থ্রেড নিয়ে টুইটার ও মেটার লড়াই, আইনি ব্যবস্থার হুঁশিয়ারি
টুইটার মালিক ইলন মাস্ক বলেছেন, “প্রতিযোগিতা ঠিক আছে, কিন্তু প্রতারণা মানব না।”
টুইটার তার প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যাপ থ্রেডসের জন্য মেটার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিয়েছে।
টুইটারের বিকল্প হিসাবে মেটা বাজারে এনেছে ‘থ্রেডস অ্যাপ’। এক দিনে এক কোটি মানুষ থ্রেড ব্যবহার করতে শুরু করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট বলছে- টুইটার জানিয়েছে মেটার বিরুদ্ধে তারা আইনি ব্যবস্থা নিতে চলেছে।
অন্যদিকে সাবেক টুইটার কর্মীরা থ্রেডস তৈরি করতে সহায়তা করেছেন, এমন দাবি অস্বীকার করেছে মেটা।
বুধবার চালু হওয়ার পর দুই দিনেই তিন কোটির বেশি ব্যবহারকারী যুক্ত হয়েছেন থ্রেডসে। এর নির্মাতা মেটার কর্তারা থ্রেডসকে টুইটারের বিকল্প হিসেবেই তুলে ধরছেন ব্যবহারকারীদের সামনে।
বিবিসি লিখেছে, থ্রেডস দেখতে অনেকটাই টুইটারের মত। ব্যবহার পদ্ধতিতেও অনেক মিল। এর নিউজ ফিড এবং রিপোস্ট করার পদ্ধতিও হুবুহু এক।
সেমাফোর নামের একটি সংবাদমাধ্যমের বরাতে বিবিসি জানিয়েছে, বুধবার মেটার সিইও মার্ক জুকারবার্গকে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন টুইটারের আইনজীবী অ্যালেক্স স্পিরো।
থ্রেডস তৈরি করতে ‘পরিকল্পিত, ইচ্ছাকৃত এবং বেআইনিভাবে টুইটারের গোপনীয় ব্যবসায়িক কৌশল এবং অন্যান্য মেধাস্বত্ব’ ব্যবহারের অভিযোগ আনা হয়েছে সেখানে।
আইনজীবী স্পিরো অভিযোগ করেছেন, টুইটারের কয়েক ডজন সাবেক কর্মীকে মেটা এ কাজে লাগিয়েছে, যাদের পক্ষে টুইটারের অতি গোপনীয় তথ্যগুলো জানার সুযোগ ছিল এবং শেষ পর্যন্ত ওই তথ্যই টুইটারের ‘নকল’ থ্রেডস তৈরিতে সাহায্য করেছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, মেটাকে অবিলম্বে টুইটারের ‘ট্রেড সিক্রেট’ এবং অন্যান্য অতি গোপনীয় তথ্য ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। তা না হলে টুইটার তার মেধাস্বত্ব রক্ষায় কঠোর পদক্ষেপ নেবে।
অভিযোগের উত্তরে মেটার মুখপাত্র অ্যান্ডি স্টোন এক পোস্টে বলেছেন, থ্রেডসের প্রকৌশলী দলে এমন কেউ নেই, যিনি আগে টুইটারে কাজ করেছেন।
থ্রেডস তৈরি করেছে মূলত মেটার অ্যাপ ইন্সটাগ্রামের কর্মীরা। তবে সম্পূর্ণ আলাদাভাবেই এটা কাজ করে। ইতোমধ্যে একশর বেশি দেশে থ্রেডস অ্যাপ ব্যবহারের সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
মেটার মুখপাত্র অ্যান্ডি স্টোন নতুন অ্যাপেই অভিযোগের জবাব দিয়ে বলেছেন, থ্রেডের ইঞ্জিনিয়ারিং টিমে টুইটারের কোনো সাবেক কর্মী নেই। ফলে এই অভিযোগের কোনো অর্থ হয় না।
টুইটার-কর্তা ইলন মাস্ক অবশ্য কিছু বলেননি। টুইটারের সিইও বলেছেন, তাদের হামেশা নকল করা হয়, কিন্তু টুইটার কমিউনিটির কোনো ডুপ্লিকেট তৈরি করা যায় না। যে একশটা দেশে থ্রেডস চালু করা হয়েছে, তার মধ্যে ইইউ-র কোনো দেশ নেই। কারণ, সেখানে ডেটা নিরাপত্তা আইন খুবই কড়া।
অতঃপর চালু হল মেটার নতুন অ্যাপ ‘থ্রেডস’
টুইটারকে প্রতিদ্বন্দ্বিতার চ্যালেঞ্জ জানানো এই অ্যাপ নিয়ে মাস্ক আর জাকারবার্গের দ্বৈরথও প্রকাশ্যে এসেছে।
থ্রেডস উন্মুক্ত করার পর টুইটারে ১১ বছরের নীরবতা ভেঙে জনপ্রিয় একটি মিম পোস্ট করেছেন জাকারবার্গ, যেখানে প্রায় একই রকম দেখতে দুই স্পাইডারম্যানকে পরস্পরের দিকে আঙুল তাক করে থাকতে দেখা যায়।
অল্প সময়ের মধ্যে টুইটারে একটি ট্রেন্ডে পরিণত হয় ‘থ্রেডস’ শব্দটি।
জবাবে মাস্ক লেখেন, ইনস্টাগ্রামে বেদনা লুকানোর মিথ্যা সুখে ডুবে থাকার চেয়ে টুইটারে অপরিচিতদের আক্রমণের শিকার হওয়া ভালো।