Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
USA

ট্রাম্প কি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতি বদলের ইঙ্গিত দিচ্ছেন

তিন বছর ধরে চলমান ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে জোর তৎপরতা শুরু করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই তৎপরতায় ইউক্রেনকে একপ্রকার পাশে ঠেলে দিয়েছেন তিনি। যুদ্ধ নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনা করলেও পাত্তা দিচ্ছেন না কিয়েভকে। এমনকি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে আক্রমণ করে কথা বলতেও ছাড়েননি ট্রাম্প।

জেলেনস্কিকে নিয়ে ট্রাম্পের সাম্প্রতিক মন্তব্যগুলো মোটেও ইতিবাচক নয়। যেমন নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে তিনি বলেছেন, ইউক্রেনে নির্বাচন ছাড়াই ক্ষমতা ধরে রাখা একজন ‘স্বৈরশাসক’ জেলেনস্কি। তাঁর মতে, যুক্তরাষ্ট্র এমন একটি যুদ্ধে শত শত কোটি ডলার খরচ করেছে, যে যুদ্ধে ইউক্রেনের বিজয় সম্ভব নয়।  

জেলেনস্কিকে নিয়ে ট্রাম্পের এই আক্রমণাত্মক মন্তব্য বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়। আগে থেকেই তিনি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে সন্দেহের চোখে দেখেন। তাঁর সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। এমনকি সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে নিয়ে তদন্ত শুরু করার জন্য জেলেনস্কিকে একবার চাপ দিয়েছিলেন ট্রাম্প। এর জেরে প্রথমবারের মতো অভিশংসনের মুখে পড়তে হয়েছিল তাঁকে।

বুধবার ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের মিয়ামিতেও জেলেনস্কির সমালোচনা করেছেন ট্রাম্প। ইউক্রেন যুদ্ধে বাইডেন প্রশাসনের বিপুল সহায়তার দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘আপনি (জেলেনস্কি) যদি আরেক বছর (বাইডেন) প্রশাসনের অধীন থাকতেন, তাহলে এত দিন আপনাকে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের মধ্যে থাকতে হতো। আর এখন এমন কিছু ঘটতে যাচ্ছে না।’  

এদিকে ট্রাম্পকে নিয়ে পাল্টা মন্তব্যও করেছেন জেলেনস্কি। ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত রাশিয়া–যুক্তরাষ্ট্র বৈঠকে কিয়েভকে যুক্ত না করার প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, ট্রাম্প ‘অপতথ্যের জগতে বসবাস করছেন।’ যুক্তরাষ্ট্রের একজন কর্মকর্তা সিএনএনকে বলেছেন, বুধবারের আগে থেকেই ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে তাঁদের হতাশা বাড়ছিল, তবে জেলেনস্কির মন্তব্যের পর তা আরও বেড়েছে।

ইউক্রেনে প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প

ইউক্রেনে প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প

হোয়াইট হাউসের আরেক কর্মকর্তা বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে হতাশা থেকে জেলেনস্কিকে নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করেছেন ট্রাম্প। নৃশংস এই যুদ্ধ থামানো নিয়ে একটি জোরদার ও বৈধ অনুভূতি রয়েছে। আর জেলেনস্কির জনসমক্ষে এসব মন্তব্যের কারণে যুদ্ধ বন্ধের পথটি আরও ছোট হয়ে আসছে।

তবে ট্রাম্পের এই হতাশা থেকে এমন কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি যে, ইউরোপে যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের মিত্র এবং ক্রেমলিনের প্রতি মার্কিন পররাষ্ট্রনীতিতে ব্যাপক হারে বদল আসবে। ট্রাম্পের অনেক মিত্র বলেছেন, জেলেনস্কির নেতিবাচক মন্তব্যের কারণে ট্রাম্প যে ক্ষুব্ধ হবেন, তা আগে থেকেই তাঁর বোঝা উচিত ছিল।

সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইলকে ট্রাম্পের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স বলেন, ‘ট্রাম্পকে চেনেন এমন সবাই এটা বলবেন যে জেলেনস্কি গণমাধ্যমে নেতিবাচক কথা বলে ট্রাম্পের মন বদলাবেন—এই পরিকল্পনা বর্তমান মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য একটি খারাপ কৌশল।’

ওয়াশিংটনে ট্রাম্পের দল রিপাবলিকান পার্টির মিত্রতের ভাষ্যমতে, মার্কিন প্রেসিডেন্টের মাথায় হয়তো বড় কোনো পরিকল্পনা আছে।

জেলেনস্কিকে নিয়ে ট্রাম্পের মন্তব্যের বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তারা বলন, ট্রাম্পের প্রধান এমনকি একমাত্র লক্ষ্য হলো ইউক্রেনে তিন বছর ধরে চলা এই যুদ্ধ বন্ধ  করা। তিনি বিশ্বাস করেন, এই যুদ্ধ খুবই খারাপভাবে সামলেছে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রশাসন।

ইউক্রেন যুদ্ধ নিষ্পত্তির ওপর জোর দিয়ে এই কর্মকর্তারা বলেন, দীর্ঘদিন সংঘাতের পর এর একটি নিষ্পত্তির দরকার হয়ে পড়েছে। গত সপ্তাহেই এ নিয়ে ট্রাম্প বলেছেন, ‘লাখ লাখ মানুষ মারা যাচ্ছে। এটা বন্ধ করার চেয়ে অন্য কিছুকে আমি অত গুরুত্ব দিই না।’

তবে জেলেনস্কিকে কথার মাধ্যমকে আক্রমণ করে এবং ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে নিজেকে রাশিয়ার সঙ্গে আরও জড়িয়ে সেই লক্ষ্য তিনি কীভাবে অর্জন করবেন, তা এখনো পরিষ্কার নয়। ওয়াশিংটনে ট্রাম্পের দল রিপাবলিকান পার্টির মিত্রদের ভাষ্যমতে, মার্কিন প্রেসিডেন্টের মাথায় হয়তো বড় কোনো পরিকল্পনা আছে।

২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ চলছে

২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ চলছে

যেমন নর্থ ডাকোটা অঙ্গরাজ্যে রিপাবলিকান দলের সিনেটর কেভিন ক্রামার বলেন, ট্রাম্প সব সময় কোনো একটা লক্ষ্য নিয়ে কাজ করেন। তাঁর মনে হয়, এবার জেলেনস্কিকে নিয়ে মন্তব্যের মধ্য দিয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লামিদির পুতিনের সঙ্গে একটি সমঝোতার লক্ষ্যে কাজ করছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

তবে যুদ্ধ থামাতে রাশিয়ার সঙ্গে যেকোনো সমঝোতায় জেলেনস্কিকে প্রয়োজন পড়বে ট্রাম্পের। আর এই সংঘাতে মার্কিন সেনাদের না জড়ানোর বিষয়টিতে যদি তিনি গুরুত্ব দেন, তাহলে ইউক্রেনে শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানোর জন্য ইউরোপীয় মিত্রদের প্রয়োজন পড়বে তাঁর। এই শান্তিরক্ষী পাঠানোর জন্য কয়েকটি দেশ এরই মধ্যে আগ্রহ দেখিয়েছে।

ট্রাম্পের কয়েকজন উপদেষ্টা ও মিত্র আবার ট্রাম্পের আরেকটি পরিকল্পনার কথা তুলেছেন। সম্প্রতি ফ্লোরিডায় ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলেছেন—এমন একজন ব্যক্তি বলেছেন, ইউক্রন নিয়ে ট্রাম্পের তীব্র সমালোচনার পেছনে একটি কারণ হলো, কিয়েভকে রক্ষায় আরও বড় ভূমিকা রাখার জন্য ইউরোপের দেশগুলো মধ্যে ভয় সৃষ্টি করা।

ট্রাম্প আসলে ভঙ্গদশায় থাকা পশ্চিমা জোটকে এড়িয়ে এবং যুক্তরাষ্ট্রের চিরায়ত পররাষ্ট্রনীতির উল্টো পথে হেঁটে যে কোনো মূল্যে নিজেকে ক্রমে শান্তিরক্ষীর ভূমিকায় অবতীর্ণ করতে চাইছেন।

ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ ওই ব্যক্তি এ ক্ষেত্রে সমরাস্ত্রে ব্যয় বৃদ্ধির যে প্রতিশ্রুতি ডেনমার্ক দিয়েছে, সে বিষয়টি উল্লেখ করেন। বুধবার একই কথা বলেন ট্রাম্পের একজন উপদেষ্টা। সিএনএনকে তিনি বলেন, ‘ইউরোপের অন্য দেশগুলো যদি ডেনমার্কের অর্ধেকও সাড়া দেয়, তাহলে তা হবে বড় একটি জয়।’

এরই মধ্যে চলতি সপ্তাহে একপ্রকার তাড়াহুড়া করে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে আলোচনায় বসেন ইউরোপের নেতারা। ওই আলোচনার আয়োজন করেছিলেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ। এই তাড়াহুড়া থেকে বোঝা যায়, ট্রাম্পের বক্তব্যগুলো তাঁরা খুবই গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছেন।

ফ্রান্সের আঞ্চলিক সংবাদপত্রগুলোকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মাখোঁ বলেন, ‘ইউরোপীয়দের জন্য অস্তিত্বের হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে রাশিয়া। অভাবনীয় কিছু ঘটতে পারে না—এমন কিছু ভাববেন না। সবচেয়ে খারাপ কিছুও ঘটতে পারে।’

একই সঙ্গে ট্রাম্পের ওপর থেকে একেবারে আশা ছাড়ছেন না মাঁখো। আগামী সপ্তাহে একটি বৈঠকের জন্য ওয়াশিংটনে যাবেন তিনি। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারেরও যুক্তরাষ্ট্র সফরের কথা রয়েছে। তিনি বলেন, ইউক্রেনে শান্তিরক্ষী হিসেবে কাজ করার জন্য সেনা সদস্যদের পাঠাতে আগ্রহী তিনি।

ট্রাম্প আসলে ভঙ্গদশায় থাকা পশ্চিমা জোটকে এড়িয়ে এবং যুক্তরাষ্ট্রের চিরায়ত পররাষ্ট্রনীতির উল্টো পথে হেঁটে যেকোনো মূল্যে নিজেকে ক্রম শান্তিরক্ষীর ভূমিকায় অবতীর্ণ করতে চাইছেন। বুধবার রাতে তিনি বলেন, ‘রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ বন্ধে আমরা সফলভাবে আলোচনা করছি। সবাই এটা স্বীকার করবেন যে শুধু ট্রাম্পই এটা করতে পারবেন।’

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacantoto4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d toto
slot toto
bacan4d
bacan4d
togel online
Toto Slot
saraslot88
Bacan4d Login
bacantoto
Bacan4d Login
bacan4d
bacan4drtp
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot maxwin
slot bacan4d
slot maxwin
bacan4d togel
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d login
bacantoto 4d
slot gacor
bacansport
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot77 gacor
JAVHD
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
gacor slot
slot gacor777
slot gacor bacan4d
bacan4d
bacansport
toto gacor
bacan4d
bacansports login
slot maxwin
slot dana
slot gacor
slot dana
slot gacor
bacansports
bacansport
bacansport
bacansport
bawan4d
bacansports
bacansport
slot gacor
judi bola
slot maxwin
slot maxwin
bacansport
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot demo
slot gacor
slot gacor
slot gacor
toto slot
slot gacor
demo slot gacor
slot maxwin
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot toto