Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
Hot

ঢাকায় নাগরিক সেবা পেতে ভোগান্তি-বিশৃঙ্খলা

ঢাকায় নাগরিক সেবা পেতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে সেবাগ্রহীতাদের। সেবা পেতে সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর থেকে আঞ্চলিক অফিসগুলোতে বার বার ঘুরছেন নগরবাসী। অধিকাংশ কাউন্সিলর অফিসগুলোতেই স্বাভাবিক সেবা ব্যাহত হচ্ছে। আঞ্চলিক  অফিসেও সেবা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন নগরবাসী। জন্মনিবন্ধন, মৃত্যুসনদসহ গুরুত্বপূর্ণ সেবাগুলো নিতে হয়রানি আর বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হচ্ছে সেবাগ্রহীতাদের। এতে উষ্মা প্রকাশ করছেন নগরের বাসিন্দারা।  

সিটি করপোরেশন সূত্র জানিয়েছে,  গত ২৬শে সেপ্টেম্বর সিটি করপোরেশনের সব কাউন্সিলরকে অপসারণ করে সরকার। তাই কাউন্সিলরদের পরিবর্তে প্রতিটি ওয়ার্ডে সিটি করপোরেশনের সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, ওয়ার্ড সচিব এবং সমাজকল্যাণ কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। কোনো কোনো ওয়ার্ড সচিবকে দু’টি ওয়ার্ডের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। সরজমিন রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অফিসে গিয়ে ও সেবাগ্রহীতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অনেক কাউন্সিলর অফিস এখন বন্ধ রয়েছে। অসংখ্য অফিস সময়মতো খুলছে না। কাউন্সিলরদের অবর্তমানে দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারাও ঠিকমতো অফিস করছেন না। সকাল থেকে সেবাগ্রহীতারা অফিসগুলোতে গিয়ে অপেক্ষায় থাকেন। এমনকি বর্তমান পরিস্থিতিতে কিছু ওয়ার্ডের বাসিন্দারা জানেন না, জন্ম ও মৃত্যুসনদের সেবাগুলো তারা কোথায় পাবেন? ওয়ার্ড সচিবরা কোথায় বসেন সেটিও তারা জানেন না কেউ কেউ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিশাল জনসংখ্যার বিপরীতে প্রশাসনিক বাড়তি দায়িত্ব পালনে হিমশিম খাচ্ছেন সিটি করপোরেশনের আঞ্চলিক অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। অনেক ওয়ার্ড সচিবকে দুই ওয়ার্ডের দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে, তাই তারা নাগরিক সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন। লোকবল বাড়িয়ে নাগরিক সেবা দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন অনেকে। 

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৬২ ও ৬৩ নং ওয়ার্ড ঘুরে দেখা যায়, দুপুর পেরিয়ে বিকাল হলেও সেখানে কাউন্সিলর অফিস বন্ধ। তার থেকে কিছু দূরে একটি দোকানে ওয়ার্ড সচিব এবং আঞ্চলিক কর্মকর্তা মাঝেমধ্যে দায়িত্ব পালন করেন। গত ৫ই আগস্ট সরকার পতনের পর ৬২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. মোস্তাক আহমেদ পলাতক রয়েছেন। সেখানে ওয়ার্ড সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মো. রিপন হোসেন। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা জন্মনিবন্ধন, নাগরিক সনদ, মৃত্যু সনদপত্র ও ট্রেড লাইসেন্সসহ বিভিন্ন নাগরিক সেবা নিতে ভোগান্তিতে পড়ছেন। অনেক জায়গায় অতিরিক্ত টাকা আদায়েরও অভিযোগ রয়েছে। টাকা না দিলে সেবা পাচ্ছেন  না তারা। ডেঙ্গু মশা নিধনে কর্মচারীরা দায়িত্বে অবহেলা করছেন বলে অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী। বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, মশক নিধনকর্মীরা নিয়মিত আসেন না। কিছু এলাকায় কয়েক মাস ধরে মশকনিধনকর্মীর দেখা মিলেনি- এমন অভিযোগও আছে। দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন, তিনি ছেলের জন্মসনদ নিতে এসেছেন। কিন্তু নানা জটিলতায় জন্মসনদ পাচ্ছেন না। তরুণ উদ্যোক্তা রহমত উল্যাহ। স্বল্প পুঁজিতে অনলাইন ব্যবসা শুরুর স্বপ্ন তার। ঢাকা দক্ষিণ  সিটি করপোরেশনের ৬২ নং ওয়ার্ডের এই বাসিন্দা ট্রেড লাইসেন্স করাতে কার্যালয়ে দু’-একদিন পরপরই যাচ্ছেন এবং প্রতিবারই নিরাশ হয়ে ফিরছেন। তিনি বলেন, যিনি ট্রেড লাইসেন্সের কাজ করবেন, তাকে অফিসে পাইনি। গেলেই বলা হয়, তিনি আজ আসবেন না। সাজ্জাদ নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, ওয়ারিশান সনদ নিতে আজকে ১৫ দিন ধরে ঘুরছি কিন্তু অফিসে লোক না থাকায় ওয়ারিশান সনদ পাচ্ছি না। শারমিন আক্তার নামে এক গৃহবধূর স্বামী প্রবাসী। তাই নিজেই এসেছেন ছেলের জন্মসনদ নিতে। গত এক মাস ধরে সিটি করপোরেশনে ঘোরাঘুরি করছেন। তিনি বলেন, আজকে এখানকার একজন আমাকে জন্মসনদ নেয়ার জন্য ডেকেছেন। তবে এখনো পাইনি। মাহতাব নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, আগে নিয়মিত কাউন্সিলর অফিস খোলা থাকলেও এখন তা হচ্ছে না। ফলে অনেকে জরুরি কাজে আসলেও ফিরে যেতে হয়। ৬২ নং ওয়ার্ডের সচিব মো. রিপন বলেন, বর্তমানে কাউন্সিলর অফিসের স্বাভাবিক কাজকর্ম স্থবির হয়ে পড়েছে। একটা মৃত্যু সনদের জন্য মানুষকে দিনের পর দিন ঘুরতে হয়। মৃত্যু সনদের জন্য ধলপুরের আঞ্চলিক অফিসে গেলে তথ্যের অভাবে তাদের বিভিন্ন ভাবে হয়রানির শিকার হতে হয়। এ ছাড়া স্থায়ী অথবা অস্থায়ী নাগরিকত্ব সার্টিফিকেটের জন্য মানুষকে বিভিন্ন অজুহাতে ধলপুরের অফিস থেকে ফিরে আসতে হয়।

দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের খিলগাঁওয়ের আঞ্চলিক অফিসে সেবা নিতে গিয়েছিলেন শফিকুল ইসলাম। ১ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা তিনি। মেয়ের জন্মসনদে নামের বানান সংশোধনের জন্য কয়েকদিন ধরে ঘোরাঘুরি করছেন। শফিকুল ইসলাম বলেন, তার মেয়ের জন্মসনদে নামের বানান ভুল আসায় আমাকে চার দিন আসতে হয়েছে। আজ হয়তো আমার কাজটা হবে। তার মতো অসংখ্য সেবাপ্রত্যাশীদের দেখা যায় খিলগাঁও ১ নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আঞ্চলিক অফিসে সেবা নিতে। খিলগাঁও ১ নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও যুগ্ম সচিব রেজাউল করিম বলেন, এখানে আসা সেবাপ্রত্যাশীদের সেবা পেতে বিলম্ব হচ্ছে না। যদি কারও কোনো অভিযোগ থাকে তাহলে সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। বর্তমানে এখানে সেবা নিতে আসাদের কোনো সমস্যা হচ্ছে না।

ষাটোর্ধ্ব রহিমা বেগম ঢাকা উত্তর সিটির ৪৯ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা। বয়সের ভারে নুইয়ে পড়েছেন। মঙ্গলবার বয়স্ক ভাতার খোঁজ নিতে কাউন্সিলর অফিসে গিয়েছিলেন। এর আগেও দু’দিন এসে ফিরে গিয়েছেন। বয়স্ক ভাতার কোনো তথ্য পাননি। আক্ষেপ করে রহিমা বেগম জানিয়েছেন, বয়স্ক ভাতার কার্ডের জন্য অনেকদিন ধরে অপেক্ষা করছেন তিনি। সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে কার্ড নেয়ার জন্য কাউন্সিলর অফিসে আসতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তিনদিন ধরে কার্ড নিতে এসে ফিরে গিয়েছেন তিনি। রহিমা বেগম বলেন, দুইবার আসছিলাম কার্ড নিতে। কিন্তু এখানে কাউকে পাই নি। অফিস বন্ধ পাইছি। আজকে তিন ঘণ্টা ধরে দাঁড়িয়েছিলাম। এখন  অফিস খুলেছে। কিন্তু কার্ড কখন  দেবে জানি না। রহিমা বেগমের মতো অন্তত ২৫ জন এসেছেন কাউন্সিলর অফিসের কার্যালয়ে। তাদের সবার অভিযোগ একইরকম। গত ৫ই আগস্টের পর থেকে কাউন্সিলর পালিয়ে যাওয়ার পর অফিসের সেবা কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে। এতে  ৪৯ নং ওয়ার্ড অন্তর্গত কাওলা, আশকোনা, গাওয়াইর এলাকার সেবাগ্রহীতারা কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছেন না। ভোগান্তিতে পড়েছেন ওই এলাকার বাসিন্দারা। এলাকাবাসীর অভিযোগ এই কার্যালয় খুব কম সময়ই খোলা হয়। সেবার জন্য সরাসরি উত্তরার আঞ্চলিক কার্যালয়ে যেতে হয়। সরজমিন দেখা যায়, মঙ্গলবার দুপুরে কাউন্সিলর অফিসে এসেছিলেন সিটি করপোরেশনের মশকনিধনের কাজে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। এ ছাড়া আর কোনো কর্মকর্তাকে অফিসে দেখা যায়নি। বর্তমানে কাউন্সিলর অফিসের জায়গায় গড়ে উঠেছে হরেক রকমের দোকানপাট, হোটেল, রেস্তরাঁ ইত্যাদি। এ ব্যাপারে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের অন্তর্গত অঞ্চল-৭ এর নির্বাহী কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সচিব মোহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম বলেন, আমাদের কাছে যারা সেবা নিতে আসছেন তারা খুব খুশি মনে সেবা নিচ্ছেন। তারা সেবা নিতেই যায়। আমাদের নতুন ওয়ার্ডগুলোতে সচিব পদ ছিল না। কিন্তু সেখানে কাজ থেমে নেই। ৪৯ নং ওয়ার্ড আমাদের নতুন ওয়ার্ড, সেখানেও সচিব ছিল না। 

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacantoto4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d toto
slot toto
bacan4d
bacan4d
togel online
Toto Slot
saraslot88
Bacan4d Login
bacantoto
Bacan4d Login
bacan4d
bacan4drtp
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot maxwin
slot bacan4d
slot maxwin
bacan4d togel
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d login
bacantoto 4d
slot gacor
bacansport
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot77 gacor
JAVHD
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
gacor slot
slot gacor777
slot gacor bacan4d
bacan4d
bacansport
toto gacor
bacan4d
bacansports login
slot maxwin
slot dana
slot gacor
slot dana
slot gacor
bacansports
bacansport
bacansport
bacansport
bawan4d
bacansports
bacansport
slot gacor
judi bola
slot maxwin
slot maxwin
bacansport
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot demo
slot gacor
slot gacor
slot gacor
toto slot
slot gacor
demo slot gacor
slot maxwin
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot toto