Hot

দিল্লি ষড়যন্ত্রে বিদ্রোহের অপচেষ্টা ও আন্দোলন রহস্য,প্রশাসনে ওরা এখনো সক্রিয়

মাচা পদ্ধতিতে মুরগি চাষ দেশে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ঘরের মেঝের উপর মাচা তৈরি করে সেখানে মুরগি পালন করা হয়। মাচার একটি খুঁটি ভেঙ্গে গেলে বা নড়বড়ে হলে মাচা ভেঙ্গে সর্বনাশ! অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ওই মাচার মতোই পতিত হাসিনার বিছানো ছকে আঁকা জমিনে (প্রশাসন) চাষাবাদ করছে। সিভিল প্রশাসন, পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, আনসার, ব্যাংকিং সেক্টরসহ প্রতিটি সেক্টরের গুরুত্বপূর্ণ পদে মুজিববাদীরা বসে রয়েছেন। হাসিনার বিছানো জমিন তথা প্রশাসনে মুজিববাদীদের রেখে সরকার পরিচালনা করলে যে কোনো সময় মুরগি চাষের মাচার মতো প্রশাসনযন্ত্র হুড়মুড় করে ভেঙ্গে পড়তে পারে। পলাতক হাসিনা দিল্লিতে বসে দেশের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র করছেন এবং ভারতের সহায়তায় একের পর এক ষড়যন্ত্রের কার্ড ছুঁড়ছেন। ভারত ও হাসিনার খুঁটির জোর এখন প্রশাসন বসে থাকা আমলা ও বিভিন্ন বাহিনীর কর্মকর্তারা।

দিল্লিতে বসে এ যুগের ‘ঘসেটি বেগম’ শেখ হাসিনা নানা প্রক্রিয়ায় ক্যু করার চেষ্টা করেছে। অন্তর্বর্তী সরকার উৎখাতে জিয়াউল আহসানকে দিয়ে সেনা বিদ্রোহের অপচেষ্টা, সংখ্যালঘু নির্যাতনের ফেইক নিউজ প্রচার করে দেশের ভাবমর্যাদা নষ্ট করা, জুডিশিয়াল ক্যুর মাধ্যমে ড. ইউনূসের সরকারকে সাংবিধানিকভাবে অবৈধ ঘোষণা করা, ১৫ আগস্টে ঢাকায় ১০ লাখ লোক নামিয়ে অবরোধ করে বিশৃংখলা সৃষ্টি এবং সর্বশেষ আনসার বিদ্রোহ। সবগুলোই ব্যর্থ করেছে এদেশের ছাত্র জনতা। এখনো ভারতীয় মিডিয়া পতিত হাসিনার পক্ষ নিয়ে বাংলাদেশ বিরোধী অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। দেশের ভিতরের শেখ হাসিনার তাবেদারি করতে প্রতিষ্ঠিত গণমাধ্যমগুলো হাসিনার পক্ষে সক্রিয় রয়েছে। তারা এখনো শেখ হাসিনা ‘ভারতে পালিয়ে গেছেন’ শব্দটি ব্যবহার না বলে ‘চলে গেছেন’ শব্দটি ব্যবহার করছে। প্রশাসনযন্ত্রে এখনো ‘সর্ষের মধ্যে ভূত’ প্রবাদটি রয়ে গেছে। আদিকালে কবিরাজরা মানুষের মধ্য থেকে ভূতের আছড় ছাড়াতে সরিষা ব্যবহার করতেন। যদি সরিষার মধ্যে কোন ত্রুটি থাকত তবে তা দিয়ে ভূত তাড়ানো যেত না। হাসিনার ১৫ বছরের কর্তৃত্ববাদী শাসনের সর্ষের ভিতর ভূতের মতোই প্রশাসনযন্ত্রে মুজিববাদী ভূতে ভরে রয়েছে। প্রায় ৫০ জন সচিবসহ কয়েকশ’ কর্মকর্তা কর্মচারী উচ্চপদে রয়েছেন যারা হাসিনাকে খুশি করে পদ বাগিয়ে নেন। প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে মুজিববাদী ভূত রেখে ড. মুহম্মদ ইউনূস স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়বেন কিভাবে? পতিত হাসিনা রেজিমের দুর্নীতি-দলীয়করণের ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরে গত ২৫ আগস্ট জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহম্মদ ইউনূস বলেছেন, দেশবাসীকে ধৈর্য ধরতে হবে। বৈষম্যহীন, শোষণহীন, কল্যাণময়, মুক্ত, উদার, গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়তে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ।’ সর্ষের ভিতর ভূত (প্রশাসনে হাসিনা অনুগত কর্মকর্তা) রেখে কি সেটা সম্ভব? এখনোই সে প্রশ্ন উঠেছে।

’৮১ সালে দেশে ফিরে শেখ হাসিনা পিতা হত্যার প্রতিশোধ নেয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। দীর্ঘদিনের রাজনীতিতে তিনি যখন বিরোধী দলে গেছেন তখনই বলেছিলেন, ‘এই সরকারকে একদিনের জন্য শান্তিতে থাকতে দেব না’। দিল্লিতে পালিয়ে থেকে তিনি এখনো একের পর এক অপকর্ম করছেন। হাসিনার সর্বশেষ ট্র্যাম্পকার্ড ছিল আনসার বিদ্রোহ। এ বাহিনীর কয়েক হাজার সদস্য সচিবালয় ঘেরাও করে তাণ্ডব করেছে। সচিবালয়ের ভিতরে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাসহ অসংখ্য মানুষকে জিম্মি করেছিল। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং পরবর্তীতে সেনাবাহিনী ‘আনসার বিদ্রোহ’ ঠেকিয়ে দিয়েছে। কয়েকদিন আগেও আনসার বাহিনীর মহাপরিচালকের দায়িত্বে ছিলেন হাসিনা রেজিমের সাবেক উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীমের ছোট ভাই। সূত্রের দাবি ওই সময় গোপালগঞ্জ, মাদারিপুর, শরীয়তপুরের প্রায় ৩০ হাজার লোককে আনসার বাহিনীতে নিয়োগ দেয়া হয়। বিশেষ করে মেট্রোরেল, পদ্মা সেতু, কর্ণফুলি ট্যানেলসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ নতুন স্থাপনা প্রহরার লক্ষ্যে তাৎক্ষণিকভাবে আনসার বাহিনীতে লোক নিয়োগ দেয়া হয়। সব নিয়োগই দেয়া হয়ে গোপালগঞ্জ, মাদারিপুর, শরীয়তপুর কেন্দ্রিক। সচিবালয় ঘেরাওয়ে যে আনসার বাহিনীর সদস্যরা অংশ নিয়ে তাণ্ডব করে তাদের বেশির ভাগই এসব কাজে নিয়োজিত। আনসার বিদ্রোহে অংশ নেয়াদের দেখা যায় সবাই প্রায় নতুন পোশাক। যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের কথাবার্তায়ও সেটা পরিষ্কার। গণমাধ্যমে খবর বের হয়েছে আনসার বিদ্রোহে নেতৃত্ব দেন মানিকগঞ্জের শিবালয়ের স্বেচ্ছাসেবক লীগের এক নেতা। তবে আনসার বাহিনীতে সারাদেশের গরীব ঘরের লাখো সদস্য চাকরি করেন। তারা কার্যত নিরীহ। তাদের যারা প্রলোভনে পড়ে আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন এবং ধরা পড়েছেন তাদের অনেকেই জানান, আন্দোলনের নেতৃত্ব কারা দিচ্ছে তাদের চেনেন না।

আনসারের মতোই অন্যান্য সেক্টরেও প্রায় অভিন্ন চিত্র। গত ১৫ বছর আওয়ামী লীগ পরিচয়ের বাইরে থাকা কম মানুষই প্রশাসনের বিভিন্ন সেক্টরে চাকরি করার সুযোগ পেয়েছে। প্রশাসন, পুলিশ, র‌্যাব, আনসার, বিজিবি সব সেক্টরে নিয়োগে আওয়ামী লীগ পরিচিতিকে অধিক গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি প্রমোশন ও গুরুত্বপূর্ণ পদে আওয়ামী লীগের বাইরে কাউকে বসানো হয়নি।

২০১৪ সালের ১২ নভেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) অডিটোরিয়ামে ছাত্রলীগ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে শেখ হাসিনার রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম বলেছিলেন, ‘বিসিএসে তোমরা লিখিত পরীক্ষাটা ভালো করে দাও, বাকি ভাইভা পরীক্ষাটা আমরা দেখবো। আমি তোমাদের পাশে দাঁড়াব। দরকার হলে চাকরির জন্য কোচিংয়ে পড়াবো। যারা আওয়ামী লীগ করে তাদের পাশে দাঁড়ানোটা আমাদের কর্তব্য।’ এরপর থেকে সরকারি চাকরির বিসিএস থেকে শুরু করে অফিসের পিওন, বাগানের মালি পর্যন্ত নিয়োগের যোগ্যতা ‘ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ’ প্রাধান্য দেয়া হয়। বিভিন্ন চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় আওয়ামী লীগের বাইরে যারা মেধায় উন্নীত হতেন তাদের পুলিশী তদন্তে ‘বিএনপি-জামায়াত’ ট্যাগ দিয়ে নিয়োগ বাতিল করা হয়।

হাসিনা পালানোর পর ৮ আগস্ট শপথ নেয় ড. মুহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। দীর্ঘ এই ১৭-১৮ দিনে ভারতের সহায়তায় হাসিনা ৬ বার সরকার ‘উৎখাতের অপচেষ্টা’ করেছে। হাসিনা পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় যুক্তরাষ্ট্রে নিরাপদে থেকে এসব অপকর্মের ইন্ধন ও অর্থের জোগান দিচ্ছে। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার এই সময়ে ‘আওয়ামী লীগ’ ও ‘ছাত্রলীগ’ যোগ্যতা দিয়ে সরকারি চাকরি পাওয়া এবং প্রমোশন পেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদ দখল করা কতজনকে চাকরিচ্যুত করেছে? দেখা যায় সিভিল প্রশাসন, র‌্যাব, পুলিশ, সেনাবাহিনী, আনসার থেকে হাতেগোনা কয়েকজন কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত, বাধ্যতামূলক অবসর দেয়া হয়েছে। আর কিছু কর্মকর্তাকে এক চেয়ার থেকে আরেক চেয়ারে বদলি করা হয়েছে। বদলি করা আওয়ামী লীগ অনুগত কর্মকর্তাদের চেয়ার বদল হলেই কি তাদের মুজিবপ্রেমের রাজনৈতিক বিশ্বাস চলে যাবে? কিছু সুবিধাবাদী আমলা হয়তো গিরগিটির মতো রঙ বদলাবে, কিন্তু সুযোগ পেলে আগের রূপ ধারণ করবেই। সচিবালয় ঘেরাওয়ে অংশ নেয়া আনসারদের দাবি তাদের কাছে বন্দুক ছিল না। তাহলে গুলি ছুঁড়লো কে? ছাত্র নেতাদের অনেকেই বলেছেন এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায় পুলিশের কিছু লোকজনও আনসারদের সঙ্গে আন্দোলনে অংশ নিয়েছে। তারাই মূলত গুলি ছুঁড়েছে। অতঃপর আওয়ামী লীগের অনুগত কর্মকর্তাদের পদে রেখে প্রশাসনকে ‘ভূতম্ক্তু’ করা অসম্ভব।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে নেটিজেনরা বলছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের বেশির ভাগ উপদেষ্টাই এনজিও’র সঙ্গে যুক্ত। আবার তাদের মধ্যে কয়েকজন আওয়ামী লীগ অনুগত। একজনকে তো এর জন্যই ‘মন্ত্রণালয় ডিমোশন’ দেয়া হয়েছে। সূত্রের দাবি, অন্তর্বর্তী সরকারের বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে পুলিশ বাহিনীর অনেক সদস্য কাজে যোগদান করেননি। যারা যোগদান করেননি তারা কার্যত আনসার বিদ্রোহে শরীক হয়েছিল। যারা কাজে যোগদান করেছেন তাদের অনেকেই বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হাসিনার নির্দেশে গুলি করে ছাত্র জনতাকে হত্যা করেছেন। সূত্রের দাবি নতুন সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর পুলিশের কিছু কর্মকর্তা ও ডিসি, এসপি পর্যায়ের কর্মকর্তাকে বদলী করা হয়েছে। বদলি হলেই কি শেখ হাসিনার অনুগত কর্মকর্তা ও পুলিশ অফিসার নিরপেক্ষ হতে পেরেছেন? যে ডিসি ও এসপি ছাত্র আন্দোলনে গুলি করার নির্দেশ দিয়েছে, যে ওসি নিজেই গুলি করে ছাত্র-জনতাকে হত্যা করে রাজপথ রক্তে রঞ্জিত করেছে; তার কি রাতারাতি পরিবর্তন হবে? পতিত হাসিনার তাবেদারদের বিরুদ্ধে যে প্রক্রিয়ায় মামলা হচ্ছে তা নিয়েও সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়াও সরকারের কয়েকটি গোয়েন্দা বিভাগ রয়েছে। হাসিনা রেজিমে মুজিববাদী ছাড়া দল নিরপেক্ষ ও মেধাবী যোগ্যদের এই সব গোয়েন্দা বিভাগ নিয়োগ দেয়া হয়নি। এখনো ওই সব বাহিনীতে আওয়ামী লীগ অনুগতরাই চাকরি করছেন। আনসার বাহিনীর কর্মসূচি দিয়ে সচিবালয় ঘেরাও করবে ওই গোয়েন্দা বিভাগের কেউ টের পেল না? গোয়েন্দাদের ব্যর্থতার রহস্য কি? বিগত কয়েক বছর দেখা গেছে গোয়েন্দা বিভাগের কর্মকর্তা কর্মচারীদের কাজই ছিল বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা এবং জুলুম নির্যাতন করা। গোয়েন্দা বিভাগগুলোর কর্মরতরা কী এখনো সেই ঘোরটোপ থেকে বের হতে পারছেন না?

হাসিনার রেখে যাওয়া ‘প্রশাসনিক ছক’ তথা সর্ষের ভিতর ভূত রেখে প্রশাসনকে ‘জনগণের প্রশাসন’ গড়ে তোলা কী সম্ভব? মাসুদ বিন মোমেন পররাষ্ট্র সচিব পদে রয়েছেন। শেখ হাসিনার শাসনামলে এই মোমেন ঘন ঘন দিল্লি যেতেন। ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারির নির্বাচন নিয়ে শেখ হাসিনার পক্ষে বহির্বিশ্বে নানান মিথ্যা বার্তা দিতেন। ঢাকায় কর্মরত বিদেশী রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিকদের কাছে ‘শেখ হাসিনা সাচ্চাগণতন্ত্রী’ এবং হাসিনার নানা অপকাণ্ড আড়াল করে ক্লিন ইমেজ তুলে ধরতেন। এমনকি এই পররাষ্ট্র সচিব গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর বিদেশী কূটনীতিকদের ডেকে বাংলাদেশের জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিয়েছে বলে জানান। সেই মাসুদ বিন মোমেনকে পররাষ্ট্র সচিব পদে রেখে বর্তমান সরকার কি সংস্কার করতে চায়? এছাড়াও সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল, জাকিয়া সুলতানা, হুমায়ুন কবির খন্দকার, প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্র্তী, ফজলুল বারী, ইসরাত চৌধুরীসহ অর্ধশত সচিব রয়েছেন তারা সুযোগ পেলেই শেখ হাসিনার এজেন্ডা বাস্তবায়নের রূপকার। এখনো তারা মন্ত্রণালয়ের সর্বোচ্চ পদে বসে রয়েছেন। এছাড়াও অতিরিক্ত সচিব, যুগ্ম সচিবসহ প্রশাসনের উচ্চপদে কয়েকশ’ আমলা বহাল তবিয়তে রয়ে গেছেন। পুলিশ প্রশাসন, র‌্যাব, বিজিবিতে শত শত কর্মকর্তা রয়েছেন যারা আওয়ামী লীগার হিসেবে পদ পেয়েছেন এবং শেখ হাসিনার তাবেদার। হাসিনা রেজিমে নিজেদের ‘মুজিববাদী’ হিসেবে জাহির করতে নানা কর্মকৌশল করেছেন। রাষ্ট্রের প্রশাসনযন্ত্রকে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রশাসনে পরিণত করেছেন। সেই সচিব, ডিসি, এসপিদের এক জায়গা থেকে সরিয়ে অন্য জায়গায় নিয়ে গেলেই কী তারা ধুয়ে মুছে ছাপ হয়ে যাবেন? অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর সচিবালয়ের কর্মচারীরা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অফিসে বসে বৈঠক করে ৯ দফা দাবিনামা দিয়েছে। স্বাস্থ্য, রেল, শিক্ষা, গণপূর্ত,পরিকল্পনাসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ অধিদপ্তর, পরিদপ্তর, সেক্টর এবং কর্পোরেশনে কর্মরত কর্মচারীরা প্রায় অর্ধশতাধিক সংগঠনের ব্যানারে দাবি আদায়ের নামে আন্দোলন, মানববন্ধন, সভা-সমাবেশ, অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে। সরকারি চাকরি করে এসব কর্মচারীরা কিভাবে নতুন সরকারকে অস্থিতিশীল করতে এসব আন্দোলন করে? প্রশাসনিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকারের পুলিশ প্রশাসন থেকে শুরু করে অন্যান্য সেক্টরে কর্মরত কর্মচারীদের আন্দোলনের নেপথ্যে রয়েছেন বর্তমান প্রশাসনে কর্মরত কর্মকর্তারাই। আমলাদের মদত ছাড়া ছোট পদের কর্মচারীরা এ মুহূর্তে আন্দোলন করার সাহস দেখাতে পারবে না। প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে চাকরি করে সরকারকে সাবোটাজ করতেই এই কর্মকর্তারা পর্দার আড়ালে থেকে অন্যদের আন্দোলনে মদত দিয়েছেন। পতিত হাসিনার দোসরদের বিরুদ্ধে মামলার হিড়িকে সন্দেহ প্রকাশ করে বিশিষ্টজনেরা বলছেন, আগের জামানার মতোই পুলিশ প্রতিটি মামলায় অর্ধশত, শত ব্যক্তিকে আসামি করছেন এবং অজ্ঞাত আসামি করছেন কয়েকশ’। এসব মামলা কার্যত টিকবে না। পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা বিভিন্ন মামলায় গণহারে আসামি করাকে সন্দেহের চোখে দেখা হচ্ছে।

প্রশাসনে আওয়ামী লীগের অনুগত কর্মকর্তাদের প্রসঙ্গে সাবেক একজন কূটনীতিক সাবিক আলী বলেছেন, প্রশাসনের খোলনলচে পাল্টে না ফেললে ড. ইউনূসের সরকার সামনে এগোতে পারবে না। হাসিনা রেজিমের আমলা সচিবদের ব্যবহার করে নিরপেক্ষ প্রশাসন গড়ার চেষ্টা সফল হবে না। প্রশাসনের সব সেক্টর থেকে হাসিনার অনুগত হিসেবে চিহ্নিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সরিয়ে দিয়ে নিরপেক্ষ ও যোগ্য ব্যক্তিদের কাজে লাগাতে হবে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
Situs Toto
Toto Gacor
bacan4d
bacansport login
slot gacor
pasaran togel resmi
bacan4d
toto togel
slot toto
Toto slot gacor
bacan4d
slotgacor
bacan4d rtp
bacan4d
bacan4d toto
Slot Casino
bacan4d toto
slot gacor
bacan4d
bacan4d
Slot Toto
bacan4d
bacan4d login
totoslotgacor
slot gacor
TOTO GACOR
bacan4d
bacan4d slot gacor
bacan4d login
Bacan4d
bacan4d
bacan4d bonus
Toto gacor
Toto gacor
slot gacor hari ini
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacan4d
bacan4d
toto slot
bacan4d
bacan4d link alternatif
slot gacor bett 200
situs toto
SITUS TOTO
toto 4d
Slot Toto
Slot Toto
Slot Toto
Situs toto
Slot toto
Slot Dana
Slot Dana
Judi Bola
Judi Bola
Slot Gacor
toto slot
bacan4d toto
bacan4d akun demo slot
bacantogel
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacantoto
bacan4d
Bacan4d Login
slot demo
Bacan4d Toto
toto gacor
Slot Gacor
Live Draw
Live Draw Hk
Slot Gacor
toto slot
Bacan4d slot gacor
toto macau
toto slot
Toto Gacor
slot dana
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
Slot Dp Pulsa
Bacan4d Login
toto slot
Bacansports/a>
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
toto slot
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
slot gacor
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
toto slot
slot demo
toto slot gacor
bacansports Slot toto toto slot Slot toto Slot dana Slot toto slot maxwin slot maxwin toto slot toto slot slot dana
Toto Bola
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
bacan4d
ts77casino
situs toto
slot pulsa
bacansports
situs toto
slot toto
situs toto
slot toto
situs toto
toto slot
bacansport
bacansport
bacansports
slot toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
situs toto
situs toto
xx1toto
toto slot
xx1toto
xx1toto
slot qriss
Slot Toto
slot dana
situs toto
slot toto
slot dana
Situs Toto Slot Gacor
xx1toto
xx1toto
bacan4d
xx1toto
xx1toto
toto slot
situs toto slot gacor
toto gacor
toto gacor
toto gacor
toto gacor
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
situs toto
Slot Toto
Toto Slot
Slot Gacor
Slot Gacor
Slot Gacor
slot toto
Toto Slot
slot gacor
situs togel
Toto Slot
xx1toto
bacansport
bacan4d
toto slot
situs toto
slot gacor
Toto Slot
slot maxwin
slot demo
bacan4d toto slot
bacan4d toto slot
bacan4d slot
bacan4d slot
bacan4d slot
bacansports
bacansports
bacansports
bacan4d slot
bacan4d slot
bacan4d
slot gacor
pasaran togel resmi
situs toto
bacan4d login
pasaran togel
pasaran togel
situs toto
bacan4d
bacan4d gacor
bacan4d slot
bacan4d rtp
bacan4d rtp
bacan4d slot gacor
toto slot
situs toto
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
toto gacor Toto Gacor bacan4d slot toto casino slot slot gacor bacantoto totogacorslot Toto gacor bacan4d login slotgacor bacan4d bacan4d toto Slot Gacor toto 4d bacan4d toto slot bacan4d slot gacor