Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
Hot

দুর্নীতিতে উৎসাহিত করবে গ্রেফতারে পূর্বানুমতি

সরকারি কর্মচারীরা নিজেদের শাসক ভাবেন -ড. শাহদীন মালিক * অপরাধী যেই হোক, আইনের আওতায় আনতে হবে -ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ

সরকারি কর্মচারীদের গ্রেফতারে কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি নেওয়ার বিষয়টি কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। এটি সংবিধানের সঙ্গেও সাংঘর্ষিক।

বিশেষ করে যে দেশে সরকারি অফিসগুলোয় ঘুস ও দুর্নীতি ওপেন সিক্রেট, সেখানে সরকারি কর্মচারীদের ফৌজদারি অপরাধের মামলায় গ্রেফতারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতির প্রয়োজন হলে তা অসৎ ও দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আরও উৎসাহিত করবে।

তাই মৌলিক অধিকারের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ আইনটি বাতিল করা জরুরি বলে মনে করেন দেশের আইন বিশেষজ্ঞরা। এ বিষয়ে যুগান্তরকে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় তারা এসব কথা বলেন।

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের নভেম্বরে সরকারি কর্মচারী আইন-২০১৮ প্রণয়ন করা হয়। ২০১৯ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে একই বছরের ১ অক্টোবর থেকে আইনটি কার্যকর হয়।

আইনটির ৪১(১) ধারার ভাষ্য, ‘কোনো সরকারি কর্মচারীর দায়িত্ব পালনের সঙ্গে সম্পর্কিত অভিযোগে করা ফৌজদারি মামলায় আদালত কর্তৃক অভিযোগপত্র গৃহীত হওয়ার আগে তাকে গ্রেফতার করতে হলে সরকার বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি গ্রহণ করতে হবে।’

ধারাটি সংবিধানের কয়েকটি অনুচ্ছেদের পরিপন্থি উল্লেখ করে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে তিন আইনজীবী ২০১৯ সালের ১৪ অক্টোবর হাইকোর্টে রিট করেন। রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০২২ সালের ২৫ আগস্ট হাইকোর্ট রায় দেন।

রায়ে ২০১৮ সালের সরকারি চাকরি আইনের ৪১(১) ধারাটি বাতিল এবং সংবিধানের ২৬, ২৭ ও ৩১ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হয়। ওই বছরের ১ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টের দেওয়া রায় স্থগিত করেন আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে আবেদন শুনানি ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত মুলতুবি করেন। অদ্যাবধি সেই আপিলের শুনানি হয়নি।

এদিকে ২৫ জুন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আনেন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের দুই সংসদ-সদস্য।

জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, জাতীয় পর্যায়ে রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা হলে তাদের গ্রেফতারে অনুমতি নেওয়া লাগে না। কিন্তু সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে একই ধরনের মামলা হলে তাকে গ্রেফতার করতে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনুমতি নিতে হয়।

সরকারি কর্মচারী আইন-২০১৮ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দুর্নীতি করতে উৎসাহিত করেছে। সরকারি চাকরিজীবীরা এক বছরের কম শাস্তি পেলে চাকরি থেকে তাদের অব্যাহতি দেওয়া হয় না। তাকে তিরস্কার, বিভাগীয় শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে, যা সুশাসনের সহায়ক নয়। অথচ স্থানীয় প্রতিনিধিদের এরাই তাৎক্ষণিক বরখাস্ত রাখার ক্ষমতা রাখে।

২০১৮ সালের সরকারি চাকরি আইনের ৪১(১) ধারাটি সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে মনে করেন বিশিষ্ট সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক। তিনি যুগান্তরকে বলেন, এ ধারাটি উচ্চ আদালত বাতিল করেছেন। রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রায়টি স্থগিত করে শুনানির জন্য রেখেছেন সর্বোচ্চ আদালত। আইনটি সংবিধানের ২৬, ২৭ ও ৩১ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

সংবিধানের ২৬ অনুচ্ছেদে মৌলিক অধিকারের সঙ্গে অসামঞ্জস্য আইন বাতিল, ২৭ অনুচ্ছেদে আইনের দৃষ্টিতে সমতা এবং ৩১ অনুচ্ছেদে আইনে আশ্রয়লাভের অধিকার বিষয়ের উল্লেখ রয়েছে।

জ্যেষ্ঠ এ আইনজীবী আরও বলেন, সোয়া একশ বছর আগে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী বেশির ভাগই ছিলেন ব্রিটিশ। ওই সময়ে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দেশ শাসন করতেন। আর বর্তমান সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাজ হলো জনগণকে সেবা দেওয়া। কিন্তু আমাদের সরকারি কর্মচারীরা নিজেদের ব্রিটিশদের মতো শাসক ভাবেন। শাসকরা তো আর প্রজার কাছে জবাবদিহি করতে পারে না। তিনি বলেন, আমার মনে হয়, এ ধরনের মনমানসিকতা থেকেই আইনটি করা হয়েছে।

শাহদীন মালিক আরও বলেন, আইনের খসড়া তো তারাই (সরকারি কর্মকর্তারা) করেন, আমলারাই। আইনটি সংসদে পাশ হয়েছে। এখন আপিল বিভাগে যে পরিমাণ মামলার জট, তাতে সাধারণ প্রক্রিয়ায় এটা ফয়সালা হতে অন্তত পাঁচ বছর লাগতে পারে। আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে, পাঁচ বছরের জন্য তারা (সরকারি কর্মচারী) এই বিধানের সুবিধা ভোগ করবে।

আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের মতে, ‘সরকারি কর্মচারীদের ফৌজদারি অপরাধের মামলায় গ্রেফতারে কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি নিলে অসৎ ও দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আরও প্রশ্রয় পাবে। উৎসাহিত হবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেখানে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছেন, সেখানে এ ধরনের বৈষম্যমূলক আইন থাকা ঠিক না। আমি আশা করব, সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ বিষয়টি বিবেচনা করবেন।’

সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ বলেন, অপরাধী যেই হোন না কেন, তাকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে হবে, শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। তা না হলে দুর্নীতিবাজরা আরও উৎসাহিত হবে।

জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে। আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় স্থগিত করে রাষ্ট্রপক্ষকে নিয়মিত লিভ টু আপিল করতে বলেন। এরপর আর শুনানি হয়নি। তিনি বলেন, বিষয়টি বিচারাধীন। আশা করি, আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় বহাল রাখবেন।

এর আগে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল প্রসঙ্গে ওই সময় অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, ‘অনেক সময় দেখা যায়, সরকারি কর্মচারীদের অযথা হয়রানির জন্য মিথ্যা মামলা করা হয়। মামলার পর তাকে যদি গ্রেফতার করা হয়, পরে তিনি যদি মামলায় খালাস পান, তাহলে তার মধ্যে এক ধরনের অস্বস্তি ছাড়াও তাকে ভোগান্তি পোহাতে হয়। এই ভোগান্তি নিরসন ও সরকারি কাজের সুবিধার জন্য আইনটি করা হয়। একই সঙ্গে উল্লিখিত দিক সামনে রেখে রায় স্থগিত চেয়ে আবেদনটি করা হয়েছে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
slot demo
bacan4d
bacan4d
Toto Slot
saraslot88
Bacan4d Login
bacantoto
Bacan4d Login
bacan4d
bacan4drtp
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot maxwin
slot bacan4d
slot maxwin
bacan4d togel
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d login
bacantoto 4d
slot gacor
bacansport
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot77 gacor
JAVHD
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
gacor slot
slot gacor777
slot gacor bacan4d
bacan4d
toto gacor
bacan4d
bacansports login
slot maxwin
slot dana
slot gacor
slot dana
slot gacor
bacansports
bacansport
bacansport
bacansport
bawan4d
bacansports
bacansport
slot gacor
judi bola
slot maxwin
slot maxwin
bacansport
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot demo
slot gacor
slot gacor
slot gacor
toto slot
slot gacor
demo slot gacor
slot toto