Trending

ডেঙ্গুতে বিশ্বজুড়ে ছয় হাজার মৃত্যু: ডব্লিউএইচও

চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ১ কোটি ২৩ লাখ মানুষ। তাদের মধ্যে ৬ হাজারেরও বেশি জনের মৃত্যু হয়েছে। এই মুহূর্তে বিশ্বের ১৩০টিরও বেশি দেশে ডেঙ্গু মহামারি চলছে। এমন বাস্তবতায় ডেঙ্গু ও মশাবাহিত অন্য ভাইরাসজনিত রোগের বিস্তার রোধে বৈশ্বিক পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। 

বৃহস্পতিবার সুইজারল্যান্ডের রাজধানী জেনেভায় এক সংবাদ সম্মেলনে এই পরিকল্পনার বিভিন্ন দিক নিয়ে কথা বলেন ডব্লিউএইচওর মহাপরিচালক ও শীর্ষ নির্বাহী তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়েসুস। 

এ সময় তিনি বিশ্বজুড়ে ডেঙ্গু মশা ও অন্য পোকামাকড়ের মাধ্যমে বাহিত আর্বোভাইরাসজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

গেব্রিয়েসুস বলেন, গত কয়েক বছর বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষ ডেঙ্গু ও আর্বোভাইরাসজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। এখন এসব রোগে আক্রান্ত-মৃত্যুর ঝুঁকিতে রয়েছেন কোটি কোটি মানুষ। তিনি এই ঝুঁকি থেকে মুক্তি পেতে বিভিন্ন দেশকে সমন্বিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধের ব্যাপারটির সঙ্গে পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখা থেকে শুরু করে এই রোগে আক্রান্তদের সঠিক সময়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা পর্যন্ত বিস্তৃত। তাই ডেঙ্গুকে নিয়ন্ত্রণ করতে হলে সবারই সক্রিয় ভূমিকা প্রয়োজন। বিশ্বজুড়ে আর্থিক, সামাজিক, রাজনৈতিক, প্রাকৃতিকসহ বিভিন্ন কারণে অনিশ্চয়তার মধ্যে থাকা শত শত কোটি মানুষের সুরক্ষা ও পরবর্তী প্রজন্মের জন্য একটি স্বাস্থ্যকর ভবিষ্যৎ নির্মাণের জন্যই ডেঙ্গুর বিস্তার রোধ করতে হবে। 

এ সময় অপরিকল্পিত নগরায়ন, দূষিত পানি, ক্রটিযুক্ত পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা, জলবায়ু পরিবর্তন, আন্তর্জাতিক পর্যটন প্রভৃতিকে ডেঙ্গু বিস্তারের জন্য সরাসরি দায়ী করেন সংস্থাটির গ্রীষ্মকালীন রোগ বিভাগের প্রধান ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. রমন ভেলাইউধান।

ডব্লিউএইচও জানিয়েছে, এখনো এ মহামারি স্থানীয় পর্যায়ে থাকলেও আক্রান্ত-মৃত্যুর হার প্রতি বছরই বাড়ছে। একই প্রবণতা দেখা যাচ্ছে মশাবাহিত অপর দুই রোগ জিকা ও চিকনগুনিয়ার ক্ষেত্রেও।

ডব্লিউএইচওর রেকর্ড অনুযায়ী, ২০২১ সাল থেকে প্রতি বছরই দ্বিগুণ হারে বাড়ছে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার। পৃথিবীর গ্রীষ্মমণ্ডলীয় এলাকার জলবায়ু ডেঙ্গু ভাইরাস ও এর বাহক এডিস মশা বিস্তারের জন্য উপযোগী। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, প্রশান্ত মহাসাগরের পশ্চিম দিকে অবস্থিত বিভিন্ন দেশ ও মধ্য এবং দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোতে তাই বরাবরই এই রোগের বিস্তার ছিল। তবে জলবায়ু পরিবর্তন ও বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে প্রতি বছরই নতুন নতুন দেশে ছড়াচ্ছে ডেঙ্গু।

বিশ্বজুড়ে ডেঙ্গু অস্বাভাবিক গতিতে ছড়িয়ে পড়তে থাকায় সবচেয়ে ঝুঁকিতে রয়েছে সদ্যোজাত শিশু ও বয়স্ক লোকজন। যেহেতু ডেঙ্গু এখন একটি বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ, তাই সমন্বিত পরিকল্পনা ও কার্যক্রমেই একে মোকাবিলার সবচেয়ে কার্যকরী পথ বলে দাবি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button