Bangladesh

ডিমের মতো লাভ নেই জুয়াতেও

মোবাইল ফোনে এসএমএস পাঠিয়ে ডিমের বাজারদর ঠিক করা হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সতর্ক করেছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। ডিমের বাজার নিয়ন্ত্রণে তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী সমিতিকে সরাসরি দায়ী করে সংস্থাটির মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেছেন, কারা কীভাবে এসএমএস করে ডিমের দাম ঠিক করছে, সেই তথ্য তার কাছে আছে। এই সমিতি ভেঙ্গে দিলে ডিমের বাজার ঠিক হয়ে যাবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। ডিম ব্যবসায়ীদের অতিরিক্ত মুনাফা করার প্রবণতায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেছেন, এত লাভ জুয়াতেও (গ্যাম্বলিং) নেই।
গতকাল মঙ্গলবার অধিদফতরের প্রধান কার্যালয়ের সভাকক্ষে ডিমের উচ্চ মূল্য নিয়ে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান, খামার, এজেন্ট, ডিলার ও ব্যবসায়ী সমিতির সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। গত সপ্তাহের মাঝামাঝি থেকে ডিমের বাজার হঠাৎ অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে। আমিষের সহজলভ্য উৎস ডিমের দাম হঠাৎ বেড়ে প্রতিটি ১৫ টাকায় দাঁড়ায়। ঢাকার বাজারে প্রতি হালি ডিম বিক্রি হচ্ছে ৫৮ টাকায়। ডজন হিসাবে ডিমের দাম উঠেছে ১৬৫-১৭০ টাকায়। এমন প্রেক্ষাপটে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে ভোক্তা অধিদফতর।
সভায় অধিদফতরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী সমিতিকে এসএমএসের মাধ্যমে ডিমের দাম বাড়ানোর হোতা হিসেবে উল্লেখ করে এর জবাব চান। তিনি ডিমের দাম নিয়ন্ত্রণে সংগঠনটির একটি সভার ছবি দেখিয়ে এভাবে সভা করে দাম নিয়ন্ত্রণ করার অধিকার কে দিয়েছে, প্রশ্ন রাখেন। এসএমএসের মাধ্যমে দাম নিয়ন্ত্রণ আর দেখতে চান না বলেও জানিয়ে দেন সফিকুজ্জামান।
তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আমানউল্লাহ বলেন, জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ডিমের দাম নিয়ন্ত্রণের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের নিয়ে এরকম একটি সভা করার কথা বলেছিল, এজন্য আমরা ওই সভা করেছি। আমাদের এনএসআই বলেছে, এজন্য আমরা এই সভা করেছি।
মহাপরিচালক সফিকুজ্জামান বলেন, এসএমএস কারা করে, কীভাবে করে, সব তথ্য আমার কাছে আছে। এই সমিতি ভেঙে দিলে বাংলাদেশে ডিমের বাজার ঠিক হয়ে যাবে। আমরা বগুড়ায় গিয়ে দেখেছি, কার নম্বর থেকে, কীভাবে এই এসএমএস আসে। অভিযোগ এসেছে ফিডের দাম বেশি। মুরগির ফিড পার কেজিতে ২০-৩০ টাকা বেশিতে বিক্রি করা হচ্ছে। সমস্যাটা হল, বাচ্চার দাম করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো যে হারে নির্ধারণ করে দিচ্ছে, তার থেকে দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে। সাথে উনারা একটা প্যাকেজ দিচ্ছেন যে, বাচ্চা কিনলে ৬ মাস পর্যন্ত ফিডও তাদের থেকে কিনতে হবে। এটা বাধ্য করার কথা না। এই জায়গাটায় আমরা কাজ করছি। দেখা যাচ্ছে কেউ যদি এক লাখ ডিম বাজারে বসে বিক্রি করে, তার এক রাতেই লাভ হচ্ছে এক লাখ টাকা। গ্যাম্বলিংয়েও মনে হয় এত লাভ নেই।
ডিমের দাম বাড়ানোর কারসাজিতে যে তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী সমিতির হাত রয়েছে, সেই তথ্য এক সপ্তাহ আগেই দিয়েছিলেন বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার। এই সমিতির হাতেই ডিমের বাজারের নিয়ন্ত্রণ মন্তব্য করে সুমন বলেন, বিভিন্ন জায়গার ব্যবসায়ীদের তারা শুধু জানিয়ে দেয় আজ এত টাকা, কাল এত টাকা। এখানের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। তারা দিনে ও রাতে বাজার বসায়। দিনের বাজার ঠিক আছে। ঘোষণা অনুযায়ী ডিম বেচাকেনা হয়। কিন্তু রাতের বাজারে খামারির কাছ থেকে আনা ডিমের দাম তারা বসিয়ে দেয়।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button