Hot

তরুণদের সুযোগ দিতে সংশোধন হচ্ছে আইন যুক্ত হচ্ছে ৪৩ লাখ নতুন ভোটার

বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে যুক্ত হওয়া নতুন ভোটারদের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট দেওয়ার সুযোগ দিতে চায় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ লক্ষ্যে ভোটার তালিকা আইন এবং ভোটার তালিকা বিধিমালায় সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে ইসি সচিবালয়। ইতোমধ্যে এ প্রক্রিয়া প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। উপদেষ্টা পরিষদে উপস্থাপনের জন্য শিগগির প্রস্তাবটি পাঠানো হবে আইন মন্ত্রণালয়ে।

এই সংশোধনীর মাধ্যমে প্রতিবছর ২ জানুয়ারি খসড়া ভোটার তালিকা এবং ২ মার্চ চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশে বর্তমানে যে নিয়ম রয়েছে, সেটির পাশাপাশি নতুন বিধান যুক্ত করা হচ্ছে। ওই বিধান যুক্ত হলে বছরের যে কোনো সময়ে হালনাগাদ ভোটার তালিকা প্রকাশের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা পাবে নির্বাচন কমিশন। আগামী সংসদ নির্বাচনের আগে অর্থাৎ চলতি বছরের যে কোনো সময়ে খসড়া ও চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করতে পারবে। এর ফলে ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশনের তালিকায় যুক্ত হওয়া অন্তত ৪৩ লাখ ২৭ হাজারের বেশি নতুন ভোটার আগামী জাতীয় নির্বাচনে ভোট দেওয়ার সুযোগ পাবেন। এই ভোটারদের সিংহভাগই তরুণ। তবে নির্বাচন যত বিলম্ব হবে, তরুণ ভোটারের সংখ্যা তত বাড়বে। ইসি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

আইন মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, আগামী সংসদ নির্বাচনে তরুণ ভোটারদের ভোট দেওয়ার সুযোগ দিতে আইন সংশোধনে ইসির প্রস্তাব পেলে তা বিবেচনা করবে সরকার। তবে এ বিষয়ে কমিশনকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। জানতে চাইলে অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বৃহস্পতিবার যুগান্তরকে বলেন, নতুন ভোটারদের ভোটার তালিকাভুক্তির কোনো চিন্তা থাকলে সরকার তা ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখবে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে তরুণ সমাজ নেতৃত্ব দিয়েছে। তাই যতটা পারা যায় তাদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তি করা উচিত।

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ডিসেম্বরে ভোটগ্রহণের টার্গেট রেখে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। যদিও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা জানিয়েছেন।

ইসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, আগামী সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচন কমিশন চটজলদি ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম শুরু করে। চলমান ভোটার তালিকা হালনাগাদে গত ৯ এপ্রিল পর্যন্ত ৫৮ লাখ ৮৯ হাজার ৮৬৬ জন নতুন ভোটার নিবন্ধন হয়েছে, যা বিদ্যমান ভোটারের প্রায় ৫ শতাংশ। নতুনদের সিংহভাগই তরুণ। তাদের মধ্যে ৪৩ লাখ ২৭ হাজারই বাদ পড়া ভোটার। তাদের জন্ম ২০০৭ সালের ১ জানুয়ারি বা তারও আগে এবং তারা সবাই ১৮ বছরের বেশি বয়সি। অর্থাৎ ভোটার হওয়ার যোগ্য। বাকিদের বয়স আগামী বছরের ১ জানুয়ারি ১৮ বছর পূর্ণ হবে। তালিকায় প্রতিনিয়ত নতুন নতুন ভোটার যুক্ত হচ্ছেন। একইভাবে ২১ লাখ ৭ হাজার মৃত ভোটারের তথ্য সংগ্রহ করেছে ইসি।

ইসির কর্মকর্তারা বলেন, বিদ্যমান আইন অনুযায়ী হালানাগাদে যুক্ত হওয়াদের নামের খসড়া তালিকা আগামী ২ জানুয়ারি এবং চূড়ান্ত ভোটার তালিকা ২ মার্চ প্রকাশ করতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। ওই সময়ের আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হলে নতুন ভোটারদের মধ্যে যাদের বয়স ১৮ বছর বা তার বেশি, তারা ভোট দেওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হতে পারেন। এছাড়া তালিকায় চিহ্নিত হওয়া মৃত ভোটারদের নাম থেকে যাবে। এ নিয়ে আইনি জটিলতাও তৈরি হতে পারে। যদিও বর্তমান আইনে বিদ্যমান ভোটার তালিকায় নির্বাচন করার সুযোগ রয়েছে ইসির।

নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, ভোটার তালিকা আইনের সংশোধনী প্রস্তাব তৈরি করেছে নির্বাচন কমিশনের আইন সংস্কার সংক্রান্ত কমিটি। ওই কমিটির আহ্বায়ক নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ। ওই প্রস্তাব এখনো নির্বাচন কমিশনের সভায় অনুমোদন পায়নি। এটি কমিশনে অনুমোদন পেলে তা অধ্যাদেশ আকারে জারির জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।

জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ যুগান্তরকে বলেন, চলতি বছরে হালনাগাদ ভোটার তালিকা প্রকাশ করতে হলে আইন সংশোধন করতে হবে। আইন সংশোধনী প্রস্তাব নিয়ে কাজ চলমান রয়েছে।

আইনে যে সংশোধনীর প্রস্তাব : সূত্র জানায়, ভোটার তালিকা আইনের ৩-এর দফা ‘জ’ এবং ১১(১) ধারায় সংশোধনীর প্রস্তাব করেছে ইসির এ সংক্রান্ত কমিটি। প্রস্তাবিত সংশোধনীতে ধারা-৩ এর উপধারা (জ) ‘ভোটার যোগ্যতা অর্জনের তারিখ অর্থ এই আইনের অধীনে প্রতিটি ভোটার তালিকা প্রণয়ন, সংশোধন, পুনঃপরীক্ষিত বা হালনাগাদের ক্ষেত্রে যেই বৎসর উহা এইরূপে প্রণীত, সংশোধিত, পুনঃপরীক্ষিত বা হালনাগাদকৃত হয় সেই বৎসরের জানুয়ারি মাসের পহেলা তারিখ অথবা কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত তারিখ’ প্রতিস্থাপন করার সুপারিশ করা হয়েছে। আর ধারা ১১-এর ১ উপধারায় উল্লেখিত ‘০২ জানুয়ারি হইতে ০২ মার্চ পর্যন্ত’ এরপর ‘অথবা কমিশন কর্তৃক স্বীয় বিবেচনায় উপযুক্ত’ শব্দসমূহ এবং ‘পূর্বের বৎসরের ০২ জানুয়ারি’-এর পর ‘বা কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত ভোটার যোগ্যতা অর্জনের তারিখ’ শব্দসমূহ যুক্তের সুপারিশ করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, বিদ্যমান আইন অনুযায়ী চলতি বছরের ডিসেম্বর বা আগামী বছরের শুরুর আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হলে চলমান হালনাগাদ কার্যক্রমে যুক্ত হওয়া নাগরিকরা ভোট দিতে পারবেন না। এই সংশোধনী পাশ হলে সংসদ নির্বাচনের আগে যাদের বয়স ১৮ বছর হবে তারা ভোট দিতে পারবেন।

ইসির তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে দেশে ১২ কোটি ৩৭ লাখ ভোটার রয়েছেন। তাদের মধ্যে প্রায় ২৫ শতাংশ তরুণ ভোটার, যাদের বয়স ১৮ থেকে ২৯ বছর। ভোটার তালিকা হালনাগাদের পর তরুণ ভোটারের এই সংখ্যা আরও বেড়ে যাবে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
Toto Slot
slot gacor
slot gacor
slot toto
Bacan4d Login
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot bacan4d
bacan4d togel
bacan4d game
slot gacor
bacan4d login
bacantoto 4d
toto gacor
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
slot77 gacor
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
bacansports
slot toto
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d