Bangladesh

দুর্নীতি, চুরি, হয়রানি: শাহ আমানত বিমানবন্দর দিয়ে ভ্রমণ যখন যাত্রীদের জন্য দুঃস্বপ্ন!

গত তিন বছরে এরকম ২০ জনেরও বেশি ভুক্তভোগীর সঙ্গে কথা বলেছে। দুর্নীতি ও হয়রানির ভয়াবহতা বুঝতে একাধিকবার এই বিমানবন্দর দিয়ে ভ্রমণও করেছেন টিবিএসের এই প্রতিবেদকেরা। এমনকি, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একটি প্রতিবেদনেও উঠে এসেছে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সীমাহীন দুর্নীতির চিত্র।

চাঁদাবাজি, দুর্নীতি, বিলম্বসহ নানান হয়রানির কারণে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে ভ্রমণ যেন যাত্রীদের জন্য এক দুঃস্বপ্ন হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে যারা প্রথমবার এই বিমানবন্দর ব্যবহার করেন, কিংবা যারা অভিবাসী শ্রমিক — তাদের জন্য বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই বিমানবন্দরের যাত্রা দুর্দশাপূর্ণ অভিজ্ঞতা বয়ে আনছে।

সম্প্রতি ঘটে যাওয়া কিছু হয়রানিমূলক ঘটনায় সমস্যার তীব্রতা আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই চরম হয়রানির শিকার হচ্ছেন যাত্রীরা।

বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ৬ জানুযারি সকালে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে ফ্লাই দুবাইয়ের ফ্লাইট এফ জেড-৫৬৪-যোগে দুবাই যাওয়ার পথে ৮ যাত্রীকে (সকাল ৬টা থেকে ১০ টার মধ্যে) আটকে দেন সিভিল এভিয়েশনের নিরাপত্তাকর্মীরা। যাত্রীদের কাছে থাকা সমস্ত বাংলাদেশি টাকা নিয়ে নেন তারা।

সেদিন বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপটেন তাসনিম আহমেদ লাউঞ্জে অপেক্ষমাণ যাত্রীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করার সময় কয়েকজন যাত্রী বিষয়টি তাকে জানালেও তিনি কোনো ব্যবস্থা নেননি।

পরে অবশ্য টিবিএস-এর সঙ্গে আলাপকালে বিমানবন্দরের পরিচালক পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত থাকার কথা স্বীকার করেন এবং জানান, নিরাপত্তা কর্মীরা যাত্রীদের ব্যাগেজ র‍্যাপিংয়ে বেশি টাকা আদায় করেছেন, যেখানে এর নির্ধারিত ফি মাত্র ২০০ টাকা।

পরবর্তীকালে জানা যায়, ব্যাগেজ র‍্যাপিংয়ের জন্য প্রতি যাত্রীর কাছে থেকে সর্বোচ্চ ২,০০০ টাকা পর্যন্ত জোরপূর্বক ছিনিয়ে নিয়েছিলেন বিমানবন্দরের কয়েকজন নিরাপত্তাকর্মী। বিষয়টি পরে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে এক চিঠির মাধ্যমে জানায় ফ্লাই দুবাই।

গত তিন বছরে এরকম ২০ জনেরও বেশি ভুক্তভোগীর সঙ্গে কথা বলেছে টিবিএস। দুর্নীতি ও হয়রানির ভয়াবহতা বুঝতে একাধিকবার এই বিমানবন্দর দিয়ে ভ্রমণও করেছেন টিবিএসের এই প্রতিবেদকেরা। এমনকি, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একটি প্রতিবেদনেও উঠে এসেছে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সীমাহীন দুর্নীতির চিত্র।

কাগজপত্র ঠিকঠাক থাকার পরেও ইমিগ্রেশন কর্মকর্তাদের সঙ্গে ‘চুক্তি’ না করলে যাত্রীদের ফিরিয়ে দেওয়া বা বিলম্ব হওয়ার শঙ্কা থেকে যায়।

২০২১ সালের ৪ নভেম্বর এয়ার অ্যারাবিয়ার একটি ফ্লাইটে করে এই বিমানবন্দর দিয়ে ভ্রমণের সময় ইমিগ্রেশন পুলিশের হয়রানির শিকার হন চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড এনিমেল সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক। এ সময় তার কাছে ‘স্পেশাল কোড’ না থাকায় তাকে ২ ঘণ্টার বেশি সময় বসিয়ে রাখে ইমিগ্রেশন পুলিশ। 

কাগজপত্র ঠিক থাকার পরেও ‘স্পেশাল কোড’-এর অভাবে তাকে হয়রানির শিকার হতে হয়। সেইদিন তিনি শেষযাত্রী হিসেবেই ফ্লাইটে ওঠেন।

শাহ আমানত বিমানবন্দরে কোনো যাত্রীর কাছে ‘স্পেশাল কোড’ থাকার অর্থ হলো, সেই যাত্রী ‘চুক্তি’র মাধ্যমে তার ইমিগ্রেশন যাত্রার মসৃণ পথ নিশ্চিত করেছেন।

এমনকি, এই বিমানবন্দরে এক যাত্রীর সহিংসতার মুখোমুখি হওয়ার খবরও মিলেছে।

গত বছরের ৬ নভেম্বর ঘুষের টাকা না পেয়ে বিমানবন্দরে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) এক এএসআইয়ের নেতৃত্বে সৌদি আরবগামী যাত্রী নুরুল আমিনকে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরের একটি কক্ষে আটকে রেখে মারধর করা হয়। এ ঘটনায় পরে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয় দুই এপিবিএন সদস্যকে।

চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে কর্মরত এপিবিএন-এর সিনিয়র এএসপি মো. আলী নওয়াজ টিবিএসকে জানান, ওই এএসআই একজন যাত্রীকে লাঞ্ছিত করায় বিভাগীয় মামলার মুখোমুখি হয়েছেন এবং তার কৃতকর্মের জন্য উপযুক্ত শাস্তি পেয়েছেন।

ভুক্তভোগী যাত্রীরা জানান, অনেক সময় বোর্ডিং পাস পাওয়ার পরেও বিমানবন্দরে তাদের পাসপোর্ট আটকে রাখা হয়। দুই-এক ঘণ্টা পর পাসপোর্টগুলো ফেরত দেওয়া হলেও কারেন্সি রেস্ট্রিকশনের অজুহাতে যাত্রীদেরকে বাংলাদেশি টাকা দেওয়ার জন্য বাধ্য করা হয়।

বেশি হয়রানির শিকার প্রবাসীরা

চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে যেসব প্রবাসীরা যাতায়াত করছেন, তারা কোনো না কোনোভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। 

বোর্ডিং পাস, ইমিগ্রেশন থেকে শুরু করে পদে পদে প্রবাসীরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ঠিক থাকার পরও ইমিগ্রেশন থেকে ফেরত পাঠানো হচ্ছে যাত্রীদের। প্রবাসে যেতে কিংবা ফেরত আসতে উভয় ক্ষেত্রেই হয়রানির শিকার হচ্ছেন তারা। এসব বিষয়ে প্রতিবাদ করলে হয়রানির মাত্রা আরও বেড়ে যায় বলে অভিযোগ তাদের। 

করোনাকালীন সময়ে ২০২১ সালের ৭ ডিসেম্বর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে (বিজি ০৪৭) দুবাই যাচ্ছিলেন চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার শাহেদ হোসেন।

করোনার টিকা, বোর্ডিং পাসসহ টানা ৮ ঘণ্টার প্রক্রিয়া শেষে যখন ইমিগ্রেশন বিভাগে যান, তখন সেখানে দয়িত্বরত পুলিশ জানায় তিনি যেতে পারবেন না। তিনি তার আপন খালাতো ভাইয়ের কাছে যাচ্ছেন এবং দুবাই সরকার তাকে ভিসা দিয়েছে এটি নিশ্চিত করার পরও পুলিশ তাকে বিমানবন্দর থেকে ফেরত পাঠিয়ে দেয়। ওই ফ্লাইটের আরও বেশ কয়েকজন যাত্রীকে ফেরত পাঠিয়েছিল ইমিগ্রেশন পুলিশ।

ইমিগ্রেশন পুলিশের হয়রানির শিকার শাহেদ হোসেন টিবিএসকে বলেন, “আমার সব ধরনের ডকুমেন্ট ঠিক থাকার পরও ইমিগ্রেশন পুলিশ আমাকে যেতে দেয়নি। ওই সময় ৪০ হাজার টাকা দিয়ে টিকেট কেটেছিলাম। এই হয়রানি এবং আর্থিক ক্ষতির বিষয়ে কার কাছে অভিযোগ করব জানিনা। ইমিগ্রেশন পুলিশের এ ধরনের আচরণ কাম্য হতে পারেনা।”

চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে শুধু শাহেদ হোসেন নন, এরকম হয়রানির শিকার হয়েছেন রাঙ্গুনিয়া উপজেলার বিপুল বড়ুয়া। কাতার যেতে গিয়ে হয়রানির শিকার হন তিনি।

তাদের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ইমিগ্রেশন পুলিশের স্পেশাল সুপারিনটেনডেন্ট এটিএম শাহিন আহমেদ বলেন, বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে ট্যুরিস্ট ভিসার অপব্যবহার রোধে ভিসা ও পাসপোর্ট কঠোরভাবে পরীক্ষা করা হয়।

সৌদি আরব প্রবাসী মো. আরমানও শাহ আমানত বিমানবন্দরে হয়রানির ভুক্তভোগী। গত ৪ মার্চ বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে মদিনা থেকে চট্টগ্রামে এসে কীভাবে তিনি হয়রানির শিকার হন তার বিস্তারিত জানিয়েছেন।

চট্টগ্রামে নেমে তিনি তার লাগেজটি খোলা দেখতে পান।

৩০ কেজি মালামালের মধ্যে প্রায় ৭৪ হাজার টাকা মূল্যের পারফিউম এবং প্রসাধনীসহ সাতকেজি মালামাল নিখোঁজ ছিল। আরমান তার মোট ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় এক লাখ টাকা হবে বলে জানিয়েছেন।

বিমানবন্দরের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে সহায়তা না পাওয়ায় তিনি হতাশা প্রকাশ করেন। তার দাবি, বিমানের কর্মকর্তা ইকবাল খসরু তাকে অভিযোগ দায়ের করতে বাধা দিয়েছেন। বিমান অবশ্য বলেছেন, আরমানের লাগেজ যখন চট্টগ্রামে পৌঁছায় তখন এটি ইতোমধ্যেই ক্ষতিগ্রস্ত ছিল। যদিও সে অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেন আরমান।

ইকবাল খসরু তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ঘটনাটি রিয়াদ বিমানবন্দরে ঘটে থাকতে পারে। একইসঙ্গে তিনি আরমানকে অভিযোগ দায়ের করতে নিরুৎসাহিত করার বিষয়টিও অস্বীকার করেন।

অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ–চট্টগ্রাম জোনের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আবুল কাশেম বলেন, “চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে হয়রানির বিষয়ে ইমিগ্রেশন পুলিশসহ বিভিন্ন এয়ারলাইন্স কাউন্টারের কর্মীরাও জড়িত। হয়রানির বিষয় নিয়ে প্রতিবাদ করতে গেলে হয়রানির মাত্রা আরো বেড়ে যায়। তাই নিরুপায় হয়ে এসব হয়রানি মেনে নিয়েই ট্রাভেল এসেন্সিগুলো তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে।”

কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহ-সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, “সেবার মান উন্নয়ন হলো ফ্লাইট বাড়তো, যাত্রী বাড়তো। এটা তো সুস্পষ্ট যে সেবার মান কমছে। এই বিমানবন্দর দিয়ে ভ্রমণ করলে বোঝা যায়, কীভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছে মানুষ।”

দুর্নীতিতে জড়িত কারা? 

সম্প্রতি প্রধামন্ত্রীর কার্যালয়ের একটি প্রতিবেদনে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ঘিরে সীমাহীন দুর্নীতির চিত্র উঠে এসেছে।

২০২৩ সালের ১৫ নভেম্বর তারিখের ওই প্রতিবেদনে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরের চারটি বিভাগের কমপক্ষে ১১ জন কর্মকর্তার নাম উঠে আসে প্রতিবেদনটিতে।

গোয়েন্দা প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা ওই প্রতিবেদনে এভিয়েশন সিকিউরিটি, ক্যাব-এর ব্যবস্থাপনা বিভাগ, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা (আনসার, কাস্টমস, কাস্টমস ইন্টেলিজেন্স, এপিবিএন, ইমিগ্রেশন পুলিশ, ও পুলিশ স্টেশন), বিমান এবং ফ্লাইদুবাই-এর নামও উল্লেখ করা হয় এবং এগুলো কীভাবে দুর্নীতিতে করে তার বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়।

এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় কিছু সুপারিশ নিয়ে এলেও তা বাস্তবায়নে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছে বিমানবন্দর সূত্র।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে দেওয়া চিঠি ও সুপারিশের বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সুপারিশগুলোর মধ্যে রয়েছে দুর্নীতি, অনিয়ম ও অসদাচরণে জড়িত কর্মকর্তা ও কর্মীদের অবিলম্বে চিহ্নিত করা এবং স্থানান্তর করা; তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু করা এবং কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

সেইসঙ্গে, অননুমোদিত চলাচল এবং সম্ভাব্য অবৈধ কার্যকলাপ রোধে বিমানবন্দর ছেড়ে যাওয়া ক্যাবের পরিবহনগুলোর নিয়মিত তল্লাশি চালানোর পরামর্শও দেওয়া হয়।

সম্পদের যথাযথ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতে বিমানবন্দর প্রাঙ্গণ থেকে কোনো যন্ত্রপাতি অপসারণের আগে সংশ্লিষ্ট শাখা প্রধানের কাছ থেকে অনুমোদন বা অনাপত্তি শংসাপত্র (এনওসি) নেওয়ার একটি ব্যবস্থা তৈরির সুপারিশ করা হয়।

এছাড়া প্রতিবেদনে বিমানবন্দরের জিনিসপত্র রক্ষণাবেক্ষণে নিয়োজিত কর্মীদের জন্য নিয়মিত রোস্টার ব্যবস্থা বাস্তবায়নের পরামর্শও দেওয়া হয়, যাতে জবাবদিহিতা বাড়ানোর পাশপাশি চক্রান্ত কমানো যায়।

দুর্নীতিতে পিছিয়ে নেই বিমান সংস্থাও 

প্রধামন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, চট্টগ্রাম বিমানবন্দর থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট অপারেশন ও বিমানবন্দরের গ্রাউন্ডস হ্যান্ডলিং সুযোগকে কাজে লাগিয়ে একে স্বর্ণ চোরাচালানের বিশ্বস্ত মাধ্যমে পরিণত করেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কিছু অসাধু সদস্য।

স্বর্ণ চোরাচালানের পাশাপাশি বিমানবন্দরে কার্গো দিয়ে বিভিন্ন শুল্কযোগ্য এবং আমদানি নিষিদ্ধ পণ্য চোরাচালানেও বিমানের লোডার থেকে শুরু করে কার্গোতে দায়িত্বপ্রাপ্ত বিমানের কর্মকর্তা/কর্মচারীদের জড়িত থাকার তথ্য পাওয়া গেছে।

এছাড়া ফ্লাইদুবাই এয়ারলাইনের বিরুদ্ধে ভিজিট ভিসায় লো-প্রোফাইল যাত্রী প্রেরণের মাধ্যমে মানব পাচারসহ ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে ভিজিট ভিসার যাত্রীদের কাগজপত্র যাচাই না করেই দুবাই গমনের ব্যবস্থা করে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

ফ্লাইদুবাই এয়ারলাইনের চট্টগ্রাম বিমানবন্দর টিমের বিরুদ্ধে যাত্রীদের ত্রুটিপূর্ণ ব্যাগেজ ঘোষণাপত্র ফরম সরবরাহ, ব্যাগেজের ওজন বাড়তি দেখিয়ে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত চার্জ আদায়, অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া, যাত্রীদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ, ফ্লাইট কোনো কারণে বাতিল হলে তা যাত্রীদের অবহিত না করাসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে।

এমন অভিযোগের প্রেক্ষাপটে ফ্লাই দুবাইয়ের মুখপাত্র গোলাম রব্বানী বলেন, যদিও যাত্রীদের সঙ্গে পরিবহন করা যাবে না এমন পণ্য পরিবহনের জন্য নিরাপত্তা কর্মীদের দ্বারা হয়রানির অভিযোগ রয়েছে, তবে তারা সরাসরি কোনো অভিযোগ পাননি।

তিনি বলেন, “আর আমাদের কাছে সব যাত্রী সমান; কেউ লো-প্রোফাইল বা হাই-প্রোফাইল নয়। আমরা নিয়ম অনুযায়ী তাদের কাগজপত্র যাচাই-বাচাই করি। সঠিক কাগজ না থাকলে আমাদেরকে আমিরাত সরকার জরিমানা করে। কাগজ যাচাই-বাছাই করা হয়রানি নয়।”

এ বিষয়ে বিমান বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিউল আজিমের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

বিমানবন্দর পরিচালকের প্রতিক্রিয়া

বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন তসলিম আহমেদ গত ৬ জানুয়ারির ঘটনা স্বীকার করে বলেন, ব্যাগেজ র‍্যাপিংয়ের জন্য ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তাদের চুক্তি থাকায় এক্ষেত্রে তাদের হস্তক্ষেপের তেমন সুযোগ ছিল না। তবে তারা ব্যাগেজ র‍্যাপিংয়ের মূল্য তালিকা দেখিয়ে সমস্যাটি সমাধান করেছেন।

তিনি আরো বলেন, “আমি ২০২২ সালে অক্টোবরে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ইমিগ্রেশন পুলিশের হয়রানির শিকার হয়েছে, এমন অভিযোগ পাইনি। তবে যে কয়েকজনকে ইমিগ্রেশন পুলিশ ফেরত পাঠিয়েছে তাদের প্রবাসে যাওয়ার ডকুমেন্ট ঠিকঠাক ছিল না।”

“এছাড়া, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রতিবেদনের বিষয়ে আমরা ইতোমধ্যে ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানিয়েছি। বিমানবন্দর পরিচালনায় যেসব কর্মকর্তার বিষয়ে সন্দেহ তৈরি হয়েছে তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে,” যোগ করেন তিনি।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
Situs Toto
toto togel
slot toto
Toto slot gacor
bacan4d
totoslotgacor
bacan4d
bacan4d slot gacor
bacan4d login
Bacan4d
bacan4d
bacan4d bonus
Toto gacor
Toto gacor
slot gacor hari ini
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d link alternatif
slot gacor bett 200
situs toto
SITUS TOTO
toto 4d
toto gacor
Slot Toto
Slot Toto
Slot Toto
Situs toto
Slot toto
Slot Dana
Slot Dana
Judi Bola
Judi Bola
Slot Gacor
toto slot
bacan4d toto
bacan4d akun demo slot
bacantogel
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacantoto
bacan4d
Bacan4d Login
slot demo
Bacan4d Toto
toto gacor
Slot Gacor
Live Draw
Live Draw Hk
toto slot
Bacan4d slot gacor
toto macau
toto slot
Toto Gacor
slot dana
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
Slot Dp Pulsa
Bacan4d Login
toto slot
Bacansports/a>
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
toto slot
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
slot gacor
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
toto slot
slot demo
toto slot gacor
bacansports Slot toto toto slot Slot toto Slot dana Slot toto slot maxwin slot maxwin toto slot toto slot slot dana
Toto Bola
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
bacan4d
ts77casino
situs toto
slot pulsa
bacansports
situs toto
slot toto
situs toto
slot toto
situs toto
toto slot
bacansport
bacansport
bacansports
slot toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
situs toto
situs toto
xx1toto
toto slot
xx1toto
xx1toto
slot qriss
Slot Toto
slot dana
situs toto
slot toto
slot dana
Situs Toto Slot Gacor
xx1toto
xx1toto
bacan4d
xx1toto
xx1toto
toto slot
situs toto slot gacor
toto gacor
toto gacor
toto gacor
toto gacor
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
situs toto
Slot Toto
Toto Slot
Slot Gacor
Slot Gacor
Slot Gacor
slot toto
Toto Slot
slot gacor
situs togel
Toto Slot
bacan4d
bacan4d