনা সম্ভব। তবে তারাই আবার নিয়ন্ত্রক সংস্থার সংশয়ের সবচেয়ে বড়ও কারণ হতে পারে।

এনবার্গ আরও বলেন, “সম্ভাব্য ক্রেতার অবশ্যই প্রচুর অর্থ ও পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার ক্ষমতা থাকতে হবে। যদিও অনেকেই লোভনীয় অ্যাপটিকে নিজেদের আয়ত্তে নিতে চাইবে, তবে বেশিরভাগই অ্যান্টিট্রাষ্টের প্রতিবন্ধকতা দূর করতে পারবে না।”

মাইক্রোসফট সম্প্রতি ইতিহাসের বৃহত্তম প্রযুক্তি একীভূতকরণের মাধ্যমে ভিডিও গেম পাবলিশার অ্যাক্টিভিশন ব্লিজার্ডকে কেনার চেষ্টা করেছে। এসময় তাদেরকে প্রচুর অনাস্থা যাচাই-বাছাই করেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এটি মামলা এড়াতে সক্ষম হয়।

এই সাফল্য থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে মাইক্রোসফট টিকটক কেনার জন্য সুযোগ নিতে পারে। কোম্পানিটি পেশাদারদের জন্য তৈরি সোশ্যাল নেটওয়ার্ক লিংকডইনের মালিক। তবে তাদের পোর্টফোলিওতে টিকটকের মতো কোনো অ্যাপ নেই।

২০২০ সালে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন প্রথমবার টিকটক বিক্রির জন্য চাপ দেন তখন মাইক্রোসফট অ্যাপটি কেনার তালিকায় অন্যতম ছিল। এমনকি আলোচনায় ওয়ালমার্টের নামও এসেছিল। কোম্পানিটি তখন জানায়, তারা একটি সম্ভাব্য চুক্তিতে মাইক্রোসফটের সাথে অংশীদারিত্ব করছে।

তবে তখন টিকটক প্রজেক্ট টেক্সাসের অধীনে ওরাকলের সাথে কাজ করতে রাজি হওয়ার অবস্থার ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটে। যার মাধ্যমে ওরাকলের মালিকানাধীন সার্ভারগুলিতে মার্কিনিদের ডেটা সংরক্ষণ করার জন্য টিকটকের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেওয়া হয়। এক্ষেত্রে তারা সাময়িকভাবে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তার উদ্বেগকে সন্তুষ্ট করতে সক্ষম হয়েছিল।

চারবছর পর ফের বেকায়দায় পরেছে টিকটক। একইসাথে প্রজেক্ট টেক্সাসও অনেকটা প্রাসঙ্গিকতা হারিয়েছে। ফলে পূর্বের সম্ভাব্য ক্রেতারা ফের নড়েচড়ে বসেছে; একইসাথে এই তালিকায় যুক্ত হয়েছে ওরাকলও।

এক্ষেত্রে ট্রাম্প প্রশাসনের প্রাক্তন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্টিভেন মুচিন অবশ্য নিজে উদ্যোগ নিয়ে সকলকে চমকে দিয়েছে। তিনি গত মাসে ঘোষণা করেন যে, টিকটক কেনার জন্য বিনিয়োগকারীদের একটি দলকে একত্রিত করছেন।

তবে ইতোমধ্যেই সমালোচনার মুখে পড়েছেন মুচিন। কেননা টিকটক নিষিদ্ধ করার প্রথম পর্যায়ের ট্রাম্প প্রশাসনের প্রচেষ্টায় তিনি নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তখন তিনি জনসমক্ষে বলেছেন যে, টিকটক ব্যবহারকারীদের ডেটা সংগ্রহ করছে।

এখন মুচিন নিজেই সেই অ্যাপটি কিনতে চাইছেন। সেক্ষেত্রে সমালোচকেরা এটিকে অনেকে স্বার্থের দ্বন্দ্ব হিসেবে দেখছেন।

টিকটক কিনলে মুচিন ট্রাম্পের প্রতিদ্বন্দ্বীতেও পরিণত হতে পারে। সাবেক এই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রুথ সোশ্যাল মিডিয়ার চেয়ারম্যান ও নেতৃস্থানীয় শেয়ারহোল্ডার।

অন্যান্য ব্যবসায়ী মধ্যে যারা আগ্রহ প্রকাশ করেছেন তাদের মধ্যে প্রাইভেট ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফার্ম ও’লিরি ভেঞ্চারসের কানাডিয়ান চেয়ারম্যান কেভিন ও’লিরি অন্যতম। সেক্ষেত্রে তিনি ২০ থেকে ৩০ বিলিয়ন দাম হাকাতে পারে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
Toto Slot
slot gacor
slot gacor
slot toto
Bacan4d Login
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot bacan4d
bacan4d togel
bacan4d game
slot gacor
bacan4d login
bacantoto 4d
toto gacor
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
slot77 gacor
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
bacansports
slot toto
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d