ট্রাম্পের পারফরম্যান্সে হতাশ রিপাবলিকানরা, নির্বাচনী বিতর্কের পর একই মঞ্চে ট্রাম্প-কমলা-বাইডেন
আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে ঘিরে দ্বন্দ্ব বাড়ছে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিস, রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মধ্যে।
গত মঙ্গলবারও টিভি বিতর্কে তীব্র বিত-ায় জড়িয়েছিলেন ট্রাম্প ও কমলা। তবে সবকিছু ছাপিয়ে এবার একই মঞ্চে দেখা গেল মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস ও সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। খবর সিএনএনের।
খবরে বলা হয়েছে, ভয়াবহ ৯/১১ হামলার ২৩ বছর পূর্তিতে স্থানীয় সময় বুধবার আমেরিকার নিউইয়র্কের জিরো গ্রাউন্ডে যোগ দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দুই প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প ও কমলা হ্যারিস। নির্বাচনী বিতর্কের একদিন পর বুধবার আবারও হাত মেলাতে দেখা যায় দুইজনকে।
ট্রাম্প-কমলার সঙ্গে জিরো গ্রাউন্ডে সেখানে উপস্থিত ছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও সিনেট নেতা চাক শুমার। অন্যদিকে ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা গেছেন তার রানিং-মেট জেডি ভ্যান্সকে।
বুধবার ঘণ্টা বাজিয়ে শুরু হয় ৯/১১’র বর্ষপূর্তির আনুষ্ঠানিকতা। বাজানো হয় জাতীয় সংগীত। রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি হামলায় নিহতদের স্মরণ করেন স্বজনরাও।
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর, নিউইয়র্কের টুইন টাওয়ার, পেন্টাগন ও পেনসিলভানিয়ায় ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা হয়। এতে প্রাণ হারায় অন্তত ৩ হাজার মানুষ।
ট্রাম্পের পারফরম্যান্সে হতাশ রিপাবলিকান শিবির : ফিলাডেলফিয়ার নির্বাচনী বিতর্কে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পারফরম্যান্সে হতাশা দেখা দিয়েছে রিপাবলিকান পার্টির সদস্য, দাতা ও উপদেষ্টাদের মধ্যে। মঙ্গলবার ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের সঙ্গে প্রথম সরাসরি বিতর্কে ট্রাম্প তালগোল পাকিয়ে ফেলেছেন বলে তাদের অভিমত।
টিভি বিতর্কে ট্রাম্পের পারফরম্যান্সকে ‘দুর্বল’ উল্লেখ করে রিপাবলিকান সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম বলেছেন, ‘একটা সুযোগ হাতছাড়া হয়ে গেল। তিনি লক্ষ্যে স্থির থাকতে ব্যর্থ হয়েছেন। ফলে মঞ্চে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ হারিয়েছেন।’ ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
৫৯ বছর বয়সী কমলা হ্যারিস তার সুচিন্তিত বক্তব্যে প্রায় পুরোটা সময় ৭৮ বছর বয়সী ট্রাম্পকে কোণঠাসা করে রেখেছিলেন। সাবেক প্রেসিডেন্টের আইন লঙ্ঘনমূলক বিভিন্ন কাজ ও ওভাল অফিসে বসার যোগ্যতা নিয়ে ক্রমাগত প্রশ্ন করে ট্রাম্পকে রক্ষণাত্মক অবস্থানে নিয়ে যান হ্যারিস।
ট্রাম্পের সাবেক মিত্র ও বর্তমান সমালোচক ক্রিস ক্রিস্টি বলেছেন, ‘হ্যারিসের প্রস্তুতি ছিল চমৎকার। কিন্তু ট্রাম্পের এখানে ঘাটতি দেখা গেছে। বিতর্ক প্রস্তুতিতে সহায়তাকারী ব্যক্তি যেই হোক, সে চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে। তাকে বরখাস্ত করা উচিত।’
গত ২০১৬ সালের নির্বাচনী বিতর্কে ট্রাম্পের প্রস্তুতিতে সহায়তা করেছিলেন ক্রিস্টি। বিতর্ক দলে কোনো রদবদল হবে কিনা, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে অবশ্য কোনো মন্তব্য করেনি ট্রাম্প শিবির।
এদিকে বুধবার ‘ফক্স অ্যান্ড ফ্রেন্ডস’ অনুষ্ঠানে ট্রাম্প বলেছেন, ‘এটা আমার সেরা বিতর্কগুলোর একটা ছিল বলেই মনে করছি, বোধহয় এখন পর্যন্ত এটাই শ্রেষ্ঠ।’ ডেমোক্র্যাটদের আহ্বানে আরেক দফা বিতর্কের বিষয়ে আগ্রহী কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার দিকে আগ্রহ একটু কমই। কারণ আমার সন্ধ্যাটা তো অসাধারণ গেছে।’
এবিসি নিউজ আয়োজিত ফিলাডেলফিয়া বিতর্কের টেলিভিশন দর্শক ছিল প্রায় ৬ কোটি ৭১ লাখ। অনলাইন দর্শকের সংখ্যা নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি।
এদিকে বিতর্কে মিথ্যাচারের অভিযোগে পরস্পরকে দুষছেন কমলা ও ট্রাম্প। নাম প্রকাশ না করার শর্তে রিপাবলিকান পার্টির ছয় জন দাতা ও ট্রাম্পের তিন উপদেষ্টা বলেছেন, বিতর্কে হ্যারিস জিতেছেন। আর ট্রাম্প তার বক্তব্যে স্থির থাকতে ব্যর্থ হয়েছেন।
দ্বিতীয় দফা বিতর্কে ট্রাম্পের অংশ নেওয়া উচিত হবে কিনা, সে ব্যাপারে দুই দাতা অনিশ্চয়তায় আছেন। একজন বলেছেন, এটি আসলে নির্ভর করবে ট্রাম্পের প্রস্তুতিতে সহায়তাকারীদের আত্মবিশ্বাসের ওপর। অন্য দুই দাতা আবার মনে করছেন, রিপাবলিকান শিবিরে উদ্যম ফিরে পেতে আরেক দফা বিতর্ক প্রয়োজন।