Bangladesh

দায়সারা প্রকল্প তৈরির খেসারত, বছর না ঘুরতেই সংশোধন প্রস্তাব

দায়সারাভাবে প্রকল্প তৈরির খেসারত দিচ্ছে হচ্ছে রাষ্ট্রকে। প্রকল্প অনুমোদনের বছর ঘুরতে না ঘুরতেই প্রথম সংশোধনীর প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে। এক্ষেত্রে বাড়ছে ব্যয় ও মেয়াদ। ধারণার ভিত্তিতে জমির দাম নির্ধারণের ফলে ভ‚মি অধিগ্রহণে দেওয়া বরাদ্দে সংকুলান হচ্ছে না।

এমনকি প্রকল্পটিতে বাস্তব কাজের অগ্রগতি শূন্য। এমন ঘটনা ঘটেছে ‘রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন’ শীর্ষক প্রকল্পে। যে কারণে ১৩ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভায় বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েন প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট ফর ইনক্লুসিভ ফিন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আইএনএম) নির্বাহী পরিচালক ড. মোস্তফা কে. মুজেরী মঙ্গলবার বলেন, এটা অর্থের অপচয় ছাড়া কিছুই নয়। কেননা ৩ বছর আগে যদি জমি অধিগ্রহণ করা শেষ হতো এবং জেলা প্রশাসনের হিসাব ঠিক থাকত, তাহলে এখন বাড়তি টাকা লাগত না। এভাবে তড়িঘড়ি করে প্রকল্প অনুমোদনের ফলে রাষ্ট্রীয় অর্থের যে ক্ষতি হচ্ছে এটা মেনে নেওয়া যায় না। এজন্য যারা দায়ী তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সিস্টেম থাকতে হবে। না হলে দিনের পর দিন একই ঘটনা ঘটবে। এটা হতে পারে না।

সূত্র জানায়, প্রকল্পটি গত বছরের ১৪ জুন অনুমোদন দেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এটির মোট ব্যয় ধরা হয়েছিল ১ হাজার ৮৬৭ কোটি টাকা। এখন প্রথম সংশোধনীর মাধ্যমে ৪০৩ কোটি ৩৪ লাখ টাকা বাড়িয়ে মোট ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছে ২ হাজার ২৭০ কোটি ৪২ লাখ টাকা। এক্ষেত্রে ব্যয় বৃদ্ধির হার দাঁড়াচ্ছে ২১ দশমিক ৬ শতাংশ।

এদিকে প্রকল্পটির মেয়াদ ধরা হয় ২০২২ সালের জুলাই থেকে ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত। কিন্তু এখন এক বছর বাড়িয়ে ২০২৭ সাল পর্যন্ত করা হচ্ছে। এক বছর পেরিয়ে গেলেও এই প্রকল্পে খরচ হয়েছে ৫৮৬ কোটি ২৭ লাখ টাকা। এ হিসাবে আর্থিক অগ্রগতি ৩১ দশমিক ৪৪ শতাংশ।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক ও বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক এজেডএম মোস্তাক হোসেন মঙ্গলবার বলেন, জমি অধিগ্রহণই এখানে মূল সমস্যা। বাড়তি টাকাটা দিয়ে দিলে আর সমস্যা থাকে না। দায়সারাভাবে প্রকল্প নেওয়া হয়েছে কিনা -এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘না তেমনটা নয়। সম্ভাব্যতা সমীক্ষা করেই প্রকল্পটির ডিপিপি তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু জমি অধিগ্রহণের বিষয়টি সম্পূর্ণই জেলা প্রশাসকের হাতে। তিনি প্রথমদিকে যে হিসাব দিয়েছিলেন সেভাবেই বরাদ্দ রাখা হয়। অথচ এখন চ‚ড়ান্ত হিসাবে ব্যয় বেড়ে গেছে। এখানে বাস্তব কারণেই ব্যয় ও মেয়াদ বাড়াতে হচ্ছে।’ অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিদ্যমান বরাদ্দে প্রকল্পের প্রথম ফেজের (অংশের) কাজ হবে। আশা করছি, মেয়াদ ও ব্যয় কোনোটিই বাড়বে না।

আলোচ্য প্রকল্পটি নিয়ে পিইসি সভায় মোটা দাগে দুটি প্রশ্ন উত্থাপন করা হয়। প্রথমত, প্রকল্প প্রণয়ন, অনুমোদন ও দরপত্র প্রক্রিয়ায় অহেতুক সময়ক্ষেপণ। দ্বিতীয়ত, জমি অধিগ্রহণের প্রাক্কলিত দরের চেয়ে বাস্তব দরের মধ্যে বিস্তর ফারাক।

এ নিয়ে যৌক্তিক প্রশ্ন তুললে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, প্রকল্পটি ডিপিপি প্রস্তুত ও চ‚ড়ান্ত করা হয় ২০১৮ সালের রেট শিডিউলে। ২০২০ সালে প্রকল্প প্রণয়নের কাজ শুরু হলেও ২০২২ সালের জুনে অনুমোদন পায় এবং কাজ শুরু করার জন্য ২০২৩ সালে এসে দরপত্র প্রক্রিয়া শুরু করা হয়। কিন্তু সব কিছুর দাম বেড়ে যাওয়ায় ঠিকাদাররা এখন ২০১৮ সালের পুরানো রেট শিডিউলে কাজ করতে নারাজ। ফলে কোনো গত্যন্তর না থাকায় ২০২৩ সালের নতুন রেট শিডিউলে দরপত্র আ হ্বান করতে গিয়ে এখন ব্যয় ও মেয়াদ দুটোই বাড়ছে।

অপরদিকে জমি অধিগ্রহণ নিয়েও বড় ধরনের ব্যত্যয় হয়েছে। প্রস্তাবিত জমির অধিগ্রহণ মূল্য ধরে যেভাবে প্রাক্কলন করা হয়, সেই বরাদ্দ দিয়ে অধিগ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। অতিরিক্ত গুনতে হচ্ছে ১৭২ কোটি ১৮ লাখ টাকা। তবে পরিকল্পনা কমিশন এত মূল্যবৃদ্ধির বিষয়টি মানতে নারাজ।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
Toto Slot
slot gacor
slot gacor
slot toto
Bacan4d Login
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot bacan4d
bacan4d togel
bacan4d game
slot gacor
bacan4d login
bacantoto 4d
toto gacor
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
slot77 gacor
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
bacansports
slot toto
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d