ড. ইউনূস ইস্যুতে মন্তব্যকারী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলকে ‘জনস্বার্থে’ বরখাস্ত, প্রজ্ঞাপন জারি
ড. ইউনূসকে ‘বিচারিক হয়রানি’ করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করে বিবৃতিতে সাক্ষর করা থেকে বিরত থেকেছেন বলে জানান ওই ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল।
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস ইস্যুতে মন্তব্য করা ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভূঁইয়াকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আনুষ্ঠানিক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয় এ তথ্য।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এমরান আহম্মদকে ‘জনস্বার্থে’ বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে তাকে বরখাস্তের নির্দিষ্ট কোনো কারণ উল্লেখ করা হয়নি।
এদিকে, আজ শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া রেলওয়ে স্টেশনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এমরান আহম্মদকে বরখাস্তের বিষয়টি উল্লেখ করেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে কিনা- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, “ওনাকে বরখাস্ত করা হয়েছে।”
আইনমন্ত্রী সকালে ঢাকা থেকে মহানগর প্রভাতি ট্রেনে করে তার নির্বাচনী এলাকা আখাউড়ায় আসেন।
উল্লেখ্য, ড. ইউনুসের পক্ষে বিশিষ্টজনদের দেওয়া বিবৃতির প্রতিবাদে বিবৃতিতে সাক্ষর করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আলোচনায় আসেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া।
৪ সেপ্টেম্বর এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া জানান, নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে বিচার কার্যক্রম বন্ধ করতে বিশ্বের ১৭০ বিশিষ্ট ব্যক্তি যে চিঠি দিয়েছেন, তার প্রতিবাদে অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসের বিবৃতিতে তিনি সই করবেন না।
ইউনূসকে ‘বিচারিক হয়রানি’ করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করে বিবৃতিতে সাক্ষর করা থেকে বিরত থেকেছেন বলে জানান এই ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল।
সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘১৭০ জন বিশিষ্ট ব্যক্তির বিবৃতির বিপক্ষে প্রতিবাদ জানিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল অফিস থেকে একটি বিবৃতি দেয়ার কথা বলা হয়েছে। আমাদের নোটিশ করা হয়েছে এই বিবৃতিতে সই করার জন্যে। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি এই বিবৃতিতে সই করবো না।’
এমরান বলেন, ‘১৭০ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি ইউনূসের পক্ষে যে বিবৃতি দিয়েছেন- আমি তার সঙ্গে একমত। আমি মনে করি, তিনি একজন সম্মানিত ব্যক্তি। ওনার সম্মানহানি করা হচ্ছে এবং এটি বিচারিক হয়রানি।’
এর আগে, অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের কর্মকর্তাদেরকে অ্যাটর্নি জেনারেলের পূর্ব অনুমতি ছাড়া গণমাধ্যমে ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আনুষ্ঠানিক কোনো বিষয়ে কোনো বক্তব্য ও মন্তব্য করতে নিষেধ করা হয়।
৫ সেপ্টেম্বর অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় থেকে এ সংক্রান্ত একটি লিখিত নির্দেশনা জারি করা হয়। বিষয়টি বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) গণমাধ্যমের নজরে আসে।
অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. নাসির উদ্দিন স্বাক্ষরিত নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ‘এই অফিসের সকল আইন কর্মকর্তাগণকে জানানো যাচ্ছে যে, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অফিস-সংক্রান্ত কোনো বিষয়ে কোনো প্রকার বক্তব্য প্রদানের পূর্বে অ্যাটর্নি জেনারেল মহোদয়ের সাথে পরামর্শ ও পূর্ব অনুমতি সাপেক্ষে বক্তব্য প্রদানের জন্য নির্দেশক্রমে সবিনয় অনুরোধ করা হলো।’