Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
Hot

দুর্নীতিকাণ্ডে আড়াল বাজারের আগুন: আলু ৭০, কাঁচা মরিচ ৩০০, পেঁয়াজ ৯৫, ডিমের হালি ৫৫

আর কয়েকটা দিন পরই ২০২৩-২৪ অর্থবছর শেষ হতে চলেছে। দেশের সাধারণ মানুষকে স্বস্তি দিতে এই অর্থবছরের বাজেটে এক নম্বর অগ্রাধিকার ছিল মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটেও উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার রয়েছে। তবে সরকার রাজনৈতিকভাবে যতটা শক্তিশালী, ঠিক ততটাই ব্যর্থ দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে। টাকার অবমূল্যায়ন ও সিন্ডিকেটের থাবায় পণ্যের উচ্চমূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না সরকার। এখনো বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতি প্রায় ১০ শতাংশের কাছাকাছি। তবে সম্প্রতি বিভিন্ন ইস্যুতে উচ্চ মূল্যস্ফীতিতে আক্রান্ত ভোক্তার কষ্ট চাপা পড়ে যাচ্ছে।

সম্প্রতি ঘটে যাওয়া বেনজীর, আজিজ, মতিউরসহ বিভিন্ন ব্যক্তির দুর্নীতির মুখরোচক গল্প এখন গণমাধ্যমে সবচেয়ে আলোচিত ও পঠিত। সরকারি পদে থেকে শত শত কোটি টাকার মালিক বনে যাওয়া এসব ব্যক্তির রাজকীয় জীবনযাপন কিংবা বিপুল সম্পদের তথ্য গোগ্রাসে গিলছেন পাঠক। এমন পরিস্থিতিতে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে থাকা নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোও রেহাই পাচ্ছে! সাধারণ ভোক্তাদের আক্রোশ থেকে সাময়িক মুক্তি পেয়েছে তদারকি সংস্থাগুলো!

পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গত ১২ মাসের গড় মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৭৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। অবশ্য আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) গত সোমবার বাংলাদেশের ঋণের তৃতীয় কিস্তি অনুমোদন করে পূর্বাভাস দিয়ে বলেছে, চলতি অর্থবছরের শেষে বার্ষিক গড় মূল্যস্ফীতি দাঁড়াবে ৯ দশমিক ৪ শতাংশে।

সর্বশেষ মে মাসের মূল্যস্ফীতির তথ্যে দেখা যায়, দেশের স্বাস্থ্য খাতের সেবায় খরচ বেড়েছে ১২ দশমিক ৩৮ শতাংশ। তাছাড়া হাউজিং, পানি ও বিদ্যুতের খরচ বেড়েছে ৯ দশমিক ৫৩ শতাংশ, ঘর সাজানোর বিভিন্ন পণ্যের দাম বেড়েছে ১১ দশমিক ৩৪ শতাংশ। এই তো গেল খাদ্যবহির্ভূত ব্যয় বৃদ্ধির সরকারি হিসাব। সাম্প্রতিককালে ঘূর্ণিঝড় রিমাল ও দেশের বেশ কিছু এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি দেখা দেওয়ায় কিছু খাদ্যপণ্য বিশেষ করে সবজির দাম বেড়ে গেছে। বিভিন্ন এলাকায় বন্যা ছাড়াও বৃষ্টির কারণে ফসলের ক্ষতি, মাছের খামার তলিয়ে যাওয়ায় খাদ্যপণ্যের দাম আরও ঊর্ধ্বমুখী।

গত কয়েক দিনে বাজারের চিত্র দেখা যায় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির চিত্র। কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের বাজারদরের তালিকা অনুযায়ী, গত এক বছরে অধিকাংশ সবজির দাম গড়ে ৬৬ শতাংশের বেশি বেড়েছে। এর মধ্যে কিছু কিছু সবজির দাম ১০০ থেকে ১৬২ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। বিশেষ করে ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম রেকর্ড গড়ে বেড়েছে। বেগুনের মতো সবজির দাম বেড়েছে ৮০ থেকে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত।

দেশে পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে ভারত থেকে আমদানির উদ্যোগ নেয় সরকার। বিশেষ কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় আমদানির অনুমতি মিললেও ন্যূনতম মূল্য বেঁধে দেওয়ায় সেই ভারতীয় পেঁয়াজও এখন দেশি পেঁয়াজের চেয়ে বেশি মূল্যে কিনতে হচ্ছে। মূল্যস্ফীতির প্রভাবে ভোগ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির তালিকায় ডিম, মাছ ও সবজির মতো খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে উল্লেখযোগ্যভাবে। এখন স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত পণ্যের দাম বাড়াতে ডলারের মূল্যবৃদ্ধিকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। যদিও অধিকাংশ পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করছে বিভিন্ন সিন্ডিকেট। সরকারের নজরদারি শুধু খুচরা ব্যবসায়ীদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ।

বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের বাজারে গত কয়েক বছরই দাম বৃদ্ধির হিড়িক উঠেছে। যেকোনো সংকটে পণ্যের দাম একবার বাড়লে, তা কমার কোনো লক্ষণ নেই। আয়ের তুলনায় ব্যয় বেড়ে যাওয়ার ফলে বাজারে আসা অধিকাংশ মানুষ চাহিদার তুলনায় ভোগ্যপণ্য কেনা কমাতে বাধ্য হচ্ছেন।

গত পাঁচ বছরের বেশি সময় রাজধানী মতিঝিলের এজিবি কলোনি কাঁচাবাজারে সবজির ব্যবসা করেন মো. মাহফুজ হোসেন। তিনি বলেন, পাঁচ বছরের বেশি সময় কলোনি বাজারে সবজি বিক্রি করছি। প্রথম দুই-এক বছর ভালো গেলেও দিন দিন সবজির দাম বাড়ায় আগের মতো বিক্রি নেই। চাহিদার তুলনায় মানুষ সবজি কম কেনায় দিনশেষে চালান মেলাতে কষ্ট হয়ে যায়। তিনি আরও বলেন, এক বছরের ব্যবধানে বিক্রি অর্ধেকে নেমেছে। অধিকাংশ ক্রেতা এখন চাহিদা অনুযায়ী সবজি কেনেন না। যারা এক কেজির নিচে সবজি কিনতেন না, তাদের অনেকে এখন ২৫০-৫০০ গ্রাম সবজি কিনছেন। এভাবে চলতে থাকলে আমাদের ব্যবসার মূলধন হারাতে হবে।

এদিকে রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯৫ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত, যা গত বছরও বিক্রি হয়েছিল ৪০-৪২ টাকায়। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে প্রতি কেজি পেঁয়াজে ১৬২ শতাংশ বেড়েছে। এ ছাড়া অন্যান্য সবজির মধ্যে কেজিতে ১০০ শতাংশ দাম বেড়ে এক বছরে প্রতি কেজি বেগুন বিক্রি হচ্ছে ১০০, ৪০ শতাংশ বেড়ে মিষ্টি কুমড়া বিক্রি হচ্ছে ৩৫, কেজিতে ১৮০ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩০০, ৩২ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি আলু ৭০, ৩০ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি করলা ও উচ্ছে ৯০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সবজির মতো মূল্যস্ফীতির প্রভাব মাছ-মাংসের বাজারে পড়েছে। বিশেষ করে গত এক বছরে সব থেকে বেশি ডিম, মাংস ও মাছের দাম বেশি বেড়েছে। সরকারি বিপণন কর্তৃপক্ষ ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) তথ্য ঘেঁটে দেখা যায়, গত এক বছরে ডিম-মাছ ও মাংসের দাম বেড়েছে ১০ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত। এর মধ্যে সব থেকে বেশি মাছে ৫০ শতাংশ ও মাংসের কেজিতে ১০ শতাংশ ও ডিমের হালিতে ৩৭ শতাংশ পর্যন্ত দাম বেড়েছে।

টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, গত বছর এ সময়ে প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হয়েছিল ৭২০ থেকে ৭৫০ টাকায়। তবে বর্তমানে ৫০ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি মাংস বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকায়। একইভাবে প্রতি ডজন ডিমে ৪৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৬৫-১৭০ টাকায়। তাছাড়া মহল্লার কোনো কোনো দোকানে প্রতি হালি ডিম ৬০ টাকায় বিক্রি হতেও দেখা যায়।

এদিকে মাছের বাজারে খবর নিয়ে জানা যায়, প্রতি কেজি লইট্ট্যা বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকায়, যা এক বছর আগেও বিক্রি হয়েছিল মাত্র ১০০ থেকে ১২০-এ। লইট্ট্যা মাছের মতো রুই, পাঙাশ, তেলাপিয়াসহ সব ধরনের মাছের দাম বেড়েছে গড়ে ৩০ শতাংশের বেশি। বর্তমানে প্রতি কেজি পাঙাশ বিক্রি হচ্ছে ২৩০ থেকে ২৫০ টাকায়, তেলাপিয়া ২০০ থেকে ২৪০, বড় রুই ৪০০ থেকে ৫০০, শিং ৭০০ থেকে ৮০০, চাষের কৈ ৩৫০ থেকে ৪০০ ও প্রতি কেজি নদীর পোয়া বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৮০০ টাকায়।

সরকার মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ব্যাংক ঋণের সুদহার বাজারভিত্তিক করে দিয়েছে। এতে করে গত ১০ মাস ধরে ধারাবাহিকভাবে সুদের হার বাড়ছে। একইভাবে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতির মাধ্যমে টাকার সরবরাহ কমিয়ে আনার উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে। তবে এমন পদক্ষেপে বিশে^র অন্যান্য দেশ সফলতা পেলেও বাংলাদেশে কোনো কাজেই আসছে না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেরিতে পদক্ষেপ নেওয়ায় কোনো সুফল পাওয়া যাচ্ছে না।

কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, মূল্যস্ফীতি আমাদের দেশের বহুমাত্রিক সমস্যা। শুধু ভোক্তা অধিকারের বাজার তদারকির জন্য পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব নয়। কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর জন্যই যে দাম বাড়ছে তা নয়। তিনি বলেন, বাজার ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সার্বিক অর্থনীতি জড়িত। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকারের মুদ্রানীতি, সিস্টেম পলিসি, সুদনীতি, বিদেশি মুদ্রার ব্যবস্থাপনাসহ অন্যান্য পলিসি জড়িত। কিন্তু সরকার সম্প্রতি যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য উপযুক্ত সময় ছিল না। তবে সরকারের নেওয়া নীতি পদক্ষেপের সুফল পেতে আমাদের আরও ছয় মাস থেকে এক বছর অপেক্ষা করতে হবে। তবে মূল্যস্ফীতি আগের অবস্থায় ফিরে আসার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacantoto4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d toto
slot toto
bacan4d
bacan4d
togel online
Toto Slot
saraslot88
Bacan4d Login
bacantoto
Bacan4d Login
bacan4d
bacan4drtp
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot maxwin
slot bacan4d
slot maxwin
bacan4d togel
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d login
bacantoto 4d
slot gacor
bacansport
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot77 gacor
JAVHD
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
gacor slot
slot gacor777
slot gacor bacan4d
bacan4d
bacansport
toto gacor
bacan4d
bacansports login
slot maxwin
slot dana
slot gacor
slot dana
slot gacor
bacansports
bacansport
bacansport
bacansport
bawan4d
bacansports
bacansport
slot gacor
judi bola
slot maxwin
slot maxwin
bacansport
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot demo
slot gacor
slot gacor
slot gacor
toto slot
slot gacor
demo slot gacor
slot maxwin
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot toto