দেড় লাখ কোটি নতুন তারার সন্ধান, পৃথিবী থেকে কত দূরে আছে, জানেন
ভাবুন তো, সন্ধ্যারাতে পদ্মাপাড়ে বসে আছেন আপনি। হাতের কাছে থাকা শখের টেলিস্কোপ নিয়ে মহাকাশের সৌন্দর্য উপভোগ করার সময় হঠাৎ করেই নতুন কোনো তারা আবিষ্কার করে ফেললেন আপনি। কেমন লাগবে? নিশ্চিতভাবে বলা যায়, নতুন তারার খোঁজ পেয়ে ভীষণ আনন্দ লাগবে আপনার। এবারে এমন একদল বিজ্ঞানীর কথা ভাবুন তো, যাঁরা একসঙ্গে দেড় ট্রিলিয়ন বা দেড় লাখ কোটি (এক ট্রিলিয়ন সমান এক লাখ কোটি) নতুন তারার খোঁজ পেয়েছেন। শুনতে অবাক লাগলেও যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার একদল বিজ্ঞানী ইউক্লিড স্পেস টেলিস্কোপ ব্যবহার করে সত্যি সত্যিই বিপুলসংখ্যক নতুন তারার সন্ধান পেয়েছেন। এসব তারা থেকে বিচ্ছুরিত আলোর পরিমাণ তেমন বেশি নয়। পৃথিবীতে অন্ধকার রাতে আকাশে যেমন তারার আভা দেখা যায়, তার চেয়ে ১০ হাজার গুণ কম আভা ছড়ায় এসব তারা।
পার্সিয়াস ক্লাস্টারের ছায়াপথে অবস্থান করা তারাগুলোর নিজস্ব ছায়াপথ নেই। এসব তারার আলো খুবই ক্ষীণ। পার্সিয়াস ক্লাস্টার পৃথিবী থেকে ২৪ কোটি আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত, যার ভর প্রায় ৬৪০ ট্রিলিয়ন সূর্যের সমান। ইউক্লিড স্পেস টেলিস্কোপের মাধ্যমে বর্তমানে বিজ্ঞানীরা এসব তারা বিশ্লেষণ করছেন। ইউক্লিডের প্রাথমিক লক্ষ্য হলো ডার্ক এনার্জি নিয়ে তথ্য সংগ্রহ করা। আরকাইভ বিজ্ঞান সাময়িকীতে এসব তারার তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
যুক্তরাজ্যের নটিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী নিনা হ্যাচ বলেন, ‘এসব তারার আলোর খোঁজ আমাদের পাওয়ার কথা নয়। ইউক্লিডের মাধ্যমে আলোর সূক্ষ্ম অবস্থান শনাক্ত করার কারণে আমরা দেড় ট্রিলিয়ন তারার খোঁজ পেয়েছি। ইউক্লিডের ক্ষমতা দেখে আমরা অবাক হয়েছি। তারার আলো আমাদের অন্ধকার পদার্থকে বুঝতে সাহায্য করতে পারে। বিভিন্ন ছায়াপথের মাঝের অবস্থানের তারা সম্পর্কে জানতে পারলে ডার্ক এনার্জির অনেক রহস্য বোঝা যাবে। নতুন খোঁজ পাওয়া তারার রং, উজ্জ্বলতা বিশ্লেষণ করে বোঝা যাচ্ছে, এসব তার ছোট ছায়াপথ থেকে তৈরি হয়েছে।’
ম্যাক্স-প্ল্যাঙ্ক ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানী ম্যাথিয়াস ক্লুগে বলেন, পার্সিয়াস তারামণ্ডলের এসব তারাকে অনাথ তারা বলা যায়। দেড় ট্রিলিয়ন তারা গুচ্ছ আকারে অবস্থান করছে। বিশাল আয়তনে গুচ্ছ আকারে এসব তারা ছড়িয়ে আছে। এসব তারা দুটি উজ্জ্বল ছায়াপথ এনজিসি ১২৭৫ ও এনজিসি ১২৭২-এর মধ্যে একটি বিন্দুকে প্রদক্ষিণ করছে৷