ট্রাম্পের সঙ্গে উত্তেজনা, ৭ বছরের মধ্যে প্রথমবার চীন যাচ্ছেন মোদি

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সাত বছরেরও বেশি সময় পর প্রথমবারের মতো চীন সফর করবেন। বুধবার (৬ আগস্ট) একটি সরকারি সূত্র রয়টার্সকে এ কথা জানিয়েছেন। এটি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উত্তেজনা বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে বেইজিংয়ের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার দিকে বড় পদক্ষেপের ইঙ্গিত দেয়।
বিষয়টি সম্পর্কে সরাসরি অবগত একটি সরকারি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, মোদি ৩১ আগস্ট থেকে শুরু হতে যাওয়া বহুপাক্ষিক সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে চীনে যাবেন। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাৎক্ষণিকভাবে রয়টার্সের মন্তব্যের অনুরোধের জবাব দেয়নি।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারত থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর এশিয়ান মিত্রদের মধ্যে সর্বোচ্চ শুল্ক আরোপের পর মোদির এই সফর আসছে। সেই সঙ্গে নয়াদিল্লিকে রাশিয়ান তেল কেনার জন্য অনির্দিষ্ট আরও শাস্তির হুমকি দেওয়া হয়েছে।
অক্টোবরে রাশিয়ায় অনুষ্ঠিত ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে মোদি এবং চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং আলোচনা করেছিলেন, যার ফলে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়। এশিয়ার এই বিশাল প্রতিবেশীরা এখন ধীরে ধীরে দুই দেশের মধ্যে ব্যবসায়িক সম্পর্ক এবং ভ্রমণকে বাধাগ্রস্ত করে – এমন উত্তেজনাও প্রশমিত করছে।
এদিকে, ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল একটি নির্ধারিত সফরে রাশিয়ায় রয়েছেন। রাশিয়ান অপরিশোধিত তেল কেনা বন্ধ করার জন্য ট্রাম্পের ভারতের ওপর চাপের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি মস্কোর তেল কেনার বিষয়ে সেখানে আলোচনা করবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
দোভাল রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের প্রতিরক্ষা সহযোগিতার বিষয়েও আলোচনা করতে পারেন। যার মধ্যে রয়েছে মস্কোর ‘S400’ বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ‘স্থগিত থাকা’ চালান দ্রুত পৌঁছে দেওয়া এবং ভ্লাদিমির পুতিনের সম্ভাব্য ভারত সফর।
দোভালের চলমান সফরের পর আগামী সপ্তাহগুলোতে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করও মস্কয় যাবেন।
মার্কিন ও ভারতীয় কর্মকর্তারা রয়টার্সকে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যে ‘রাজনৈতিক ভুল বিচার, মিস করা সংকেত এবং তিক্ততার মিশ্রণে’ বাণিজ্য চুক্তি আলোচনা ভেস্তে গেছে। যেখানে তাদের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের মূল্য ১৯০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি।
অভ্যন্তরীণ সরকারের মূল্যায়নের বরাত দিয়ে চারটি পৃথক সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, ট্রাম্পের কঠোর পদক্ষেপের ফলে ভারত প্রায় ৬৪ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানোর ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা হারাতে পারে বলে ধারণা করছে। এই পণ্যগুলো তাদের মোট রপ্তানির ৮০%।