USA

ট্রাম্প–কমলার বিতর্কের প্রক্রিয়া নিয়ে মতপার্থক্য

টেলিভিশন বিতর্ক নিয়ে কমলা হ্যারিস ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রচার শিবিরের মধ্যে মতপার্থক্য দেখা দিয়েছে। এতে ডোনাল্ড ট্রাম্প আগামী মাসে কমলার সঙ্গে বিতর্কে অংশ নেবেন না বলে হুমকি দিয়েছেন। বিতর্কের সময় মাইক্রোফোন বন্ধ রাখা নিয়ে এ দ্বিমত সৃষ্টি হয়েছে। বিতর্ক চলাকালে এক প্রার্থীর কথা বলার সময় আরেক প্রার্থীর মাইক্রোফোন বন্ধ রাখা হবে কি না, তা নিয়ে তর্কাতর্কি করছে ট্রাম্প ও কমলার প্রচার শিবির।

ডেমোক্রেটিক পার্টি থেকে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কমলা হ্যারিসের প্রচার শিবির বলেছে, বিতর্ক চলার পুরোটা সময় দুই প্রার্থীর মাইক্রোফোনই চালু থাকবে বলে চাওয়া তাদের। কিন্তু রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প শিবির চাইছে, ১০ সেপ্টেম্বরের বিতর্ক একই নিয়মে হোক, যেমনটি প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রার্থী থাকার সময় ছিল। ওই সময় মাইক্রোফোন বন্ধ রাখার নিয়ম নির্ধারিত হয়েছিল। ট্রাম্পের প্রচার শিবিরের পক্ষ থেকে বিতর্ক আয়োজক এবিসি নেটওয়ার্কের বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ করেছে।

গত জুনে মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএনে বাইডেনের সঙ্গে ট্রাম্পের প্রথম দফা বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বিতর্কে ভালো করতে না পারায় বাইডেনের ওপর প্রেসিডেন্ট নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার চাপ বাড়ে। বাইডেন নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়ানোয় ডেমোক্রেটিক পার্টি থেকে ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলাকে প্রার্থী করা হয়েছে। প্রথমে রাজি না থাকলেও পরে এবিসি নিউজে ১০ সেপ্টেম্বর বিতর্কের জন্য সম্মত হন ট্রাম্প।

বাইডেন শিবির বিতর্কের যে নিয়ম নির্ধারণ করেছিল, তাতে বিতর্ক চলাকালে যখন একজন প্রার্থী কথা বলবেন, তখন আরকে প্রার্থীর মাইক্রোফোনটি বন্ধ থাকবে। ট্রাম্প শিবির এ নিয়মে রাজি হয়েছিল। কিন্তু এখন ট্রাম্পের সঙ্গে কমলার প্রথম মুখোমুখি বিতর্কের দুই সপ্তাহ আগে এসে ডেমোক্র্যাট শিবির চাইছে, মাইক্রোফোন পুরো বিতর্কের সময়টাতেই চালু থাক। এতে ট্রাম্প মিথ্যা তথ্য দিলে কমলা তার জবাব দিতে পারবেন।

ডেমোক্র্যাট শিবিরের দাবি, মাইক্রোফোন চালু থাকলে বিতর্কে চলাকালে একজন কথা বলার সময় অন্যজন তাতে হস্তক্ষেপ করতে পারবেন এবং মঞ্চে দুই প্রার্থীই একে অপরের পাল্টাপাল্টি মতামত দিতে পারবেন। তবে রিপাবলিকান শিবির বলছে, বাইডেনের সঙ্গে বিতর্কের সময় মাইক্রোফোন বন্ধ থাকাটা বেশ কাজে দিয়েছিল। কমলার শিবির বিতর্ক থেকে সরে যেতে নতুন উপায় বের করতে চাইছে।

গত রোববার এ নিয়ে ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, ‘আমি কমলার সঙ্গে কেন ওই মাধ্যমে বিতর্ক করব?’

কমলার মুখপাত্র ব্রায়ান ফ্যালন গত সোমবার বলেন, ‘বিতর্কের সময় মাইক চালু থাকলে পরস্পরের বক্তব্য অনেক সময় ধরা যাবে। ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস ট্রাম্পের ক্রমাগত মিথ্যা ও কথা বলার সময় বাধা দেওয়ার বিষয়টি মোকাবিলায় প্রস্তুত। মিউট বোতামের আড়ালে ট্রাম্পের লুকানো উচিত নয়।’

ট্রাম্পের প্রচার শিবিরের জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা জ্যাসন মিলার বলেন, সিএনএনে বিতর্কের নিয়মে তাঁরা রাজি হয়েছিলেন। এখন নতুন করে নিয়ম পরিবর্তন করা হলে তাতে তাঁরা সম্মতি দেবেন না।

এ বিষয়ে এবিসির পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। ট্রাম্পের পক্ষ থেকে ৪ সেপ্টেম্বর ফক্স নিউজে একটি বিতর্ক করতে চেয়েছিলেন ট্রাম্প। কমলার প্রচার শিবির তাতে রাজি হয়নি। অন্যদিকে রিপাবলিকান ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী সিনেট জে ডি ভ্যান্স ডেমোক্রেটিক পার্টির মিনেসোটার গভর্নর টিম ওয়াল্টজ ১ অক্টোবর সিবিএস নিউজে বিতর্কে অংশ নেবেন।

হ্যারিস ও ট্রাম্পের ব্যবধান বাড়ছে

রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের চেয়ে জাতীয় পর্যায়ে জনপ্রিয়তার ব্যবধান বাড়িয়ে চলেছেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিস। নিউইয়র্ক টাইমস-এর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী ট্র্যাকারে দেখানো তিনটি নতুন নির্বাচনী জরিপে এ ফল দেখা গেছে। ডেমোক্র্যাট দলের জাতীয় সম্মেলনের আগে ও পরে এ তিনটি জরিপ করেছে জরিপকারী প্রতিষ্ঠান অ্যাকটিভোট, অ্যাঙ্গাস রেইড গ্লোবাল ও ফেয়ারলেহ ডিকিনসন বিশ্ববিদ্যালয়।

অ্যাকটিভোটের করা ১৫ থেকে ২৩ আগস্টের জরিপে পাঁচ পয়েন্টে এগিয়ে কমলা। অ্যাঙ্গাস রেইড গ্লোবালের করা ১৯ থেকে ২৩ তারিখের জরিপেও পাঁচ পয়েন্টে এগিয়ে কমলা। ফেয়ারলেহ ডিকিনসন বিশ্ববিদ্যালয় ১৬ থেকে ২০ আগস্ট যে জরিপ করেছে, তাতে সাত পয়েন্টে ট্রাম্পের চেয়ে এগিয়ে তিনি।

পাঁচটি দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যে নিউইয়র্ক টাইমস-এর জরিপে তিনটিতে এগিয়ে কমলা। একই সঙ্গে জাতীয় গড়েও তিনি এগিয়ে। জাতীয় গড়ে কমলা ট্রাম্পের চেয়ে তিন পয়েন্টে এগিয়ে। কমলার জনপ্রিয়তা ৪৯ শতাংশ ও ট্রাম্পের ৪৬ শতাংশ।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button