Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
Hot

তিস্তা প্রকল্প ভারত করলে সব সমস্যার সমাধান: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

সরকারের তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে ভারত ও চীন আলাদা প্রস্তাব দিয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়নে অনেক প্রস্তাবই এসেছে। এ দেশের জনগণের জন্য যে প্রস্তাবটি অধিক লাভজনক ও উপযোগী হবে, সেটাই সরকার গ্রহণ করবে। তবে তিস্তা প্রকল্পটি ভারত করে দিলে সব সমস্যারই সমাধান হয়ে যায়। 

ভারতকে রেলপথে ট্রানজিট সুবিধা দেওয়া নিয়ে সমালোচনার জবাবে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘শেখ হাসিনা দেশ বিক্রি করে না, দেশের স্বার্থও বিক্রি করে না। কারণ, আমরা এ দেশ স্বাধীন করেছি। এতে যে কষ্ট ভোগ করেছি, সেটা আমরা জানি। যারা বিক্রির কথা বলে, তারা একাত্তরে পাকিস্তানের দালালি করেছে।’ 

গতকাল মঙ্গলবার তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবনে সাম্প্রতিক দু’দিনের ভারত সফর বিষয়ে আয়োজিত জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা জাতির পিতার মেয়ে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের মেয়ে। অন্তত এই জায়গাটায় কেউ আসতে পারবে না। সেটাই আমার গর্ব। প্রধানমন্ত্রী তো সাময়িক ব্যাপার। 

সম্প্রতি টাইম ম্যাগাজিনে প্রকাশিত এক নিবন্ধে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ সরকার তার সব প্রতিষ্ঠান নিয়ে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে নেমেছে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর প্রতি জেলাস’– এ-সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ড. ইউনূসের জন্য সব থেকে বেশি আমিই করেছি। এখন আমার বিরুদ্ধেই তিনি অভিযোগ দিয়ে বেড়াচ্ছেন। তাঁর সঙ্গে আমার জেলাসির কী আছে? শেখ হাসিনা কারও সঙ্গে জেলাসি করে না। তাঁর জন্য একবার আগে ক্ষমতায় আসতে পারিনি। আমি এর-ওর কাছে ধরনা দিয়ে বেড়াই না।

ড. ইউনূসের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘তিনি আসুন না, মাঠে আসুন। চলুক আমার সঙ্গে। আমেরিকায় বিতর্ক হয় না? আসুক কথা বলব।’ গত ২১-২২ জুন ভারত সফর বিষয়ে অভিজ্ঞতা তুলে ধরতেই মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন প্রধানমন্ত্রী। যেখানে সাংবাদিকদের প্রশ্নোত্তর পর্বে ভারত সফরের সফলতার বিভিন্ন দিক ছাড়াও দেশের সমসাময়িক রাজনীতি ও আর্থসামাজিক পরিস্থিতি এবং আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রসঙ্গ উঠে আসে। 

ভারতের কাছে দেশ বিক্রি হয় কীভাবে

‘ভারতকে রেলপথ ট্রানজিট সুবিধা দেওয়ার নামে বাংলাদেশ বিক্রির ষড়যন্ত্র চলছে’– বিভিন্ন মহলের এমন অপপ্রচার ও মুখরোচক গল্প ছড়ানো সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই বিক্রির ওজনটা কীভাবে করা হয়েছে? এখন তো ইলেকট্রনিক মেশিন আছে, আগে দাঁড়িপাল্লায় মাপা হতো। কীসে মেপে দেশ বিক্রি হচ্ছে? বাংলাদেশ স্বাধীন দেশ। মুক্তিযুদ্ধ করে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। 

বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ভারতের রেলপথ ব্যবহার ও যোগাযোগ ব্যবস্থার সম্প্রসারণ এবং চিকিৎসা ও ব্যবসা-বাণিজ্যের বিনিময়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, দেশের সার্বভৌমত্ব ও স্বকীয়তা এবং বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রেখেই আমরা কাজ করছি। কাজেই দেশ বিক্রি আমরা করি না। যারা বিক্রির কথা বলে, তারা বেচার জন্য অথবা ‘ব্যবহার করুন আমাকে’ এ কথা নিয়ে বসে থাকে।

তিনি বলেন, একটা দেশের মধ্যে অন্য দেশের ট্রানজিট দিলে ক্ষতি কী? ভারতের সঙ্গে রেল যেগুলো বন্ধ ছিল, সেগুলো আস্তে আস্তে খুলে দিচ্ছি। অর্থনীতিতে এটা বিরাট অবদান রেখে যাচ্ছে। আমরা বাংলাদেশে কি চারদিকে দরজা বন্ধ করে থাকব? ইউরোপের দিকে তাকান, সেখানে কোনো বর্ডার নেই। সেখানে কি এক দেশ আরেক দেশের কাছে বিক্রি করে দিচ্ছে?
  
সবার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রেখেই চলেছি

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থাকাটা উন্নয়ন করার সুযোগ দিচ্ছে। তাই দেশের উন্নয়ন ও মানুষের কল্যাণে যার সঙ্গে যতটুকু বন্ধুত্ব দরকার, সেটা করে যাচ্ছি। ভারত আমাদের দুঃসময়ের বন্ধু, মুক্তিযুদ্ধে রক্তের বন্ধনে এই সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। আবার চীন যেভাবে নিজেদের উন্নত করেছে, সেখান থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। সেগুলো সামনে রেখে সম্পর্ক বজায় রেখে যাচ্ছি। 

তিনি বলেন, ভারত ও চীনের মধ্যে কী সম্পর্ক, সেটা তাদের ব্যাপার। আমি সেখানে নাক গলাই না। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে তাঁর শপথ অনুষ্ঠান এবং রাষ্ট্রীয় সফর করে এলাম। চীন আমাকে দাওয়াত দিয়েছে, সেখানেও যাব। বাংলাদেশ সার্বভৌম দেশ। সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব নিয়েই চলব।

তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে ভারত ও চীনের সহায়তার প্রস্তাব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তিস্তা নিয়ে যে প্রস্তাবই আসুক, সেটা কতটুকু দেশের জন্য প্রযোজ্য, যে টাকাটা ঋণ নেব তা শোধ দেওয়ার সক্ষমতা আছে কিনা, প্রকল্প নিলে মানুষের কল্যাণে কতটুকু কাজে লাগবে– এসব বিবেচনা করেই কাজ করব। সে ক্ষেত্রে ভারত যখন বলছে, তিস্তা প্রকল্প করতে চায় এবং টেকনিক্যাল গ্রুপ পাঠাবে, সেটাও আমরা যৌথভাবে দেখব। আবার যেহেতু ভারতের সঙ্গে তিস্তার পানি বণ্টন নিয়ে অনেক দিনের সমস্যা, তাই তারা প্রকল্পটি করে দিলে সব সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। 

নোবেলের আকাঙ্ক্ষা নেই

ড. ইউনূসকে নিয়ে টাইম ম্যাগাজিনে প্রকাশিত নিবন্ধের বিষয়ে শেখ হাসিনা আরও বলেন, বিচারাধীন মামলা নিয়ে কথা বলতে চাই না। কিন্তু যখন প্রশ্ন এসেছে– দু’চারটা কথা না বললে মানুষ ভুল বুঝতে থাকবে। তবে একটা প্রশ্ন তাদের করতে পারেন, আমেরিকা হোক বা ইউরোপ হোক যে কোনো দেশে কেউ বছরের পর বছর কর ফাঁকি দিলে তাঁর বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা সেই সরকার নেয়? তার উত্তরটা কিন্তু তারা দেয়নি। দ্বিতীয়ত, শ্রমিকদের নিয়ে এত কথা হয় সেই শ্রমিকদের টাকা যদি কেউ না দেয়, মেরে খায় তার বিরুদ্ধে তারা কী ব্যবস্থা নেবে? 

ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলা সরকার নয়, শ্রমিকরা দিয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, এমডি পদে থাকা নিয়ে ড. ইউনূস কিন্তু সরকার ও অর্থমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করেন। সেই দুটি মামলায়ই হেরে যান তিনি। আর এখন লেবার কোর্টে শ্রমিকরা কল্যাণ ফান্ডের টাকা না পেয়ে ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। সেই মামলায় তিনি শাস্তি পেয়েছেন। এখানে আমার কী দোষ?

বিভিন্ন সময় ইউনূস ও তাঁর প্রতিষ্ঠানকে সহযোগিতাসহ তাঁর উত্থানের পেছনে সরকারের অবদান রয়েছে উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, অনেকে লিখেছেন– তাঁর (ইউনূস) নোবেল পুরস্কার নিয়ে আমি নাকি জেলাস! আমার সঙ্গে কারও দ্বন্দ্ব নেই। জীবনেও নোবেল প্রাইজের জন্য কোনো আকাঙ্ক্ষাও নেই। কারণ আমার লবিস্ট রাখার মতো টাকাপয়সাও নেই। হ্যাঁ, পার্বত্য শান্তিচুক্তি হওয়ার পর দেশ-বিদেশে অনেক নোবেল বিজয়ীরা আমার জন্য লিখেছেন। কই আমি তো তদবির করতে যাইনি, কারও কাছে বলতেও যাইনি। যিনি অর্থনীতি নিয়ে কাজ করলেন, ব্যাংকের একজন এমডি তিনি যখন নোবেল প্রাইজ পান, তাঁর সঙ্গে আমি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে যাবো কেন? 

ওয়ান-ইলেভেনের পর ড. ইউনূসের রাজনৈতিক দল চালুর প্রসঙ্গ তুলে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, তিনি যদি এতই জনপ্রিয় হন, তাহলে সেখানেও জনগণের সাড়া পেলেন না কেন?

সেই অর্থ বানিয়ে লাভটা কী হলো

বিদেশে অর্থ পাচারসংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কিছু মানুষ লোভী হয়ে যায়। টাকাপয়সার লোভ এত বেড়ে যায়, দেশ বাদ দিয়ে বিদেশে রাখতে গিয়ে পরে দেশ থেকেই ভাগতে হয়। সেই অর্থ বানিয়ে লাভটা কী হলো! 

তিনি বলেন, টাকা বানানো তাদের নেশার মতো পেয়ে যায়। তবুও বলব, যেখানে যেটুকু সমস্যা আছে, সেগুলো সমাধানে আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। তার জন্য আমরা আইনও তৈরি করেছি। আমরা সবচেয়ে বেশি বেসরকারি খাত খুলে দিয়েছি। 

ভারতের প্রত্যেক দলের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক 

তিস্তা ও গঙ্গা নদীর পানি বণ্টনের বিষয়ে ভারত সরকারের পদক্ষেপ নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আপত্তি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা তাদের (ভারত) অভ্যন্তরীণ বিষয়। কিন্তু ভারতের সব রাজনৈতিক দল, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সঙ্গেও সুসম্পর্ক রয়েছে।

ভারত সফরকালে কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী হেসে বলেন, আমার সঙ্গে ভারতের প্রত্যেকটি দল ও সবার সঙ্গে একটা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আছে। সোনিয়া গান্ধী ও তাঁর ছেলেমেয়ে এবং প্রণব মুখার্জির ছেলেমেয়ের সঙ্গে পারিবারিক সম্পর্ক রয়েছে। বিশেষ করে ইন্দিরা গান্ধীর পরিবারের সঙ্গে একটা পারিবারিক বন্ধন আছে। সেটা সব রাজনীতি ও সবকিছুর ঊর্ধ্বে। 

দেশে রাসেলস ভাইপার সাপের উপদ্রব বৃদ্ধি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার জন্যই জীবজন্তু। যেহেতু সাপের উপদ্রব বেড়েছে, এখন চলাফেরায় সতর্ক হতে হবে। তবে ভয় করলে মানুষকেই করতে হয়, জীবজন্তু বা সাপকে নয়।

সংবাদ সম্মেলন মঞ্চে আরও ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, কাজী জাফরউল্লাহ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এবং প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব নাঈমুল ইসলাম খান।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacantoto4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d toto
slot toto
bacan4d
bacan4d
togel online
Toto Slot
saraslot88
Bacan4d Login
bacantoto
Bacan4d Login
bacan4d
bacan4drtp
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot maxwin
slot bacan4d
slot maxwin
bacan4d togel
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d login
bacantoto 4d
slot gacor
bacansport
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot77 gacor
JAVHD
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
gacor slot
slot gacor777
slot gacor bacan4d
bacan4d
bacansport
toto gacor
bacan4d
bacansports login
slot maxwin
slot dana
slot gacor
slot dana
slot gacor
bacansports
bacansport
bacansport
bacansport
bawan4d
bacansports
bacansport
slot gacor
judi bola
slot maxwin
slot maxwin
bacansport
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot demo
slot gacor
slot gacor
slot gacor
toto slot
slot gacor
demo slot gacor
slot maxwin
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot toto