দানব তারাদের কথা
হার্টজস্প্রাং-রাসেল ডায়াগ্রামে সাজানো নক্ষত্রের বর্ণ ও উজ্জ্বলতা বিস্তৃতির পরিসর দেখায়। শুধু তা-ই নয় এই ডায়াগ্রাম বেশ কিছু তথ্যও দেয়। যেমন, কিছু নক্ষত্রের বয়স আমাদের সূর্যের চেয়ে বেশি। আকার, উজ্জ্বলতা এবং ভর কেমন—এগুলোর পার্থক্যও গড়ে দেয় এই ডায়াগ্রাম।
দানব তারাগুলো বিরল। নীল দানব তারাগুলেঅ সবচেয়ে উষ্ণ ও সবচেয়ে বড় আকারের নক্ষত্র। এই নক্ষত্রগুলো মহাকর্ষ বলের আভ্যন্তরীণ টান সহ্য করার জন্য অধিক হারে শক্তি উৎপাদন করে। কয়েক মিলিয়ন বছর জীবন ধারণের জন্য এ সমস্ত জ্বালানি বেশি পরিমাণে গ্রহণ করে।
বৈশিষ্ট্যময় উজ্জ্বল নীল আলো উন্মুক্ত নক্ষত্রগুচ্ছের ওপর আধিপত্য বিস্তার করে। ফলে সর্পিল ছায়াপথগুলো এখন নক্ষত্র গঠনের পথ অনুসরণ করে। ঠিক এর বিপরীত রক্তিম দৈত্যাকার নক্ষত্রগুলো। এরা আরও সাধারণ।
স্বল্প-ভরের নক্ষত্রগুলোর কেন্দ্রে সাধারণ ফিউশন বিক্রিয়ায় হাইড্রোজেন থেকে হিলিয়াম রূপান্তর করে শক্তি উৎপন্ন করে। রক্তিম দৈত্যাকার নক্ষত্রের কোর মহাকর্ষের অধীনে সংকুচিত হতে শুরু করে। একই সাথে উক্ত স্থানটি আরও উষ্ণ হয়। ফলে পরবর্তীতে পারমাণবিক দহনের আরও জটিল পর্যায় দেখা দেয়।
উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির ফলে নক্ষত্রের বাইরের স্তর বা লেয়ার ফুলে-ফেঁপে ওঠে।
এতে বিকশিত নক্ষত্রটির পৃষ্ঠে শীতল তাপমাত্রা বজায় থাকে। ফলে গাঢ় লাল রঙের দেখা পাওয়া যায়। গ্রহীয় নীহারিকা বা সুপারনোভার বিস্ফোরণে এই ধরনের নক্ষত্রগুলো তাদের জীবনযাত্রার ইতি টানে।
দানব তারাগলো সূর্যের চেয়ে ১০ থেকে ১০০ গুণ বড় এবং ১,০০০ গুণ উজ্জ্বল হয়।
পরিমণ্ডল
বিশাল আকৃতির এবং উজ্জ্বল নক্ষত্রগুলো সুপারজায়েন্ট এবং হাইপারজায়েন্ট হিসেবে অধিক পরিচিত। সবচেয়ে বড় নক্ষত্রের সন্ধান এখন পর্যন্ত ভিওয়াই ক্যানিস মেজোরিস। একটা রক্তিম হাইপারজায়েন্ট। আকারে সূর্যের চেয়ে প্রায় ২,০০০ গুণ বড়। উজ্জ্বলতায় প্রায় ৫,০০,০০০ গুণ বেশি উজ্জ্বল। সূর্যের জায়গায় একে স্থাপন করলে এর ব্যাস বৃহস্পতির কক্ষপথকে ছাড়িয়ে যাবে।