ট্রাম্পের কাতার সফর : যুক্তরাষ্ট্রের বোয়িং থেকে ১৬০টি বিমান কেনার চুক্তি

যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক বিমান নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িং থেকে ১৬০টি বিমান কেনার একটি বড় ধরনের চুক্তি স্বাক্ষর করেছে কাতার।
বুধবার (১৪ মে) এ চুক্তি স্বাক্ষর করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল-থানি। চুক্তির এ বিমানগুলো কাতার এয়ারওয়েজের জন্য কেনা হবে।
ট্রাম্প জানিয়েছেন, চুক্তির মোট মূল্য ২০০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি।
এর মধ্যে ১৬০টি বিমান রয়েছে। তিনি বলেন, এটি ২০০ বিলিয়নেরও বেশি, কিন্তু বিমান হিসেবে ১৬০টি, দারুণ ব্যাপার।
এরপর তিনি বোয়িংয়ের প্রধান নির্বাহী (সিইও) কেলি অর্টবার্গের দিকে তাকিয়ে বলেন, এটা তো রেকর্ড, কেলি। তাহলে বোয়িংকে অভিনন্দন।
বোয়িংয়ের এ চুক্তিটি এমন এক সময়ে হয়েছে, যখন প্রতিষ্ঠানটি নানা সংকট পাড়ি দিচ্ছে। ২০২৪ সালের শুরুতে আলাস্কা এয়ারলাইনসের একটি ৭৩৭ ম্যাক্স বিমানের দরজা খুলে গিয়েছিল। এরপর থেকে বোয়িং বিমানের অর্ডার কার্যত থেমে গিয়েছিল। বছরের শেষ দিকে কিছুটা ঘুরে দাঁড়ালেও ২০২৪ সালে বোয়িংয়ের মোট গ্রস অর্ডার ছিল মাত্র ৫৬৯টি।
যা ২০২৩ সালের তুলনায় ৬০ শতাংশ কম।
এ ছাড়াও গত শরতে প্রায় ৩৩ হাজার শ্রমিকের ধর্মঘটের মুখে পড়েছিল বোয়িং। গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বরের শুরু পর্যন্ত উৎপাদন বন্ধ ছিল। এর ফলে ২০২৪ সালে প্রতিষ্ঠানটি মাত্র ৩৪৮টি বিমান সরবরাহ করতে পেরেছে। যা ২০২৩ সালের তুলনায় তা ৩৪ শতাংশ কম।
এদিকে সম্প্রতি ট্রাম্পের শুল্ক নীতিও বোয়িংয়ের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে। বিদেশি প্রতিশোধমূলক শুল্কের হুমকি থাকায় যুক্তরাষ্ট্রের সর্ববৃহৎ রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান বোয়িং-এর বিমানে দাম কয়েক মিলিয়ন ডলার পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে। একই সঙ্গে ট্রাম্পের তথাকথিত ‘লিবারেশন ডে’ শুল্কের কারণে বিমানের যন্ত্রাংশ আমদানি ব্যয়ও বেড়ে যেতে পারে, যা বিমান নির্মাণকে আরো ব্যয়বহুল করে তুলবে।
এমন সংকটকালে ট্রাম্প প্রশাসন বাণিজ্য আলোচনার অংশ হিসেবে বোয়িংয়ের জন্য বড় অর্ডার সংগ্রহের চেষ্টা করছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গত সপ্তাহে হোয়াইট হাউসে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিক জানান, যুক্তরাজ্যের একটি এয়ারলাইন প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলারের বোয়িং বিমান কেনার চুক্তি করেছে।
উল্লেখযোগ্য ঘটনা হলো, আজ বুধবার চুক্তির ঘোষণার খবর ছড়িয়ে পড়তেই বোয়িংয়ের শেয়ারের দাম ১ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়ে গেছে। তবে বিনিয়োগকারীরা যেমন আশাবাদী, তেমনি সচেতনও। কারণ এমন ঘোষণা দেওয়া অনেক অর্ডারই পরে বাতিল হয়ে যায়।