Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
Hot

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন : ‘যৌক্তিক সময়’ নিয়ে কাটছে না ধোঁয়াশা

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদ প্রায় আড়াই মাস। এরই মধ্যে রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কারে নেমেছে সরকার। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর তিন দফার সংলাপে বারবারই নির্বাচন ও সংস্কারের বিষয়টি আলোচনায় উঠেছে। তবে এখনো ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিষয়ে সরকারের স্পষ্ট ভাষ্য জানতে পারেনি রাজনৈতিক দলগুলো।

সরকার এবং রাজনৈতিক দলগুলো বলছে, প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে ‘যৌক্তিক সময়ে’ নির্বাচন। তবে যৌক্তিক সময়ের মেয়াদ কতদিন তা স্পষ্ট করছেন না কেউই। ফলে আগামী নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় নিয়েও ধোঁয়াশা কাটছে না। সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্যে ‘ঐকমত্যের অভাব’ও দেখছেন রাজনীতিকরা। তারা বলছেন, যত দ্রুত সম্ভব একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন প্রয়োজন। এজন্য নির্বাচনের সম্ভাব্য সময়ের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ঘোষণার অপেক্ষায় দলগুলো।

যদিও ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস দায়িত্ব নেওয়ার পর জাতির উদ্দেশে ভাষণে বলেছিলেন, ‘কখন নির্বাচন হবে সেটি সম্পূর্ণ রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত।’ বিএনপি-জামায়াতসহ সব দলই দ্রুত নির্বাচনের জন্য নির্বাচনি রোডম্যাপের দাবি জানিয়ে আসছে। গত ২৪ সেপ্টেম্বর বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেছিলেন, নির্বাচন যাতে আগামী আঠারো মাসের মধ্যে হতে পারে সেজন্য গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার সম্পন্ন করতে ‘পরিস্থিতি যাই হোক না কেন’ তিনি মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সমর্থন দিয়ে যাবেন।

যদিও পরে সেনাপ্রধানের বক্তব্যকে ‘নিজস্ব মতামত’ হিসাবে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ৩০ সেপ্টেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে প্রেস সচিব বলেছেন, ‘নির্বাচনের সময় নির্ভর করবে সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন ও তা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনার ওপর। তারপর সময়ের বিষয় আসবে যে নির্বাচন কবে হবে। ১৬ মাস পর নাকি ১২ কিংবা ৮ মাস পরে সেটা এখনই নির্ধারিত করা যাচ্ছে না।’

এদিকে গত বৃহস্পতিবার বেসরকারি একটি টেলিভিশনের টক শোতে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, ‘আমার কাছে মনে হয়, রিয়েলিস্টিক্যালি আগামী বছরের মধ্যে (২০২৫) ইলেকশন করাটা হয়তো সম্ভব হতে পারে।’ সরকার ‘কিছুদিনের মধ্যেই’ সার্চ কমিটির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠনের উদ্যোগ নেবে, এরপর ভোটার তালিকা হালনাগাদ হবে বলেও জানান তিনি।

এর একদিন পর শুক্রবার বিকালে কক্সবাজারে ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নির্বাচন কবে দেবে-এ ইস্যুতে সেনাপ্রধান ও আইন উপদেষ্টা যে বক্তব্য দিয়েছেন, সেটি সরকারের নয়। তখন তিনি এ-ও বলেছেন, সরকারের মুখ থেকে যখন শুনবেন তখনই মনে করবেন নির্বাচন।

এদিকে গত শনিবার প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. মাহফুজ আলম বলেছেন, নির্বাচন কমিশন গঠনে দ্রুত সার্চ কমিটি করা হবে। নির্বাচন কমিশন কারা হবেন-তা কমিটি ঠিক করবে। কমিশনাররা এসে নির্বাচনের পরবর্তী কাজ শুরু করবেন।

বিভিন্ন সময়ে সরকারের উপদেষ্টা ও দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের একই বিষয়ে পৃথক বক্তব্যে রাজনৈতিক দল ও জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হচ্ছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক দলের নেতারা। বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, তারা নির্বাচনের সম্ভাব্য সময়, রাষ্ট্রের কাঠামোগুলোতে কী ধরনের সংস্কার হবে-সে বিষয়েও রূপরেখা জানতে চান সরকারের কাছে। তারা মনে করেন, নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হলে সরকারের ওপর দলগুলোর আস্থা কমবে, তৈরি হবে সন্দেহ-অবিশ্বাস। এছাড়া একটি অনির্বাচিত সরকার বড় ধরনের সংস্কার হাতে নিলে তা বাস্তবায়নে অনেক সময় লাগতে পারে। কাজেই সরকারের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট সময়সীমা ঘোষণা করা উচিত। যৌক্তিক সময়ের মেয়াদ কতদিন তা স্পষ্ট করা উচিত। উপদেষ্টা এবং সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কাছে নির্বাচন ইস্যুতে একই ধরনের বক্তব্য আশা করেন তারা।

নির্বাচনের যৌক্তিক সময় প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে আমরা কোনো সময় বেঁধে দেইনি। আমরা বলছি যুক্তিযুক্ত সময়। একজন বিজ্ঞ, শিক্ষিত ও বুদ্ধিমান মানুষের পক্ষে এটা না বোঝার তো কোনো কারণ নেই।’

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, সরকারের সঙ্গে কয়েক দফা আলাপ-আলোচনা হয়েছে, আগামীতে আরও হবে-এমনটা বর্তমান সরকারের পক্ষ থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। এই আলোচনার ভিত্তিতেই আমরা নির্বাচনের যৌক্তিক সময়টা নির্ধারণ করব। এই সরকারকে অস্বস্তিতে ফেলতে চাই না বলেই আমরা সময়টাকে গুরুত্ব দিচ্ছি না। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের মধ্যে কিছু ক্ষেত্রে হয়তো সমন্বয়হীনতা কাজ করছে।

যৌক্তিক সময়ের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আমরা নাতিদীর্ঘ একটা সময় বোঝাতে চেয়েছি। যাতে ওনারা (অন্তর্বর্তী সরকার) সময় নষ্ট না করেন। আবার অতি তড়িঘড়ি করতে গিয়ে মৌলিক যে সংস্কারগুলো আছে সেটি যদি না হয়, তাহলে নির্বাচন নিরপেক্ষ হওয়ার সম্ভাবনা কম। এজন্য সবাই যৌক্তিক সময়ের কথা বলছেন। কোনো রাজনৈতিক দলই সময়সীমা বেঁধে দেয়নি। উপদেষ্টা আসিফ নজরুল একটা বক্তব্য দিয়ে বলেছেন, সেটি তার নিজস্ব বক্তব্য। শনিবার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সংলাপে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) প্রেসিডেন্ট কর্নেল (অব.) অলি আহমদ সংস্কারের ওপর জোর দেন। সংস্কারের পরপরই নির্বাচন চেয়েছেন তিনি।

প্রায় একই ধরনের মন্তব্য করেছেন গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম নেতা ও নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টাদের কথায় বোঝা যাচ্ছে যে, যৌক্তিক সময় মানে কোনো নির্ধারিত সময় তারা বোঝাচ্ছেন না। আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল এক টিভি অনুষ্ঠানে গিয়ে যা বলেছেন তা হয়তো তার ব্যক্তিগত ধারণা। শেষ পর্যন্ত প্রধান উপদেষ্টা এ সম্পর্কে সঠিক ঘোষণা দেবেন। তিনি বলেন, এখন কয়েকটি বিষয়ে সংস্কার কার্যক্রম চলছে, এটা শেষ হলে হয়তো আমরা বলতে পারব একটা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নির্বাচন দেওয়া উচিত।

তবে আগামী বছরের মধ্যেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন হওয়া উচিত বলে মনে করেন বাংলাদেশ বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। তিনি যুগান্তরকে বলেন, আমরা বলেছি, স্বল্পতম সময়ে একটা অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন করা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান কাজ। আগামী বছরের (২০২৫ সাল) ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন করে তারা (সরকার) যদি বেরিয়ে যেতে পারে, তাহলে দেশবাসী তাদের সাধুবাদ জানাবে, প্রশংসা করবে। তিনি বলেন, সংবিধান সংশোধনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা সংসদে করবেন। নির্বাচনের জন্য এখন থেকে এক বছর যথেষ্ট সময়।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, নির্বাচনের নির্ধারিত সময় নিয়ে আমরা কথা বলিনি। আমরা বলেছি সংস্কার দরকার। কারণ যে পরিবর্তনটা হলো এটা তো শুধু ক্ষমতার পরিবর্তনের জন্য নয়। যৌক্তিক সময় নিয়ে আমরা কোনো নির্ধারিত সময় উল্লেখ করিনি। আমার বাংলাদেশ পার্টি-এবি পাটির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করলে দেড় থেকে ২ বছরের মধ্যে নির্বাচন সম্ভব।

১২ দলীয় জোটের মুখপাত্র শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, যৌক্তিক সময় বলতে আমার ২০২৫ সালের জুনকে বুঝিয়েছি। একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যা যা করা দরকার আমরা মনে করি জুনের মধ্যেই তা সম্পন্ন করা সম্ভব। সংস্কার কার্যক্রম নির্বাচিত সরকারও করতে পারবে।

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, সংস্কারের জন্য অনেক সময় দরকার। আমার ধারণা, সরকারের পক্ষ থেকে নির্বাচনের যৌক্তিক সময় কখন সেটা বলছে না, কারণ এতে রাজনৈতিক দলগুলো প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে। আমি মনে করি এই সংস্কার কাজগুলো শেষ করতে ২ বছর লাগবে। আমাদের দলের কথা হচ্ছে-নির্বাচন একটু বিলম্বে হলেও রাষ্ট্র সংস্কারের প্রশ্নে আমাদের অবস্থান আছে, থাকবে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacantoto4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d toto
slot toto
bacan4d
bacan4d
togel online
Toto Slot
saraslot88
Bacan4d Login
bacantoto
Bacan4d Login
bacan4d
bacan4drtp
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot maxwin
slot bacan4d
slot maxwin
bacan4d togel
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d login
bacantoto 4d
slot gacor
bacansport
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot77 gacor
JAVHD
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
gacor slot
slot gacor777
slot gacor bacan4d
bacan4d
bacansport
toto gacor
bacan4d
bacansports login
slot maxwin
slot dana
slot gacor
slot dana
slot gacor
bacansports
bacansport
bacansport
bacansport
bawan4d
bacansports
bacansport
slot gacor
judi bola
slot maxwin
slot maxwin
bacansport
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot demo
slot gacor
slot gacor
slot gacor
toto slot
slot gacor
demo slot gacor
slot maxwin
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot toto