USA

ট্রাম্পের হুমকি ভাবিয়ে তুলছে

আজকের দিন নিয়ে আর মাত্র ১৮ দিন বাকি। এরপরই ৫ই নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। এবারের নির্বাচন তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে বলে আভাস দিচ্ছে বিভিন্ন জনমত জরিপ। বলা হচ্ছে, সামান্য ভোটের হেরফের হতে পারে। কিন্তু রিপাবলিকান দলের প্রার্থী সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প যেভাবে প্রতিপক্ষকে হুমকি দিচ্ছেন তাতে ভাবিয়ে তুলেছে সচেতন ব্যক্তিদের। বিশেষ করে ২০২১ সালের ৬ই জানুয়ারির কথা স্মরণে চলে আসছে। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে তিনি প্রকাশ্যে হুমকি দিচ্ছেন। তাদেরকে দেশের শত্রু হিসেবে আখ্যায়িত করছেন। বলছেন, যারা তার প্রেসিডেন্সির বিরোধিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীকে ব্যবস্থা নিতে হবে। এ নিয়ে অনলাইন নিউ ইয়র্ক টাইমসে দীর্ঘ একটি বিশ্লেষণ প্রকাশ হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আর তিন সপ্তাহেরও কম সময় বাকি থাকতেই ডনাল্ড ট্রাম্প তার নির্বাচনী প্রচারণাকে ভয়ঙ্কর এক রাজনৈতিক হুমকির দিকে ঠেলে দিচ্ছেন। বলছেন, তার সঙ্গে যারা একমত হবেন না তাদেরকে চূর্ণ-বিচূর্ণ (ক্র্যাশ) করে দিতে তিনি শক্তি ব্যবহার করবেন।

রোববার এক সাক্ষাৎকারে তিনি ডেমোক্রেটদেরকে  ভেতরকার শত্রু হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। বলেছেন, তারা নির্বাচনের দিনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে। তার অনুমান এটা মোকাবিলা করতে ন্যাশনাল গার্ডকে ব্যবহার করতে হবে।  একদিন পরে পেনসিলভ্যানিয়াতে জনতার উদ্দেশ্যে সমাপনী বক্তব্য দেন। তাতেও রাজনৈতিক বিরোধীদেরকে কঠোর বার্তা দিয়েছেন। ট্রাম্প বলেছেন, তারা (বিরোধী ডেমোক্রেট) খুব খারাপ। খোলামেলা বলছি তারা অশুভ। তারা শয়তান। তারা যা করেছে তা হলো অস্ত্র দিয়েছে। আমাদের নির্বাচনে অস্ত্রের ব্যবহার করেছে। তারা এমন সব কাজ করেছে যা সম্ভব এমনটা কেউ ভাবতেও পারে না। মঙ্গলবার তাকে শিকাগোতে একটি অর্থনৈতিক ফোরামে একজন সাংবাদিক প্রশ্ন করেন। তার জবাবে ট্রাম্প আরও একবার শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর অস্বীকার করেন। 
ওদিকে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাটলগ্রাউন্ডগুলোতে আগাম ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। হোয়াইট হাউসের দৌড় এখন নির্বাচনের দিনের কাছাকাছি। তখনো ট্রাম্প তার সেই পুরনো ধারায় চলছেন। তিনি ২০২০ সালের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের ফল মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন। আশ্রয় নিয়েছিলেন বড় মাত্রায় ভোট জালিয়াতি তত্ত্বের। অভিযোগ করেছিলেন যে, বিচার ব্যবস্থাকে তার বিরুদ্ধে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। পক্ষান্তরে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান শক্তিধর কর্তৃত্ববাদী হওয়া সত্ত্বেও তাদের প্রশংসা করেছেন। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্সিয়াল নমিনি বা প্রার্থী এর আগে কখনো প্রকাশ্যে তার বিরোধিতাকারীদের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনী ব্যবহারের হুমকি দেননি। ট্রাম্প রাজনৈতিক প্রতিশোধের হুমকি বাড়াতে গিয়ে মার্কিন ভোটারদেরকে খুব ভিন্ন পছন্দের সুযোগ দিচ্ছেন, যা খুবই কম গণতান্ত্রিক। সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার অধীনে হোয়াইট হাউসের সহযোগী ছিলেন ইয়ান বাসিন। তিনি বর্তমানে প্রোটেক্ট ডেমোক্রেসি নামের একটি এডভোকেসি গ্রুপের নেতৃত্বে আছেন। তিনি বলেন, কোনো প্রার্থীকে জনগণ সমর্থন না করার কারণে তাদের বিরুদ্ধে যথার্থ প্রতিশোধ নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে কোনো প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন- এমন নজির নেই। 

ডনাল্ড ট্রাম্প এবং কমালা হ্যারিস যখন তাদের ক্লোজিং বক্তব্যের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন তখন তাদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ দিতে হবে যুক্তরাষ্ট্রের ভোটারদের শীর্ষ অগ্রাধিকারগুলোতে। তার মধ্যে আছে- অর্থনীতি, গর্ভপাতের অধিকার, গৃহায়ন খরচ, ইউক্রেন এবং মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের যুক্ত থাকার বিষয়। দুই প্রার্থীর মধ্যে এখনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে টাইট। পেনসিলভ্যানিয়ার ইরি এলাকায় র‌্যালিতে কয়েক হাজার সমর্থকের উদ্দেশ্যে কমালা হ্যারিস তার প্রতিপক্ষ ট্রাম্পকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, তিনি যে বা যারা তার বিরুদ্ধে ভোট দেবেন, তাদেরকে তিনি শত্রু হিসেবে মনে করেন। তাদের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীকে ব্যবহারের কথা বলছেন তিনি। কমালার সহযোগীরা বিশ্বাস করেন, ট্রাম্পের বক্তব্যের সঙ্গে একমত নন ভোটাররা। 

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button