‘ডলারের দাম বাড়ায় বাজারে সর্বনাশ ঘটবে’
ডলারের দাম ১১০ টাকা ছিল। সাত টাকা বাড়িয়ে করা হলো ১১৭। এতে আমদানি ব্যয় বেড়ে যাবে বলে মনে করছেন আমদানিকারক ও বাজার সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, গাড়ি থেকে শুরু করে প্রায় সব নিত্যপণ্যই আমদানিনির্ভর। ডলারের মূল্য বাড়ার প্রভাবে মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেনন, বাংলাদেশ একটি আমদানিনির্ভর দেশ। চাল, ডাল, গাড়িসহ বিভিন্ন নিত্যপণ্য আমদানি করতে হয়। ডলার সাত টাকা বাড়ায় এসব পণ্যের দাম বেড়ে যাবে। আমদানি ব্যয় বাড়লে ভোক্তার কষ্ট বাড়বে। বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিক্যালস ইম্পোর্টার্স অ্যান্ড ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বারভিডা) সভাপতি হাবিব উল্লাহ ডন বলেন, ডলারের মূল্য সাত টাকা বাড়ায় বাজারে সর্বনাশ হয়ে যাবে। নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাবে, আগামী ছয় মাসের মধ্যে দেশের মানুষ সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতি দেখবে। এখন যে পণ্যটি আমদানি করতে দিতে হচ্ছে ১০০ টাকা, শুধু ডলারের দাম বাড়ার কারণে বাড়তি ৭ টাকা ৭০ পয়সা গুনতে হবে। এর সঙ্গে অন্যান্য খরচও রয়েছে।
ঢাকা দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, ডলারের মূল্যবৃদ্ধির ফলে বাজারে এর প্রভাব পড়বে। মানুষের কষ্ট বাড়বে। বাংলাদেশ ব্যাংক যাই করছে, দ্রুত যেন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসে। দেরি হলে মানুষের কষ্ট বাড়বে, সরকারের জনপ্রিয়তা কমবে। দীর্ঘ সময় ধরে মানুষ কষ্টের মধ্যে আছে। করোনাভাইরাসের মধ্যে আমরা যে সংকটে পড়েছিলাম পরবর্তী সময়ে যে কয়টি দেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছিল, বাংলাদেশ তার মধ্যে সামনে সারিতে ছিল। কিন্তু এখন যে সংকটের মধ্যে আছি ঘুরে দাঁড়াতে পারছি না। আমাদের অনুরোধ, ডলারের দাম বাড়ানো হোক বা যা-ই হোক একটি টাইম ফ্রেম বেধে দিতে হবে, যেন একটি সময়ের মধ্যে ঠিক হয়ে যায়।
ডলারে মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে ভিন্ন কথা বলছেন পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) সিনিয়র গবেষক আশিকুল ইসলাম বলেন, আমদানিতে একটি বিনিময় হার, রপ্তানিতে খোলা বাজারে আরেকটি বিনিময় হার। ভিন্ন ভিন্ন বিনিময় হারে একটি দেশের অর্থনীতি চলতে পারে না। বাজারে ডলারের দাম ইতোমধ্যে ১১৭ টাকা চলছে। খাতা-কলমে না থাকলেও বাজারে এটা ঠিকই চলছিল। এখন বাংলাদেশ ব্যাংকের ঘোষণার ফলে প্রবাসী আয় আকর্ষিত হবে; পাশাপাশি রপ্তানি আয়ও দ্রুত দেশে ফেরত আসবে। এর ফলে বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে।
গতকাল বুধবার এক সার্কুলার জারির মাধ্যমে ডলারের মূল্য ১১৭ টাকা করার কথা জানায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ কারণে মূল্যস্ফীতি বাড়বে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।