Hot

দেড় হাজার কোটি টাকার ভোট

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য দেড় হাজার কোটি টাকার বেশি ব্যয় ধরে প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বিগত একাদশ সংসদ নির্বাচনে ৭০০ কোটি টাকার বেশি ব্যয় হলেও এবারের ব্যয় দ্বিগুণ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সে হিসেবে চলতি অর্থবছরে সংসদ নির্বাচনের জন্য দ্বিগুণ ব্যয় বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এর বড় অংশ ব্যয় হবে নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে।

চলতি বছরের ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ অথবা ২০২৪ সালের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন করার পরিকল্পনা ধরে কাজ এগিয়ে নিচ্ছে কমিশন। এ ক্ষেত্রে নভেম্বরের শুরুতে তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে। তবে এবারে সব দলকে নির্বাচনে আনতে ভোটের একাধিক তারিখও রাখা হতে পারে। ভোটের প্রাথমিক তারিখ চিন্তা করা হচ্ছে ২৩ ডিসেম্বর, ৩০ ডিসেম্বর ও ৬ জানুয়ারি। এবারে ৫০ থেকে ৬০ দিন হাতে রেখেই তফসিল দেবে কমিশন। এ ছাড়া ৩০০ আসনেই ব্যালট পেপারে ভোট করতে রোডম্যাপ অনুযায়ী প্রস্তুতিমূলক কাজ চলছে; নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন কার্যক্রম দ্রুত শেষ হবে। নির্বাচন সামনে রেখে সারা দেশে মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের ঢেলে সাজানো হচ্ছে। গত ৩০ জুলাই ভোট কেন্দ্র ও কক্ষ নির্ধারণে সারা দেশে কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়েছে ইসি। ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, নতুনদের নিয়ে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের সময় ভোটারের সংখ্যা দাঁড়াবে ১১ কোটি ৯০ লাখের বেশি। এত ভোটারের নির্বাচনে প্রায় ৪৫ হাজার কেন্দ্র, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা মিলিয়ে ১০-১২ লাখের মতো জনবল বিভিন্ন দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবে। ব্যালট পেপার, ব্যালট বক্স, নির্বাচনী সামগ্রী, প্রশিক্ষণ, পরিবহন, জ্বালানিসহ নির্বাচন পরিচালনায় অন্তত ৬০-৭০টি খাত থাকবে; যেগুলোয় এ টাকা ব্যয় হবে। এ ছাড়া প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের খরচ ও পারিশ্রমিক বেড়ে যাওয়ায় প্রতিবারই সে অনুযায়ী নির্বাচনী ব্যয় বাড়ছে। ভোট গ্রহণে যতজন কর্মকর্তা লাগে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য প্রয়োজন হয় তার চেয়ে বেশি। পুরো নির্বাচন পরিচালন ব্যয়ের একটি বড় অংশ চলে যায় আইনশৃঙ্খলা খাতে। ইসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, চলতি অর্থবছরে ইসির বরাদ্দ ২ হাজার ৪০৬ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। বরাদ্দের মধ্যে পরিচালন খাতে ২ হাজার ১২৪ কোটি ৪ লাখ এবং উন্নয়ন খাতে ২৮২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা রাখা হয়েছে। তবে সংসদ নির্বাচনের জন্য ১ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকার প্রয়োজন হবে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘সংসদ নির্বাচনের জন্য যে টাকা প্রয়োজন হবে তা রয়েছে। নির্বাচনের বাজেটে কোনো ঘাটতি হবে না। এবারে বাজেটে আমরা ২ হাজার ৪০৬ কোটি টাকা পেয়েছি। সংসদ নির্বাচনের জন্য যা দরকার তা পেয়েছি।’ তিনি বলেন, ‘আমরা ১ হাজার ৩২৮টি নির্বাচনের জন্য টাকা চেয়েছিলাম, সেভাবেই এসেছে। সেই বরাদ্দের মধ্যে সংসদ, উপজেলা ছাড়া স্থানীয় নির্বাচনও রয়েছে।’

সবশেষ একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে ২০১৮ সালে নির্বাচন কমিশন ভোটের জন্য ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা চেয়েছিল। এর মধ্যে সংসদ নির্বাচনের জন্য ৭০০ ও উপজেলা নির্বাচনের জন্য ৫০০ কোটি।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিুল আউয়াল বলেছেন, ‘ভোট ডিসেম্বরের লাস্ট উইকের আগে সম্ভব না। এটা তো আমাদের প্ল্যানে (রোডম্যাপে) বলে দেওয়া আছে। ডিসেম্বরের লাস্ট উইক অথবা জানুয়ারির ফার্স্ট উইক।’ সিইসি বলেন, তফসিল কবে হতে পারে সে সিদ্ধান্ত কমিশন সভায় হবে। সেটা নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহেও হতে পারে। সাধারণত ৫০-৬০ দিন আগে তফসিল হয়। তবে অক্টোবরের আগে তফসিল দেওয়া সম্ভব না বলে জানান তিনি। সিইসি বলেন, ‘কবে তফসিল দিতে হবে এমন কোনো বিষয় নির্বাচনী আইন নেই। তফসিলের সঙ্গে ভোটের সম্পর্ক নেই। তফসিল আমি তিন মাস আগেও দিতে পারি, চার মাস আগেও দিতে পারি। নির্বাচনের দিন, নির্বাচনের দিনটা ইমপর্ট্যান্ট। নির্বাচনের ব্যাপারে আইন আছে কখন নির্বাচন হতে হয়, ৯০ দিনের মধ্যে। তফসিল কবে দিতে হয় এ ব্যাপারে কোনো কিছু বলা নেই।’

সাংবিধানিকভাবে ২০২৪ সালের ২৯ জানুয়ারির আগের ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে কমিশনকে। সে ক্ষেত্রে ১ নভেম্বর শুরু হবে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ক্ষণগণনা। নির্বাচন কর্মকর্তারা বলছেন, প্রথা অনুযায়ী ভোটের তারিখের আগে ৪০-৪৫ দিন সময় রেখে তফসিল ঘোষণা করে কমিশন। এ ক্ষেত্রে মনোনয়নপত্র জমা, বাছাই, প্রত্যাহার এবং প্রতীক বরাদ্দের পর প্রচারের জন্য সময় রাখা হয়। প্রচারের জন্য সর্বোচ্চ তিন সপ্তাহ, মনোনয়নপত্র জমায় ১০ থেকে ১৫ দিন, বাছাই চার দিন, আপিল নিষ্পত্তি চার থেকে সাত দিন, প্রত্যাহারের জন্য সাত দিন সময়ও দেওয়া হয়। নির্বাচন কমিশন বৈঠক করে সার্বিক বিষয় পর্যালোচনার পর তফসিল চূড়ান্ত করে। গত ১১টি সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর মনোনয়নপত্র জমা থেকে ভোটের তারিখ পর্যন্ত সর্বনিম্ন ৪২ দিন এবং সর্বোচ্চ ৭৮ দিন সময় রেখে তফসিল ঘোষণার নজির রয়েছে। নবম, দশম ও সবশেষ একাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয় যথাক্রমে ২০০৮ সালের ২ নভেম্বর, ২০১৩ সালের ২৫ নভেম্বর ও ২০১৮ সালের ৮ নভেম্বর। এবার ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে বা জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ভোট করতে গেলে নভেম্বরের শুরু থেকে দ্বিতীয়ার্ধের মধ্যেই তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে। নির্বাচনের ক্ষণগণনা শুরুর পরপরই ভোটের যাবতীয় প্রস্তুতি শেষ করার পাশাপাশি আন্তমন্ত্রণালয় সভা ও সবশেষ প্রস্তুতি অবগত করে প্রথা অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয়টি রয়েছে। এরপর কমিশন বসে ভোটের দিনক্ষণ চূড়ান্ত করে।

সেপ্টেম্বরে কেন্দ্র চূড়ান্ত : দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ভোট কেন্দ্রের তালিকা তৈরির কাজ চলছে। সবকিছু ঠিক থাকলে ১৬ আগস্ট কেন্দ্রের খসড়া তালিকা প্রকাশ করবে ইসি। খসড়া তালিকার ওপর দাবি-আপত্তি গ্রহণ হবে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত। দাবি-আপত্তি নিষ্পত্তির শেষ তারিখ ১১ সেপ্টেম্বর এবং ১৭ সেপ্টেম্বর খসড়া ভোট কেন্দ্রের তালিকা চূড়ান্ত করা হবে। তবে ভোটের অন্তত ২৫ দিন আগে তার গেজেট প্রকাশের আশা করছে ইসি

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
Toto Slot
slot gacor
slot gacor
slot toto
Bacan4d Login
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot bacan4d
bacan4d togel
bacan4d game
slot gacor
bacan4d login
bacantoto 4d
toto gacor
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
slot77 gacor
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
bacansports
slot toto
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d