ট্রাম্পের বহিষ্কার-হুমকিতে লক্ষাধিক বাংলাদেশিসহ ২০ লাখ অবৈধ অভিবাসী
‘যত গর্জে তত বর্ষে না’ প্রবাদের মতোই ইমিগ্রেশন ইস্যুতে প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের হুংকারও অকার্যকরই থাকবে। এমন কঠিন একটি সত্য প্রকাশিত হয়েছে ‘ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এ্যানফোর্সমেন্ট’ তথা আইসের নথি থেকে। উল্লেখ্য, এই সংস্থাটি হচ্ছে কাগজপত্রহীন তথা অবৈধ অভিবাসীদের ধর-পাকড়ের নির্দেশ বাস্তবায়নকারি সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ। যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের থেকে ৬ ডিসেম্বর প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কারের নির্দেশ জারি হওয়া অভিবাসীর সংখ্যা ১৪ লাখের মত। অর্থাৎ এরা রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করেছিলেন কিন্তু তা মঞ্জুর হয়নি। সর্বোচ্চ পর্যায়ে চেষ্টা করেও তা ওয়ার্ক পারমিট পাননি।
ফলে তাদেরকে অবিলম্বে যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগের নির্দেশ জারি হওয়া সত্বেও তারা ঠিকানা পরিবর্তন করে বসবাস করছেন। এরা হলেন নথিভুক্ত অবৈধ অভিবাসী। এর বাইরে আরো আছে ১০ লাখের মত, যারা বাইডেন-কমলার দায়িত্ব গ্রহণের পর দক্ষিণের সীমান্ত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছেন কিন্তু স্থায়ীভাবে বসবাসের আবেদন করেননি। সাথে রয়েছে গুরুতর অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত আরো লক্ষাধিক অভিবাসী। এরাও ট্রাম্পের ঢালাওভাবে বহিষ্কারের টার্গেট। এবং এই পরিকল্পনার কথা নির্বাচনী সমাবেশে বহুবার করেছেন ডনাল্ড ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা এবং নাগরিকদের স্বার্থে অবৈধ অভিবাসীদের গ্রেফতার ও তাড়ানোর সংকল্পে ইতিমধ্যেই এই সেক্টরে এমন সব ব্যক্তিগণকে নিয়োগের ঘোষণা দিয়েছেন যারা অভিবাসন-বিরোধী হিসেবে ইতিপূর্বে প্রমাণ দিয়েছেন। কিন্তু বিদ্যমান আইনী জটিলতা ট্রাম্পের বহিষ্কারাদেশকে বাধাগ্রস্ত করবে বলে আইসের সাবেক কর্মকর্তারা মনে করছেন। এছাড়া, কংগ্রেসের উভয় কক্ষের অনুমোদন পেতেও বেগ পেতে হবে ট্রাম্পকে।
এছাড়াও রয়েছে অর্থনৈতিক সংকটের ব্যাপার। কারণ, বিরাটসংখ্যক অবৈধকে ধর-পাকড়ের জন্যে জনবলের অভাব রয়েছে। আর এ বিষয়টি কাটিয়ে উঠতে ২০ জানুয়ারি ক্ষমতা গ্রহণের পরই ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠরা কংগ্রেসে অর্থ বরাদ্দের একটি বিল উঠাবেন বলে শোনা যাচ্ছে। উল্লেখ্য, ট্রাম্পের প্রথম টার্মে অর্থাৎ ২০১৭ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত প্রতিরক্ষা খাত থেকে ১০ বিলিয়ন ডলার কর্তন করে সীমান্তে দেয়াল নির্মাণ করেন। সেই অসমাপ্ত দেয়াল নির্মাণের কাজ সমাপ্ত করবেন মেক্সিকো থেকে অবাধে যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকে পড়ার পথ রুদ্ধ করতে। ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠজনেরা উল্লেখ করেছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন থামাতে পারলে যুক্তরাষ্ট্রের বিপুল অর্থ সাশ্রয় হবে। তাই সীমান্তে দেয়াল নির্মাণই শুধু নয় অবৈধ অভিবাসীদের ধর-পাকড়ের তহবিল নিয়ে বিদ্যমান সংকটও থাকবে না। প্রসঙ্গত: উল্লেখ্য যে, অবৈধদের গ্রেফতার ও বহিষ্কারের ট্রাম্পের একটি আদেশকে থামিয়ে দেন ২০২২ সালে প্রেসিডেন্ট বাইডেন। সেটি এখনো বহাল রয়েছে।
ডনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসন-বিরোধী মনোভাবে প্রবাসীরাও সন্ত্রস্ত। বিশেষ করে নিউইয়র্ক সিটির মেয়র এরিক এডামসও ট্রাম্পের বহিষ্কার কর্মসূচিতে সহায়তার ঘোষণা দেয়ার পরই কম্যুনিটিতে আতংক ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। এই সিটি-সহ সারা আমেরিকায় ঢালাওভাবে গ্রেফতার ও বহিষ্কারের টার্গেট করা অবৈধ অভিবাসীর মধ্যে লাখখানেক বাংলাদেশিও আছেন। তারা ছুটছেন এটর্নির অফিসে। পরামর্শ নিচ্ছেন আইনী প্রক্রিয়ায় নিজকে নিরাপদ রাখতে। এ প্রসঙ্গে এটর্নি অশোক কর্মকার, এটর্নি মঈন চৌধুরী এবং এটর্নি জান্নাতুল রুমা পৃথকভাবে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে আবারো জানিয়েছেন যে, পেন্ডিং আবেদনের সর্বশেষ অবস্থা সংশ্লিষ্টরা জেনে নিতে পারেন এবং নথিভুক্ত আবেদনের কপি অথবা কোন আদেশ থাকলে তার কপিও সাথে রাখতে হবে। আর যারা বহিষ্কারের আদেশ পালন করেননি, তারা নতুন কোন প্রোগ্রামে আবেদন করেও ট্রাম্পের অভিযান থেকে নিজেকে মুক্ত রাখার উপায় বের করতে পারবেন। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টরা যেন অভিজ্ঞ এটর্নীর পরামর্শ নেন।
Hi there, I discovered your site via Google while looking for a comparable matter, your web site came up, it looks great. I’ve bookmarked it in my google bookmarks.