Bangladesh

ঢাকায় আইএমএফ মিশন: ২৪ হাজার কোটি টাকা বাড়তি আয়কর আদায় করা হবেঢাকায়

এনবিআরের পক্ষ থেকে আইএমএফের দলটিকে জানানো হয়, চলতি অর্থবছরে কীভাবে বাড়তি আয়কর আদায় হবে।

চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আয়কর বাবদ আগের বছরের তুলনায় ২৪ হাজার কোটি টাকা বাড়তি আদায় করা হবে বলে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলকে (আইএমএফ) জানানো হয়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে আয়কর থেকে আদায় হয়েছিল ১ লাখ ১২ হাজার ৯২০ কোটি টাকা। সে হিসাবে চলতি অর্থবছরে আয়কর বাবদ মোট আদায় হবে ১ লাখ ৩৬ হাজার ৯২০ কোটি টাকা। যদিও চলতি অর্থবছরের বাজেটে আয়, মুনাফা ও মূলধনের ওপর কর থেকে ১ লাখ ৫৩ হাজার ২৬০ কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার।

ঢাকা সফররত আইএমএফের এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় বিভাগের প্রধান রাহুল আনন্দর নেতৃত্বাধীন একটি দল গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে বৈঠক করে। ওই বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, আয়কর বাবদ সম্ভাব্য আদায়ের এই তথ্য আইএমএফ দলকে জানানো হয়েছে।

গত বুধবার থেকে ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত আরও সরকারি সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করবে আইএমএফের দল। গত জানুয়ারিতে বাংলাদেশের জন্য সাত কিস্তিতে ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলারের যে ঋণ আইএমএফ অনুমোদন করেছে, তা থেকে দ্বিতীয় কিস্তি ছাড় হওয়ার কথা আগামী মাসে।

অর্থনীতি যদি সুস্থ না থাকে, এনবিআর কীভাবে রাজস্ব আদায় করবে? যেকোনো কারণেই হোক, অর্থনীতি বর্তমানে সন্তোষজনক অবস্থানে নেই।

এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মজিদ

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)

দ্বিতীয় কিস্তি ছাড়ের আগে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অগ্রগতি পর্যালোচনা করতেই আইএমএফের এই দল ঢাকা সফর করছে। বৈঠকগুলোর শেষে একটি মূল্যায়ন প্রতিবেদন হস্তান্তর করা হবে আইএমএফের আঞ্চলিক নির্বাহী পরিচালক কৃষ্ণমূর্তি সুব্রামানিয়ামের কাছে। ১৮ অক্টোবর তাঁর ঢাকায় আসার কথা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গেও তিনি সাক্ষাৎ করবেন বলে জানা গেছে।

এনবিআরের পাশাপাশি গতকাল বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) এবং সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিটের (সিপিটিইউ) সঙ্গেও বৈঠক করেছে দলটি। ২০২২-২৩ অর্থবছরে এনবিআর কেন রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি, তা–ও আইএমএফকে জানানো হয়েছে। পাশাপাশি তুলে ধরা হয়েছে চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের জন্য কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ৯ অক্টোবর এনবিআরের সঙ্গে আরেকটি বৈঠক হবে আইএমএফের দলের, যাতে উপস্থিত থাকবেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম।

গতকালের বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি চালু হওয়া আয়কর আইনে নতুন নতুন খাতে আয়কর আরোপ করার কথা আইএমএফ দলকে জানানো হয়েছে। বাড়তি যে ২৪ হাজার কোটি টাকা আদায় হবে, তার মধ্যে অন্তত ৯ হাজার কোটি টাকা আসবে নতুন খাতগুলো থেকে। আর বিভিন্ন মামলায় আটকে আছে, এমন আরও ১৫ হাজার কোটি টাকা আদায় করা সম্ভব হবে।

এনবিআর নিয়ন্ত্রিত করব্যবস্থা থেকে যে ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে, তার মধ্যে ভ্যাট আদায়ের পরিকল্পনা ১ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকা, আর আয়কর আদায়ের পরিকল্পনা ১ লাখ ৫৩ হাজার কোটি টাকা। বাকিটা শুল্ক।

বৈঠক সূত্রে আরও জানা গেছে, আইএমএফের দেওয়া শর্ত অনুযায়ী চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মোট রাজস্ব আদায় নিয়ে এনবিআর নিজেও খুব আশাবাদী নয়। আইএমএফের শর্ত হচ্ছে চলতি অর্থবছর থেকে ঋণ কর্মসূচি চলাকালীন অর্থাৎ ২০২৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) দশমিক ৫ শতাংশ হারে বাড়তি রাজস্ব আদায় করা। এনবিআর গতকাল বৃহস্পতিবার আইএমএফকে জানিয়েছে, অর্থনীতির চলমান বাস্তবতায় এ আদায় তাদের জন্য কঠিন হবে।

এনবিআর নিয়ন্ত্রিত করব্যবস্থা থেকে যে ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে, তার মধ্যে ভ্যাট আদায়ের পরিকল্পনা ১ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকা, আর আয়কর আদায়ের পরিকল্পনা ১ লাখ ৫৩ হাজার কোটি টাকা। বাকিটা শুল্ক। এ ছাড়া বিভিন্ন ধরনের মাশুল থেকে আদায়ের লক্ষ্য আরও ৫০ হাজার কোটি টাকা।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, আইএমএফের দলকে জানানো হয়েছে চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী কর আদায়ে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এগুলো হচ্ছে ইলেকট্রনিক ফিসক্যাল ডিভাইস (ইএফডি) কেনা ও বসানো, ভ্যাট ও শুল্ক প্রশাসনে সংস্কার আনা, নতুন নতুন খাতে কর আরোপ করা, জাতীয় শুল্কনীতি ও আয়কর আইন প্রণয়ন করা, ভর্তুকি কমিয়ে রাজস্ব আহরণ বাড়ানো ইত্যাদি। এ ছাড়া এনবিআরের কর্মকর্তাদের কারিগরি সহায়তা ও সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

আর অর্থনীতি যেহেতু আগের তুলনায় ধীর, ফলে ব্যয় সাশ্রয়ের জন্য সরকার নিজেই কেনাকাটা কমিয়েছে। তা ছাড়া পেট্রোবাংলাসহ সরকারি অনেক প্রতিষ্ঠানের কাছে আটকে রয়েছে রাজস্বের অর্থ। এগুলো আদায়ে এবার পদক্ষেপ জোরদার করা হবে। এ ছাড়া চালু করা হবে কর গোয়েন্দা ইউনিট।

আইএমএফকে আরও জানানো হয়, ডলার–সংকটে আমদানি কমে গেছে। আমদানি কমে যাওয়ায় গত অর্থবছরে শুল্ক আদায় কম হয়েছে এবং চলতি অর্থবছরেও প্রায় একই ধরনের প্রবণতা থাকতে পারে। আর অর্থনীতি যেহেতু আগের তুলনায় ধীর, ফলে ব্যয় সাশ্রয়ের জন্য সরকার নিজেই কেনাকাটা কমিয়েছে। তা ছাড়া পেট্রোবাংলাসহ সরকারি অনেক প্রতিষ্ঠানের কাছে আটকে রয়েছে রাজস্বের অর্থ। এগুলো আদায়ে এবার পদক্ষেপ জোরদার করা হবে। এ ছাড়া চালু করা হবে কর গোয়েন্দা ইউনিট।

এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মজিদ বলেন, অর্থনীতি যদি সুস্থ না থাকে, এনবিআর কীভাবে রাজস্ব আদায় করবে? যেকোনো কারণেই হোক, অর্থনীতি বর্তমানে সন্তোষজনক অবস্থানে নেই। আর আইএমএফের সঙ্গে চুক্তি হচ্ছে সরকারের। এনবিআর হচ্ছে বাস্তবায়নকারী সংস্থা। এনবিআর নিজে কিছু আরোপ করতে পারে না, মাফও করতে পারে না।

আবদুল মজিদ বলেন, একদিকে রয়েছে আইএমএফের সঙ্গে শর্ত, অন্যদিকে সরকার বিদেশিদের আয়কর মাফ করে দিচ্ছে। পাশাপাশি জনগণের ওপর বাড়তি কর আরোপ করা হচ্ছে। কর আরোপ ও মাফ—উভয় ক্ষেত্রেই আরও সতর্ক থাকা উচিত।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
Toto Slot
slot gacor
slot gacor
slot toto
Bacan4d Login
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot bacan4d
bacan4d togel
bacan4d game
slot gacor
bacan4d login
bacantoto 4d
toto gacor
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
slot77 gacor
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
bacansports
slot toto
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d