Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
Hot

ঢাকার বিদেশ মন্ত্রণালয় কার্যত অভিভাবক শূন্য

অস্থিরতা ছিল চরমে। দিক নির্দেশনা ছিল অনুপস্থিত। যার জেরে ৮ মাসের মাথায় পররাষ্ট্র সচিব পদে পরিবর্তন আনতে হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার অনেকটাই বাধ্য হয় ওই রদবদলে। নীতিনির্ধারকদের ওপর চাপ ছিল প্রচণ্ড। সেটি সামাল দিতে চটজলদি ঢাকায় ফেরানো হয় নবনিযুক্ত পররাষ্ট্র সচিব আসাদ আলম সিয়ামকে। ওয়াশিংটনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ছিলেন তিনি। ৬ মাস আগে অস্ট্রিয়া থেকে মার্কিন মুল্লুকে যান। যুক্তরাষ্ট্রের দায়িত্বভার ত্যাগ করে তিনি ২০শে জুন ঢাকায় ফিরেন। তার যোগদানে সেগুনবাগিচায় খানিকটা স্বস্তি এসেছে। তবে মন্ত্রণালয়ের কাজকর্ম এখনো গতিহীন!

ওয়াকিবহাল সূত্র মতে, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি বাস্তবায়নে দৃশ্যমান ‘ফোকাল পয়েন্ট’ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। মিলিটারি ডিক্টেটর ছাড়া সব আমলেই মোটামুটি গুরুত্ব পেয়েছে স্পেশালাইজড ওই মন্ত্রণালয়। অভিযোগ উঠেছে- সাম্প্রতিক সময়ে এটি অনেকটাই গুরুত্বহীন! ক্যারিয়ারের মধ্যগগনে থাকা পেশাদার কূটনীতিকরা বলছেন- পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখন কার্যত অভিভাবকশূন্য, লক্ষ্যহীন। তাদের ভাষ্যটি এমন- ‘আমাদের অনেক বস রয়েছেন। কিন্তু আমাদের কোনো অভিভাবক নেই।’ 

অনেক বিষয়ে অস্পষ্টতা পরিলক্ষিত হচ্ছে দাবি করে এক কর্মকর্তা মানবজমিনের সঙ্গে আলাপে বলেন- যুদ্ধ-সংঘাতসহ দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্ব পরিস্থিতি এবং আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক রাজনীতির মেরূকরণে বাংলাদেশের করণীয় কী? সে সম্পর্কে ক্লিয়ার নির্দেশনা নেই। উদাহরণ টেনে ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘৩৬ জুলাই’র রক্তাক্ত অভ্যুত্থানের মধ্যদিয়ে যারা সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পেয়েছেন তারা ‘তালগোল’ পাকিয়ে ফেলেছেন। গত সেপ্টেম্বরে দায়িত্ব নেয়া বহুল আলোচিত পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দিন মে মাসের তৃতীয় সপ্তাহে পদ থেকে সরে দাঁড়ান। দফায় দফায় সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের প্রেক্ষিতে নাটকীয়ভাবে সেই ক্রুশিয়াল মুমেন্টে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিবের দায়িত্ব আসে চাকরির ২৭ দিন বাকি থাকা জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা রুহুল আলম সিদ্দিকীর ঘাড়ে। অভিমানী জসীম উদ্দিন উত্তরসূরিকে দায়িত্ব যথাযথভাবে বুঝিয়ে না দিয়েই এক সন্ধ্যায় মন্ত্রণালয় ছেড়ে যান। আগেই তিনি তার দেড় মাসের ছুটির আবেদনে অনুমোদন নেন। তার অস্বাভাবিক বিদায়ের ক’ঘণ্টার মাথায় পরিবারের সঙ্গে ছুটি কাটাতে যুক্তরাষ্ট্র চলে যান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। মন্ত্রণালয়ের প্রতি কোনো নির্দেশনা ছাড়াই তিনি ওয়াশিংটনগামী বিমানে চেপে বসেন।  যা ছিল অস্বাভাবিক এবং নজিরবিহীন ঘটনা।

উপদেষ্টার দীর্ঘ অনুপস্থিতিতে অনেক ঘটনা ঘটে। যার মধ্যে দু’টি ঘটনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এক. প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বৃটেন সফর। দুই. চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের নজিরবিহীন (ত্রিপক্ষীয়) বৈঠক। অবসরোত্তর ছুটি শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব মিস্টার সিদ্দিকীকে অনেকটা তড়িঘড়ি করে কুনমিং পাঠানো হয়। সেখানে ছিল একগাদা মিটিং। সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ ছিল ১৯শে জুন বৃহস্পতিবার কুনমিংয়ে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ, চীন ও পাকিস্তান ত্রিদেশীয় বৈঠক। সূত্র এটা নিশ্চিত করেছে যে, বৈঠকটিতে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিবের যোগদান বিষয়ে বিশেষ নির্দেশনা ছিল প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের। বিষয়টি কমিউনিকেট করেন সরকারের গুরুত্বপূর্ণ একজন প্রভাবশালী উপদেষ্টা। বিদেশে থাকা পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ওই উদ্যোগের বিষয়ে জানতেন। তবে তিনি রহস্যজনকভাবে এ নিয়ে নীরবতা পালন করেন। অথচ এটি ছিল একটি নীতিগত সিদ্ধান্ত। 

গত ২৪শে জুন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা দেশে ফিরেন। সাংবাদিকরা তার কাছে এ বিষয়ে জানতে চান। তিনি খোলাসা করে খুব একটা বলতে রাজি হননি। এটি তিনি ‘ওউন’ করছেন কিনা? তা-ও স্পষ্ট নয়। স্মরণ করা যায়, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তার প্রথম এবং একমাত্র দ্বিপক্ষীয় সফর করেন চীনে। প্রধান উপদেষ্টাও বেইজিং সফর করেছেন। ফলে চীনের মধ্যস্থতায় পাকিস্তানের সঙ্গে এমন অভূতপূর্ব উদ্যোগে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ আচমকা কোনো সিদ্ধান্ত নয়। 

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বিশ্ব জুড়ে থাকা দূতাবাস ও মিশনসমূহের প্রতি সরকারের সমন্বিত কোনো দিকনির্দেশনা না থাকার দাবি করে ’২৪-এর স্পিরিটকে ধারণকারী একজন সরকারি কর্মকর্তা বলেন- পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যুগে যুগে পলিটিক্যাল অ্যাপয়েন্টিরা কাজ করেছেন। বিএনপি, আওয়ামী লীগ এমনকি সামরিক শাসনের জমানায়ও। অনেকের মেধা-যোগ্যতা এবং অভিজ্ঞতার জুড়ি মেলা ভার। বিভিন্ন আড্ডায় এখনো তাদের নাম এবং কর্মযজ্ঞ মর্যাদার সঙ্গে স্মরণ করা হয়। কিন্তু বিগত ১৫ বছরে এমন সব রাজনৈতিক কর্মীকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বিদেশস্থ মিশনে নিয়োগ দিয়েছে আওয়ামী লীগ যাদের নিয়ে খোদ তাদের দল ও সরকারে প্রশ্ন রয়েছে। তারা যে যেখানে গেছে নিজেদের মতো করে বলয় বা অসাধু সিন্ডিকেট তৈরি করেছে। তাদের কাছে পেশাদাররা ছিলেন অসহায়। শেখ হাসিনার শাসন প্রলম্বিত হওয়ায় অনেকে অস্তিত্ব রক্ষায় (ভয়ে বা প্রলোভনে) সেই সিন্ডিকেটে ঢুকেছেন। পতিত স্বৈরশাসনের অনৈতিক সুবিধাভোগী অনেকে ভোল পাল্টেছে। দাগিরা পালিয়েছে জানিয়ে ওই কর্মকর্তা বলেন- সেই আমলে ভালো কিছু পাওয়ার আশায় অনেকে পেশাদারিত্বের লিমিট ক্রস করেছে। তারা রাজনৈতিক কর্মীদের মতোই আচরণ করেছে। সেই কর্মকর্তার সংখ্যা নেহায়েত কম নয়। তাদের বড় অংশ পরিস্থিতির কারণে এখন চুপচাপ। নির্বাচন পর্যন্ত হয়তো তারা এ অবস্থায় থাকবে। মরক্কোতে দায়িত্বপালনকারী রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ হারুন আল রশিদ কানাডাতে রাজনৈতিক আশ্রয় নেয়ার চেষ্টা করছেন জানিয়ে এক কর্মকর্তা বলেন- তিনি সরকারের বিরুদ্ধে আপত্তিকর নানা বক্তব্য দিয়ে নিজের অ্যাসাইলাম কেসের ম্যারিট তৈরিতে চেষ্টারত। তাকে দেখে যাতে অনেকে উৎসাহিত না হয় এজন্য সরকার ব্যবস্থা নিচ্ছে। ইতিমধ্যে তার এবং পরিবারের সদস্যদের কূটনৈতিক পাসপোর্ট বাতিল করা হয়েছে। হারুনের পথে এখন পর্যন্ত অন্য কেউ পা বাড়ায়নি বলে নিশ্চিত করেছে মন্ত্রণালয়ের প্রশাসন অনুবিভাগ। 

প্রধান উপদেষ্টার লন্ডন সফর এবং…
লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টার মর্যাদাপূর্ণ সফরকে সমালোচনার খোরাক বানানোর দায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীলরা এড়াতে পারেন না দাবি করে এক কর্মকর্তা বলেন- ওই সফর বাস্তবায়নের দায়িত্ব ছিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের। এটি মোটেও প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের কাজ নয়। রুলস অব বিজনেসে তাই বলা আছে। কিন্তু সফরটি নিয়ে ইঁদুর-বিড়াল খেলা হয়েছে। পররাষ্ট্র সচিব পদে রদবদল নিয়ে অস্বস্তি এবং উপদেষ্টার দীর্ঘ অনুপস্থিতির ওই সময়ে সফরটি সম্পন্ন হয়েছে। অভিযোগ আছে এ নিয়ে লন্ডন মিশনকে সরকারের তরফে ঠিকমতো ব্রিফ করা হয়নি। যা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব ছিল।

সচিব পদে নতুন নিয়োগ নিয়ে যত কথা- এদিকে দেশের ২৮তম পররাষ্ট্র সচিব আসাদ আলম সিয়ামের বিষয়ে সহকর্মীদের মধ্যে ইতিবাচক আলোচনাই বেশি। তবে ১৫তম ব্যাচের প্রথম অবস্থানে থাকা রিয়াজ হামিদুল্লাহকে বাইপাস করে সিয়ামকে পছন্দ করা অর্থাৎ তার সচিব পদে পদায়ন প্রশ্নে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার কথিত আপত্তি নিয়ে নানা কথা চাউর আছে। জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা বলেন- মিস্টার রিয়াজকে বাদ দেয়া অন্যায় হয়েছে। এটা তারই প্রাপ্য ছিল। কিন্তু এটা মানতে হবে যে, আসাদ আলম সিয়াম তদবির করে ওই পদ বাগিয়ে নেননি। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এবং প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের মূল ব্যক্তিরা যৌথভাবে তাকে পছন্দ করে সচিব বানিয়েছেন। এটা তার অ্যাডভান্টেজ। প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি নতুন পররাষ্ট্র সচিবকে এরইমধ্যে স্বাগত জানিয়েছেন দাবি করে ওই কর্মকর্তা বলেন- প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দূরত্ব রয়েছে- এটা অস্বীকার করার উপায় নেই। সেই দূরত্বের কারণে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী সুফিউর রহমানকে সেগুনবাগিচায় বসতে দেয়া হয়নি। নতুন পররাষ্ট্র সচিব সিয়াম দু’টি দপ্তরের মধ্যকার সেই গ্যাপে ব্রিজ হিসেবে ভূমিকা রাখতে পারেন। নতুন করে আর কোনো জটিলতা না হওয়ার আশা করে ওই কর্মকর্তা বলেন- পররাষ্ট্র উপদেষ্টাকে আস্থায় রেখে সচিবকে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজগুলো করতে হবে। আসাদ আলম সিয়ামকে ‘ফাইনেস্ট ডিপ্লোমেট’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন- ওয়াশিংটনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সচিবের দপ্তরে পরিচালক এবং চিফ অব প্রটোকলের মতো গুরুত্বপূর্ণ চারটি পদে দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতার কারণে মন্ত্রণালয়ের সংকটকালীন এই সময়ে নতুন সচিব খানিকটা হলেও ভূমিকা রাখতে পারবেন বলে বিশ্বাস করি। বিশেষ করে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর এবং পররাষ্ট্র  মন্ত্রণালয়ের মধ্যে যে দূরত্ব তা গোছাতে তার প্রতি ভরসা এখন অনেকের। 

ওয়াকিবহাল মহলের পর্যবেক্ষণ: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সরকারের অন্য মন্ত্রণালয়, বিভাগ বা দপ্তর থেকে কিঞ্চিৎ আলাদা। এই মন্ত্রণালয়ে পদায়ন বা পদোন্নতিতে বরাবরই দক্ষতা ও পেশাদারিত্বকে মূল্যায়ন করা হয়। ছাত্রজীবনের রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা কারও জন্য বাধা বা আশীর্বাদ হয়নি। কিন্তু নানা কারণে সাম্প্রতিক সময়ে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের মাঝে পারস্পরিক অবিশ্বাস বৃদ্ধি পেয়েছে। যা কর্মপরিবেশকে বিষিয়ে তুলছে। তাছাড়া বিভিন্ন অজুহাতে পদোন্নতিযোগ্য ব্যাচগুলোর (পদ থাকা সত্ত্বেও) কাঙ্ক্ষিত পদোন্নতি না হওয়ায় সংশ্লিষ্টদের হতাশা বাড়াচ্ছে। সামরিক-বেসামরিক, নির্বাচিত বা অনির্বাচিত যেকোনো সরকারের ন্যায্য আদেশ-নিষেধ মান্য করে চলা কূটনীতিক বা সরকারি কর্মচারীদের অবশ্য কর্তব্য। গভর্নমেন্ট অব দ্য ডে-কে সার্ভ করাই সরকারি কর্মচারীদের কাজ। বিশ্লেষকরা বলছেন, আগের সরকারের আদেশ-নিষেধ মানার কারণে কোনো কর্মচারীর শাস্তির মুখোমুখি হওয়া যেমন অযৌক্তিক, তেমনি বর্তমান সরকারের নির্দেশ বাস্তবায়নে হেলা বা অনীহা অগ্রহণযোগ্য। তারা খোলাসা করে বলেন, বিদ্রোহ বা সীমালঙ্ঘন হলে ভিন্ন কথা।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacantoto4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d toto
slot toto
bacan4d
bacan4d
togel online
Toto Slot
saraslot88
Bacan4d Login
bacantoto
Bacan4d Login
bacan4d
bacan4drtp
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot maxwin
slot bacan4d
slot maxwin
bacan4d togel
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d login
bacantoto 4d
slot gacor
bacansport
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot77 gacor
JAVHD
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
gacor slot
slot gacor777
slot gacor bacan4d
bacan4d
bacansport
toto gacor
bacan4d
bacansports login
slot maxwin
slot dana
slot gacor
slot dana
slot gacor
bacansports
bacansport
bacansport
bacansport
bawan4d
bacansports
bacansport
slot gacor
judi bola
slot maxwin
slot maxwin
bacansport
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot demo
slot gacor
slot gacor
slot gacor
toto slot
slot gacor
demo slot gacor
slot maxwin
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot toto