থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্রেথা ক্ষমতাচ্যুত: মন্ত্রী নিয়োগে সংবিধান লঙ্ঘন
আদালতের রায়ে ক্ষমতাচ্যুত হলেন থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিন। গতকাল বুধবার দেশটির সাংবিধানিক আদালত তাকে অপসারণের আদেশ দেয়। কারাদণ্ড ভোগ করা এক আইনজীবীকে মন্ত্রী নিয়োগ দেওয়ায় আদালত এই রায় দেয়। একই আদালত প্রধান বিরোধী দল মুভ ফরোয়ার্ড পার্টি বিলুপ্ত করে দলটির সাবেক নেতাকে ১০ বছরের জন্য রাজনীতি থেকে নিষিদ্ধ করার এক সপ্তাহ পর এই রায় এসেছে। প্রধানমন্ত্রীকে অপসারণের এই আদেশ দেশটিতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন অনেকে।
রায় পড়ার সময় বিচারক পুণ্য উদ্চাচন বলেন, ‘আদালত ৫-৪ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় রায় দিয়েছে যে, সংবিধান অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর মন্ত্রিত্ব বাতিল করা হয়েছে, কারণ তিনি এই মন্ত্রীকে নিয়োগে সততা দেখাননি। পুণ্য বলেছিলেন যে, স্রেথা নিশ্চয়ই ২০০৮ সালে আইনজীবী পিচিত চুয়েনবানের দোষী সাব্যস্ত হওয়ার কথা জানতেন, যখন তিনি তাকে মন্ত্রিসভায় নিয়োগ করেছিলেন। এক বছরেরও কম সময় দায়িত্ব পালনের পর স্রেথাকে চলে যেতে হচ্ছে। সাংবিধানিক আদালত কর্তৃক বহিষ্কৃত ফিউ থাই পার্টির তৃতীয় প্রধানমন্ত্রী তিনি। আদালতের রায়ে শুধু স্রেথা নয়, তার পুরো মন্ত্রিসভাকেও বরখাস্ত করা হয়েছে এবং নতুন প্রধানমন্ত্রী বেছে নিতে পার্লামেন্টকে এখন বৈঠক করতে হবে।
আদালতের রায়ের পর এক প্রতিক্রিয়ায় প্রধানমন্ত্রী স্রেথা সাংবাদিকদের জানান, তিনি তার দায়িত্ব পালনে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন। তবে তিনি আদালতের রায় মেনে সরে দাঁড়াবেন। তার সরকারের নীতি পরবর্তী সরকার অব্যাহত রাখবে কি না, তা নিয়ে তিনি সংশয় প্রকাশ করেন।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের আগস্টে প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন স্রেথা থাভিসিন। তখন ফিউ থাই পার্টিকে সেনাবাহিনীর মনোনীত প্রার্থীদের সঙ্গে জোট করে সরকার গঠন করতে হয়েছিল। স্রেথার বিরুদ্ধে যে অভিযোগে আদালত বুধবার এই রায় দিল, আদালতে সেই অভিযোগটি করেছিলেন সেনাবাহিনীর নিয়োগকৃত ৪০ জন সিনেটর। পিচিট চুয়েনবান নামের যে আইনজীবীকে সরকারে নিয়োগ দিয়েছিল, তিনি ২০০৮ সালে জমি-সংক্রান্ত একটি মামলায় সুপ্রিম কোর্টের কর্মকর্তাদের ঘুষ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। এরপর তাকে ছয় মাসের কারাদণ্ডও দেওয়া হয়।