USA

ট্রাম্প জিতলে কী হবে যুক্তরাষ্ট্রের? 

গোটা বিশ্ব মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছে। বিশ্বের জন্যই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মার্কিনীরা। রাত পোহালেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন।

দেশটির নির্বাচন ঘিরে তাকিয়ে রয়েছে সারা বিশ্বের মানুষ। নির্বাচনে জয়-পরাজয় নির্ধারন হবে সুইং সাতটি রাজ্যের ভোটারদের ওপর। বিশেষ করে পেনসিলভানিয়া, মিশিগান ও উইসকনসিন রাজ্যে গুলোর ভোটররা যে দলকে ভোট দেয় সে দলই জয়ী হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতিসহ মিত্র রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক এবং বিশ্ব ব্যবস্থা ও আন্তর্জাতিক রাজনীতির ক্ষেত্রে দেশটির এতদিন ধরে চলা দৃষ্টিভঙ্গি ও অবস্থানের জন্য কঠিন পরীক্ষা হিসেবে দেখা হচ্ছে আগামীকালের নির্বাচনকে।

প্রেসিডেন্ট পদে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে নেমেছেন দুই প্রার্থী ডেমোক্র্যাট দলীয় বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস ও রিপাবলিকান সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট এবারের নির্বাচন এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যখন সাম্প্রতিক কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে সংকটময় মুহূর্ত কাটাচ্ছে আন্তর্জাতিক রাজনীতি ও ভূ-রাজনীতি।

একদিকে ইউরোপের ইউক্রেন-রাশিয়া, ফিলিস্তিন ও লেবাননে ইতিহাসের নজিরবিহীন নির্মম ও রক্তাক্ত আগ্রাসন চালাচ্ছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তার নীতি ঘিরে ইতোমধ্যে উত্তপ্ত পুরো মধ্যপ্রাচ্য।

এছাড়া যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে ইরান-ইসরায়েল। অপরদিকে তাইওয়ানকে ঘিরে উত্তপ্ত দক্ষিণ চীন সাগর ও পূর্ব এশিয়া। এর পাশাপাশি অস্থিতিশীলতা ও গৃহ যুদ্ধ এবং সন্ত্রাসবাদে আক্রান্ত সুদান, মালি, সোমালিয়া, কঙ্গো, বুরকিনা ফাসোসহ আফ্রিকার বহু দেশ।

শুধু ভূ-রাজনৈতিক ক্ষেত্রেই নয়, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ও চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য বাণিজ্য যুদ্ধকে কেন্দ্র করে চরম অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারী ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে। এই রকম পরিস্থিতিতে এসব ভূ-রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ঘটনা প্রবাহের ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে এবারের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। রাজনীতি বিষয়ক আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা এই ধরনের চিন্তাভাবনাই করছেন।

আগামী দিনে ইউরোপ এবং এর বাইরেও ক্ষমতার ভারসাম্যকে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করতে পারে। এই অবস্থায় মার্কিন নির্বাচনে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখছে রাশিয়া। কেননা, ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচিত হলে রাশিয়ার জন্য এক রকম পরিস্থিতি হবে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ডেমোক্র্যাট দলীয় প্রার্থী কমলা হ্যারিস জয়লাভ করলে আন্তর্জাতিক রাজনীতি ও কূটনীতিসহ অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে হোয়াইট হাউজের বর্তমানে অনুসৃত নীতি ও দৃষ্টিভঙ্গির খুব একটা পরিবর্তন না-ও হতে পারে। তিনি যার রানিংমেট ছিলেন সেই জো বাইডেনের শারীরিক অসুস্থতার কারণে আকস্মিকভাবেই প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে ডেমোক্র্যাটদের সমর্থন পাচ্ছেন।

বাইডেনের নীতির ধারাবাহিকতাই অক্ষুণ রাখবেন কমলা হ্যারিস। তবে পরিস্থিতির আমূল পরিবর্তন হতে পারে। যদি তার পরিবর্তে এবার সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।

অন্যদিকে কমলা হ্যারিস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে ভিন্ন রকম পরিস্থিতির মধ্যে দিতে যেতে হবে রাশিয়াকে। এই লাভ ক্ষতির অংক কষে মার্কিন নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করছে রাশিয়া।

বিশ্লেষকরা বলছেন, স্বাধীন চেতা ট্রাম্পের এবারের প্রেসিডেন্সিতে আমূল পরিবর্তন আসতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের বিগত কয়েক দশকের দৃষ্টিভঙ্গিতে সেটাই প্রমাণিত হয়েছে। বিশেষ করে আন্তর্জাতিক রাজনীতি ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে এতদিন ধরে গুরুত্ব পাওয়া ‘বৈশ্বিক নীতি’র পরিবর্তে তিনি গ্রহণ করতে পারেন ‘আমেরিকাই প্রথম’ নীতি।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button