Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
Bangladesh

দিনভর বিক্ষোভ, ক্ষমা চাইল পুলিশ, সন্ধ্যায় ছাত্র গুলিবিদ্ধ

শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে গতকাল শনিবার গাজীপুরে দিনভর বিক্ষোভ ও সমাবেশ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং জাতীয় নাগরিক কমিটি। বিক্ষোভের মুখে দায়িত্বে অবহেলার কথা স্বীকার করে ক্ষমা চেয়েছেন মহানগর পুলিশ কমিশনার। বিক্ষোভ শেষে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে দুর্বৃত্তদের গুলিতে এক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।

শিক্ষার্থীদের ওপর শুক্রবার রাতের হামলার ঘটনায় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) প্রত্যাহার ও ১৬ জনকে আটক করা হয়েছে। এক দিনের মধ্যে হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের আশ্বাসে বিক্ষোভ কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছেন ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। এরপরই ঘটে গুলির ঘটনা।

গুলিবিদ্ধ মোবাশ্বের হোসেন (২৬) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন গাজীপুর জেলার একজন সদস্য ও ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজের ছাত্র। তাঁর বাড়ি নগরের হারিনাল দক্ষিণপাড়া এলাকায়। প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা জানান, শহরের জোর পুকুরপাড়ের দিক থেকে মোটরসাইকেলে আসা দুর্বৃত্তরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থাকা শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে পালিয়ে যায়।

গুলিতে আহত মোবাশ্বের হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে দাঁড়িয়ে একে অপরের কাছ থেকে বিদায় নিচ্ছিলেন। তখন জোড় পুকুরপাড়ের দিক থেকে একটি মোটরসাইকেলে দুর্বৃত্তরা এসে হঠাৎ তাঁদের লক্ষ্য করে একটি গুলি ছুড়ে পালিয়ে যায়। গুলিটি তাঁর ডান হাতের এক পাশে লাগে। আশপাশের লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।

ওই হাসপাতালের চিকিৎসক মো. মনজুর মোর্শেদ সাংবাদিকদের জানান, গুলিটি লেগেছে মোবাশ্বের হোসেনের ডান বাহুতে। তিনি সার্জারি বিভাগে চিকিৎসাধীন।হাসপাতাল সূত্র জানায়, রাত ১১টার দিকে তাঁর অস্ত্রোপচারের প্রস্তুতি চলছিল।

গাজীপুর সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সিদ্দিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, একজন ছাত্রের হাতে গুলি লেগেছে। তাঁকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। পুলিশ ঘটনাটি খতিয়ে দেখছে।

গুলিবিদ্ধ শিক্ষার্থী মোবাশ্বের হোসেনকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। গতকাল রাতে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে

গুলিবিদ্ধ শিক্ষার্থী মোবাশ্বের হোসেনকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। গতকাল রাতে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে

প্রতিবাদ সমাবেশ

স্থানীয় লোকজন ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গাজীপুরের ধীরাশ্রম এলাকায় শুক্রবার রাতে সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও মারধরের ঘটনা ঘটে। শিক্ষার্থীরা জানান, ওই বাড়িতে হামলা-লুটপাটের খবর পেয়ে প্রতিহত করতে গেলে তাঁদের ওপর হামলা হয়। হামলায় ১৫-১৬ জন আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

এর প্রতিবাদে গতকাল সকাল থেকে জেলা শহরের রাজবাড়ির মাঠ ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মী ও শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন। বেলা দুইটার দিকে ডিসি অফিসের সামনের রাস্তায় বসে বিক্ষোভ ও স্লোগান দিতে থাকেন তাঁরা। তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক সারজিস আলম।

এর আগে শনিবার ভোর চারটার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফেসবুক পেজে বিক্ষোভ সমাবেশের ঘোষণা দেওয়া হয়। বলা হয়, ‘গাজীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠকদের ওপর আওয়ামী সন্ত্রাসী মোজাম্মেল-জাহাঙ্গীরের চাপাতি বাহিনীর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশে আপামর ছাত্র-জনতা ও কেন্দ্রীয় নেতারা থাকবেন।’

গতকাল বিকেল সাড়ে চারটার দিকে গাজীপুরের পুলিশ কমিশনার নাজমুল করিম খান বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে যান। তিনি গাজীপুর সদর থানার ওসি আরিফুর রহমানকে প্রত্যাহার করার ঘোষণা ও হামলার ঘটনায় ১৬ জনকে আটকের কথা জানান। আজ রোববারের মধ্যে সব আসামিকে গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিলে বিকেল পাঁচটার দিকে শিক্ষার্থীরা কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন।

শুক্রবার রাতের হামলা

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার রাত নয়টার দিকে সাবেক মন্ত্রী মোজাম্মেল হকের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর শুরু হয়। তখন স্থানীয় মসজিদের মাইকে ‘মন্ত্রীর বাড়িতে ডাকাত পড়েছে’ ঘোষণা দিয়ে লোকজনকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়। এরপর একদল লোক এসে বাড়িটি ঘিরে ফেলে এবং মারধর শুরু করে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা ও আহত শিক্ষার্থীরা বলেন, ধানমন্ডিতে শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনার পর তাঁরা গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় প্রচার করেন, কোথাও ভাঙচুর হলে তাঁদের যেন জানানো হয়। শুক্রবার রাতে তাঁদের কাছে খবর আসে মোজাম্মেল হকের বাড়িতে হামলা ও লুটপাট হচ্ছে। এটি শোনার পর প্রতিহত করতে শিক্ষার্থীরা রওনা হন। সেখানে গিয়ে দেখা যায় লুটপাট হচ্ছে। বাধা দিলে পেছন থেকে হুট করে অনেক মানুষ জড়ো হয়ে যায়। মুখ বাঁধা কিছু লোক রামদা নিয়ে তাঁদের ওপর হামলা করে। অন্য শিক্ষার্থীরা আসার আগে ওই ১৫ জনকে ছাদে নিয়ে বেধড়ক পেটায়, কুপিয়ে জখম করে। পরে অন্য শিক্ষার্থীরা ঘটনাস্থলে গেলে তাঁদের ওপরও হামলা হয়। পুলিশকে জানানো হলে দুই ঘণ্টা পর ঘটনাস্থলে পুলিশ ও সেনাবাহিনী গিয়ে আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে।

হামলার পর আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। পরে গুরুতর আহত সাতজনকে পাঠানো হয় ঢাকায়। আহত শিক্ষার্থীদের দেখতে রাত তিনটার দিকে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক সারজিস আলম।

হামলার প্রতিবাদে এর আগে রাত পৌনে দুইটার দিকে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা।

গাজীপুর সদর জোনের সহকারী কমিশনার দ্বীনে আলম রাত ১১টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, হামলার ঘটনায় জড়িত ১৬ জন পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

জয়দেবপুর থানার পরিদর্শক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, হামলার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল রাত থেকে শহরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান শুরু করেছে যৌথ বাহিনী।

‘ছাত্র-জনতা আর ছাড় দেবে না’

শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, ‘খুনি শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। বাংলাদেশে যে দু-তিনটি জেলায় রণক্ষেত্র হয়েছিল, যে দু-তিনটি জেলার ছাত্র-জনতা বুক পেতে দিয়ে, রক্ত দিয়ে, সবার সামনে থেকে এই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিয়েছে, তার একটি জেলা হলো গাজীপুর। এই অভ্যুত্থানে যারা সহযোদ্ধা, তারা তখনো জীবন দিতে প্রস্তুত ছিল, এখনো জীবন দিতে প্রস্তুত আছে। কিন্তু ওই খুনি হাসিনা, খুনি জাহাঙ্গীরের দোসররা এই গাজীপুরে যদি আবার উৎপাত করতে চায়, ছাত্র-জনতা তাদের আর ছাড় দেবে না।’

শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে এর আগে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতা-কর্মীরা। গতকাল দুপুর ১২টার দিকে গাজীপুর জেলা শহরের রাজবাড়ি মাঠে জাতীয় নাগরিক কমিটির গাজীপুর জেলা ও মহানগর শাখার আয়োজনে এ বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। পরে ছাত্ররা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে নগরের বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ করেন।

বিক্ষোভ সমাবেশে জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় সংগঠক আলী নাসের খান বলেন, ছাত্র-জনতার ওপর হামলার ঘটনায় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দোষী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও বিচারের আওতায় আনতে হবে। আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল করে দ্রুত বিচার আইনে ফ্যাসিবাদীদের বিচার করতে হবে। তাঁদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও সম্পদ জব্দ করতে হবে।

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য এম সোয়েব, গাজীপুর মহানগরের গাছা থানা প্রতিনিধি আনিসুর রহমান, টঙ্গী পশ্চিম থানা প্রতিনিধি নাবিল ইউসুফ প্রমুখ।

একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক

শুক্রবার রাতের হামলার ঘটনায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সাতজন চিকিৎসাধীন। তাঁদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান গতকাল দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, গাজীপুর থেকে মারধরে আহত হয়ে শুক্রবার মধ্যরাতে মোট ১১ জন এসেছিলেন। তাঁদের মধ্যে চারজন প্রাথমিক চিকিৎসা নেন। বাকি সাতজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে কাশেম (১৭) নামের একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাকে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়েছে।

চিকিৎসাধীন অন্য ছয়জন হলেন ইয়াকুব (২৪), শুভ শাহরিয়ার (১৬), গৌরভ ঘোষ (২২), আবদুর রহমান ইমন (২০), সাব্বির খান হিমেল (২২) ও কাজী ওমর হামজা (২১)।

আহত ব্যক্তিদের দেখতে গতকাল সকাল সোয়া ১০টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। সেখানে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ছাত্রদের ওপর হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের প্রত্যেককে চিহ্নিত করে বিচারের মুখোমুখি করা হবে।

ওসি প্রত্যাহার, ক্ষমা চাইলেন কমিশনার

হামলার ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে গাজীপুর সদর থানার ওসিকে প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়ে মহানগর পুলিশের কমিশনার নাজমুল করিম খান বলেন, ‘শুক্রবার রাতে যে ঘটনাটি ঘটেছে, তাতে পুলিশ বাহিনীর পক্ষ থেকে আমি ক্ষমা চাচ্ছি। আমি ব্যর্থতা স্বীকার করে নিচ্ছি। হামলাকারী কাউকে ছাড়া হবে না, প্রতিটি হামলার জবাব দেওয়া হবে। যেসব পুলিশ রেসপন্স করতে দেরি করেছে, তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।’

নাজমুল করিম খান বলেন, ‘আমি শুনেছি, আমার ওসি দুই ঘণ্টা পর আপনাদের ডাকে সাড়া দিয়েছেন। আমি এখানে দাঁড়িয়ে বললাম, তাঁকে সাসপেন্ড (বরখাস্ত) করব। আমি বলতে চাই, যারা এই ফ্যাসিবাদের সঙ্গে আঁতাত করেছে, তাদের পুলিশে চাকরি করতে দেওয়া যাবে না।’

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
slot demo
bacan4d
bacan4d
Toto Slot
saraslot88
Bacan4d Login
bacantoto
Bacan4d Login
bacan4d
bacan4drtp
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot maxwin
slot bacan4d
slot maxwin
bacan4d togel
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d login
bacantoto 4d
slot gacor
bacansport
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot77 gacor
JAVHD
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
gacor slot
slot gacor777
slot gacor bacan4d
bacan4d
toto gacor
bacan4d
bacansports login
slot maxwin
slot dana
slot gacor
slot dana
slot gacor
bacansports
bacansport
bacansport
bacansport
bawan4d
bacansports
bacansport
slot gacor
judi bola
slot maxwin
slot maxwin
bacansport
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot demo
slot gacor
slot gacor
slot gacor
toto slot
slot toto