ট্রাম্প যুগে কেমন হবে দিল্লি ওয়াশিংটন সম্পর্কের সমীকরণ
দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হয়ে আগামী জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউসে ফিরছেন রিপাবলিকান নেতা ডনাল্ড ট্রাম্প। নবনির্বাচিত এই প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কাজ করতে কোনোরকম সংকোচ নেই বলে জানিয়েছে ভারত। ট্রাম্প প্রশাসনের প্রথম মেয়াদের মতো এবারো তাদের সঙ্গে কাজ করতে মুখিয়ে রয়েছে দিল্লি। এমনটাই জানিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তিনি বলেন, ট্রাম্পের নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্রকে নিয়ে পৃথিবীর অনেক দেশই নার্ভাস (সংকোচে) ছিল তবে এসব দেশের মধ্যে ভারত নেই। রোববার এক ইভেন্টে এ মন্তব্য করেন তিনি। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। এতে বলা হয়, ডনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে তার সঙ্গে বেশ ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি করেছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তবে ট্রাম্প প্রশাসনের কর নীতির কারণে একটি শুল্ক যুদ্ধের মুখোমুখি হয়েছিল ভারত যা উভয় দেশের ব্যবসায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছিল। এখানে বলে রাখা জরুরি যুক্তরাষ্ট্রের সকল পক্ষের সঙ্গেই সুম্পর্ক রেখে এগিয়েছে ভারত সরকার। বছরের পর বছর ধরে রিপাবলিকান এবং ডেমোক্রেট উভয় দলের সঙ্গেই ভালো সম্পর্ক গড়ে তুলেছে দিল্লি। এবারও তার ব্যত্যয় হবে না, তা আগে থেকেই অনুমেয়। এর মূলে রয়েছে চীনের সঙ্গে ওয়াশিংটনের বৈরী সম্পর্ক। যে সরকারই আসুক চীনকে চাপে রাখতে দিল্লিকে অনুঘটক হিসেবে পাশে রাখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। ট্রাম্পের আমলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে দিল্লির মাথাব্যথার কোনো কারণ নেই বলে মনে করেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর। কেননা ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর প্রথম তিনটি কলের মধ্যে একটি ছিল মোদির। তবে সম্পর্ক নিয়ে ট্রাফিক যুদ্ধের সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। গত অক্টোবরে নির্বাচিত হওয়ার আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে ‘মহান নেতা’ বলে অভিহিত করলেও অতিরিক্ত কর আদায়ের জন্য দিল্লির দিকে অভিযোগের আঙ্গুল তুলেছিলেন ট্রাম্প। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই দুই নেতার মধ্যে গড়ে ওঠা সম্পর্ক তাদের বাণিজ্যিক দ্বন্দ্ব কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করে কিনা সেটাই এখন দেখার বিষয়। অতীতে উভয় নেতাই একে অপরকে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন। ২০১৯ সালে ভারত-আমেরিকা বংশোদ্ভূত নাগরিকদের এক অনুষ্ঠানে মিলিত হয়েছিলেন তারা। সেখানে তারা একে অপরের বেশ প্রশংসা করেন। অনুষ্ঠানটি টেক্সাসে মোদির সম্মানে আয়োজন করেছিলেন আমেরিকায় থাকা ভারতীয়রা। সেখানে প্রায় ৫০ হাজারের কাছাকাছি মানুষ উপস্থিত হয়েছিলেন। যাদের মধ্যে তৎকালীন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রীয় অনেক কর্মকর্তা ছিলেন। এর পরের বছরই ভারত সফরে আসেন ট্রাম্প। নিজ অঞ্চল গুজরাটে তাকে অভ্যর্থনা জানিয়েছিলেন মোদি। যেখানে এক লাখ ২৫ হাজারের বেশি মানুষকে উপস্থিত করা হয়েছিল। এত বড় অভ্যর্থনার পরেও দিল্লি-ওয়াশিংটন সম্পর্কে ভাটা পড়ে। প্রথম মেয়াদে ট্রাম্পের করনীতি দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য উত্তেজনা বাড়িয়ে দেয়। তারপরেও ট্রাম্পাধীন ওয়াশিংটনের সঙ্গে সম্পর্কের ইতিবাচক ধারায় আগাতে চাচ্ছে দিল্লি। জয়শঙ্কর মনে করেন যেহেতু পূর্ব-পশ্চিমের মধ্যে শক্তির নিক্তিতে ভারসাম্যের পরিবর্তন হচ্ছে তাই যুক্তরাষ্ট্রের মতো পুরনো শিল্পোন্নত অর্থনীতি এখন খুব গুরুত্বপূর্ণ।