ট্রাম্পের ‘অনুরোধে’ মেক্সিকো সীমান্তপ্রাচীরে কালো রং করা হবে

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেক্রেটারি ক্রিস্টি নোয়েম জানিয়েছেন, পুরো যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তপ্রাচীর কালো রং করা হবে, যাতে এটি আরো বেশি গরম হয়ে ওঠে এবং আরোহন কঠিন হয়। এ ধারণার কৃতিত্ব তিনি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে।
বর্তমান অভিবাসন দমন অভিযানে অভ্যন্তরীণ আটক ও বহিষ্কার প্রধান অগ্রাধিকার হলেও এ বছরের শুরুতে ট্রাম্পের নীতিগত বিলের মাধ্যমে সীমান্তপ্রাচীর নির্মাণের জন্য অতিরিক্ত ৪৬ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করা হয়েছে।
নোয়েমের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিদিন প্রায় আধা মাইল (০.৮ কিলোমিটার) প্রাচীর নির্মিত হচ্ছে প্রায় দুই হাজার মাইল (তিন হাজার ২১৮ কিলোমিটার) দীর্ঘ সীমান্তজুড়ে।
এদিকে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে সীমান্ত অতিক্রমের হার উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, ব্যাপক গ্রেপ্তার ও আটক কার্যক্রম অবৈধ অভিবাসনে নিরুৎসাহক হিসেবে কাজ করছে।
নিউ মেক্সিকোর সীমান্ত এলাকায় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে নোয়েম বলেন, কালো রং করার বিষয়টি ‘বিশেষভাবে প্রেসিডেন্টের অনুরোধে’ করা হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, ‘(তিনি) বুঝতে পেরেছেন, এখানে তাপমাত্রা খুব বেশি থাকে, আর কোনো কিছু কালো রং করা হলে সেটি আরো বেশি গরম হবে এবং প্রাচীর টপকানো আরো কঠিন হয়ে পড়বে।
সীমান্ত টহল কর্মকর্তাদের মতে, কালো রং করলে প্রাচীর মরিচা পড়া থেকেও রক্ষা পাবে। এ ছাড়া নোয়েম জানান, প্রশাসন রিও গ্রান্দে নদীজুড়ে আরো ‘পানিভিত্তিক অবকাঠামো’ স্থাপনের পরিকল্পনা করছে, যা দুই দেশের সীমান্তের অর্ধেকের বেশি অংশজুড়ে বিস্তৃত।
তিনি বিস্তারিত আর কিছু না জানালেও, টেক্সাস কর্তৃপক্ষ আগেই ওই নদীতে ভাসমান প্রতিবন্ধক (বড় কমলা বয়া) স্থাপন করেছে এবং নদীর তীরে শক্তিশালী বেড়া নির্মাণ করেছে, যা অঙ্গরাজ্য পুলিশ, টেক্সাস ন্যাশনাল গার্ড ও স্থানীয় বাহিনী পাহারা দিচ্ছে।
ট্রাম্প ফের ক্ষমতায় আসার পর থেকে সীমান্ত অতিক্রম ও অবৈধ অভিবাসী আটক নাটকীয়ভাবে কমে গেছে। জুলাইয়ে প্রায় চার হাজার ৬০০ ও জুনে ছয় হাজার জন আটক হয়েছে, যা বছরভিত্তিক হিসাবে ৯২ শতাংশ হ্রাস। বাইডেন প্রশাসনের সময় প্রতিদিন গড়ে কখনো কখনো ছয় হাজার জন পর্যন্ত আটক হতো।
গত আগস্টের শুরুতে নোয়েম দাবি করেছিলেন, ট্রাম্প প্রশাসনের প্রথম ২০০ দিনে মোট ১৬ লাখ অনথিভুক্ত অভিবাসী যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করেছে। তবে কতজন বহিষ্কৃত হয়েছে আর কতজন নিজেরাই দেশ ছেড়েছে তা তিনি স্পষ্ট করেননি।
অন্যদিকে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট আগেই জানিয়েছিলেন, জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে তিন লাখ অনথিভুক্ত অভিবাসী আটক করা হয়েছে।
প্রশাসন দাবি করছে, অপরাধমূলক রেকর্ড থাকা ব্যক্তিদের অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। তবে অভিবাসন অধিকারকর্মীরা সতর্ক করে বলেছেন, যাদের কোনো অপরাধ নেই কিংবা সামান্য অভিযোগ রয়েছে, তাদেরও এসব অভিযানে ধরা হচ্ছে।
হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তাদের মতে, সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার ও গণবহিষ্কারই অবৈধ সীমান্ত অতিক্রম হ্রাসের প্রধান কারণ।