ট্রাম্পের আল্টিমেটাম অগ্রাহ্য করে কিয়েভে রাশিয়ার হামলা, নিহত ১৫

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতির আহ্বান ও নিষেধাজ্ঞার হুমকি উপেক্ষা করে ইউক্রেইনের রাজধানী কিয়েভে ব্যাপক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) ভোররাতে চালানো এই হামলায় এখন পর্যন্ত ১৫ জন নিহত এবং অন্তত ১৪৫ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। খবর আনাদোলুর।
ইউক্রেইনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের বরাতে জানানো হয়েছে, হামলায় নিহতদের মধ্যে রয়েছে ছয় বছর বয়সী এক শিশু ও তার মা। আহতদের মধ্যে ১৪ জন শিশু। কিয়েভের আবাসিক ভবন লক্ষ্য করে চালানো হামলায় একটি অ্যাপার্টমেন্ট ব্লক পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়েছে, ধসে পড়েছে মূল প্রবেশপথ। উদ্ধারকারী দল এখনও সেখানে ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়াদের উদ্ধারে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
কিয়েভের মেয়র একে রাজধানীতে এ পর্যন্ত হওয়া সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি জানান, এক রাতেই রাশিয়া কিয়েভে ৩০৯টি ড্রোন এবং ৮টি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে, যা ২০২২ সালে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে একক হামলায় সর্বোচ্চ সংখ্যক। শহরের ২০টিরও বেশি এলাকায় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
উল্লেখ্য, চলতি মাসের শুরুর দিকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ৮ আগস্টের মধ্যে যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছাতে সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলেন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সমঝোতা না হলে রাশিয়ার ওপর আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দেন তিনি।
তবে এ হুমকিকে আমলে না নিয়ে রাশিয়া একপ্রকার দেখিয়ে দিল— তারা তাদের সামরিক কৌশল থেকে সরছে না। ইউক্রেইনের বিমান প্রতিরক্ষা বাহিনী দাবি করেছে, তারা বেশ কয়েকটি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করতে সক্ষম হয়েছে, তবে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো যায়নি।
এই হামলা এমন সময় হলো, যখন রাশিয়া যুদ্ধক্ষেত্রে নতুন করে অগ্রগতির দাবি করছে। রুশ সেনাবাহিনী জানিয়েছে, পূর্বাঞ্চলীয় দোনেৎস্কের কৌশলগত শহর চাসিভ ইয়ার এখন তাদের নিয়ন্ত্রণে। তবে ইউক্রেইন সেনাবাহিনী এই দাবিকে প্রত্যাখ্যান করেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের চাপ এবং নিষেধাজ্ঞার হুমকি যে রাশিয়ার ওপর বাস্তবে কতটা প্রভাব ফেলছে, তা নিয়ে এখনই প্রশ্ন উঠছে। পরিস্থিতি ইঙ্গিত দিচ্ছে— যুদ্ধ থামার বদলে আরও ভয়াবহ মোড় নিচ্ছে।