Bangladesh

ট্যুরিজম খাতের ভাগ্য বদলায়নি ৫০ বছরেও

কিছু রুটিন কার্যক্রম ছাড়া ৫০ বছরেও ট্যুরিজম খাতের ভাগ্য বদলায়নি। পরিকল্পনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে এ খাতের উন্নয়ন। প্রতি বছর ঢাকঢোল পিটিয়ে এর উন্নয়নে পরিকল্পনা-মহাপরিকল্পনার ঘোষণা করা হলেও সময় শেষে তার সফলতা অন্ধকারেই রয়ে যায়। সম্ভাবনার এ খাতের উন্নয়নে সরকারের একাধিক সংস্থা থাকলেও কেন তারা বারবার ব্যর্থ হচ্ছেন তার জবাব মিলছে না।

পর্যটন খাতের মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের দায়িত্বে থাকা অন্যতম দুই প্রতিষ্ঠান হলো বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন ও বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড। পর্যটকদের বাংলাদেশের প্রতি আকৃষ্ট করতে এ খাতের উন্নয়নে ২০২১ সাল ঘিরে মহাপরিকল্পনা নেয়া হয়। কিন্তু নির্ধারিত সময় অতিবাহিতের পর আজো তার বাস্তাবায়ন সম্ভব হয়নি। তবে বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্টরা নিজেদের ব্যর্থতা স্বীকার করতে নারাজ। তাদের ভাষ্য, এ খাতের উন্নয়ন একসাথে হয় না। এর জন্য দফায় দফায় প্রতি বছরই কাজ করতে হয়। তারই আলোকে তিনটি পর্যায়ে উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। তবে পরিকল্পনার কত শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছে আর প্রক্রিয়াধীনই বা কতটুকু এসবের সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য তারা জানাতে পারেননি।

ট্যুরিজম বোর্ডের একজন কর্মকর্তা জানান, তারা এ পর্যন্ত অনেকগুলো পরিকল্পনা নিয়েছেন। রয়েছে মহাপরিকল্পনা কার্যক্রম। তারই আলোকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিশেষ প্রচারণার চালাচ্ছে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড। ‘বিউটিফুল বাংলাদেশ’ ক্যাম্পেইনে মহান মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন স্মৃতিস্তম্ভ এবং সেগুলোর ইতিহাস নিয়ে ব্লগ আকারে প্রচারণা চলছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পরিকল্পনা অনুযায়ী পর্যটন কেন্দ্রগুলোকে আকর্ষণীয় করা, পর্যটন অবকাঠামোগত উন্নয়ন, পর্যটকদের জন্য দেশব্যাপী মানসম্মত পর্যটন সুবিধাদি সৃষ্টি, পর্যটন স্থাপনা উন্নয়ন, সংরক্ষণ ও সংস্কার, পর্যটন কেন্দ্রের রাস্তা প্রশস্ত করার পরিকল্পনাসহ মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন, জেলাভিত্তিক পর্যটন এলাকা গড়ে তোলার পাশাপাশি ঐতিহ্যের প্রতœতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলো সংরক্ষণের পরিকল্পনা নেয়া হয়। তারই অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে সাবরাং ট্যুরিজম পার্ক, নাফ ট্যুরিজম পার্ক এবং সোনাদিয়া ইকো ট্যুরিজম পার্ক স্থাপনের কাজ শুরু হলেও বাকিগুলো আলোচনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের ব্যবস্থাপক (বিক্রয় উন্নয়ন ও জনসংযোগ) মো: জিয়াউল হক হাওলাদার বলেন, পর্যটনের উন্নয়নে মহাপরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ চলছে। ইতোমধ্যে প্রায় চার শ’ কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে। ইতোমধ্যে কিছু কাজ শেষ হয়েছে। বাকিগুলো প্রক্রিয়াধীন। তিনি বলেন, প্রথম পর্যায়ে এ শিল্পের বর্তমান অবস্থা, এর শক্তি কতটুকু, দুর্বলতা কোথায়, সম্ভাবনা কেমন, কোন ধরনের সঙ্কট রয়েছে এসব চিহ্নিতে ব্যাপক অগ্রগতি হয়েছে। এগুলো শেষ হলে বাকি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন কার্যক্রম শুরু হবে।

আর ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-টোয়াবের শিবলুল আজম কোরেশী বলেন, উন্নয়ন কিছুটা হয়েছে। তবে এর মধ্যে ভিসা সহজ না করায় কিছুটা সমস্যা হচ্ছে।

অন্য দিকে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের উপ পরিচালক (প্রশাসন ও সমন্বয়) (উপ সচিব) মোহাম্মাদ সাইফুল হাসান বলেন, এর সাথে সংশ্লিষ্ট রয়েছে প্রায় ২০টি প্রতিষ্ঠান। তাই এর উন্নয়ন শুধু আমাদের একার ওপর নির্ভর করে না। আর এর একাধিক দিকও রয়েছে। তারপরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিকল্পনা আমরা বাস্তাবায়ন করেছি। আর কিছু পরিকল্পনা বাস্তাবায়নের পথে। বলতে পারেন সামর্থ্য অনুযায়ী এ খাত এগিয়ে নিতে আমাদের চেষ্টার কমতি নেই। পরিকল্পনা অনুযায়ী পর্যটন কেন্দ্রগুলোকে আকর্ষণীয় করা, পর্যটন অবকাঠামোগত উন্নয়ন, পর্যটকদের জন্য দেশব্যাপী মানসম্মত পর্যটন সুবিধাদি সৃষ্টি, পর্যটন স্থাপনা উন্নয়ন, সংরক্ষণ ও সংস্কারসহ অনেক কাজ বাস্তাবায়ন হয়েছে। আর মহাপরিকল্পনায় যেসব কাজ বাকি আছে সেগুলো শেষ হলে নতুন এক বাংলাদেশ দেখবেন পর্যটকরা।

এর আগে পর্যটকদের বাংলাদেশের প্রতি আকৃষ্ট করতে ২০২১ সালে পর্যটন ঘিরে মহাপরিকল্পনা নেয়া হয়। পরিকল্পনার মধ্যে ছিলÑ মেলা, ফেস্টিভাল, কার্নিভাল, কালচারাল অনুষ্ঠান, ব্র্যান্ডিং, স্যোসাল মিডিয়ায় প্রচারণা, ভিডিও নির্মাণ, ডিজিটাল স্ক্রিনে প্রদর্শনী ও ওশান ট্যুরিজমকে বেসরকারি উদ্যোগে চালু। কিন্তু করোনা মহামারীর কারণে সময়মতো তার কার্যক্রম চালু সম্ভব হয়নি। ফলে পিছিয়ে পড়ে উন্নয়ন কার্যক্রম।

এ দিকে আজ বিশ্ব পর্যটন দিবস উপলক্ষে সারা দেশে নানা কর্মসূচির মধ্যে দিনটি পালিত হবে। বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন ও বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডসহ বিভিন্ন পর্যটন সংস্থা দিনটি ঘিরে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। তারই অংশ হিসেবে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে র‌্যালি করবে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন।

বিশ্ব পর্যটন দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য ‘ট্যুরিজম অ্যান্ড গ্রিন ইনভেস্টমেন্ট’ বা পর্যটনে পরিবেশবান্ধব বিনিয়োগ। দিবসটি উপলক্ষে দেশের চা-পর্যটন, পর্যটক ও পর্যটন কেন্দ্রের নিরাপত্তা, আবাসন, পরিবহন, পর্যটনে বিনিয়োগ সম্ভাবনা, পর্যটন খাতে মানবসম্পদ উন্নয়ন, পর্যটনশিল্পে নারীর অংশগ্রহণ ইত্যাদি বিষয়ে সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া সাংস্কৃতিক পর্বে দর্শনার্থীরা উপভোগ করতে পারবেন গম্ভীরা, গাজীর পট, পথনাট্য, বাউল গান ও পুঁথিপাঠের আসর।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
Toto Slot
slot gacor
slot gacor
slot toto
Bacan4d Login
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot bacan4d
bacan4d togel
bacan4d game
slot gacor
bacan4d login
bacantoto 4d
toto gacor
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
slot77 gacor
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
bacansports
slot toto
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d