‘দেশের অধিকাংশ কসমেটিকস পণ্য নকল’
দেশের বাজারে যেসব কসমেটিক পণ্য বিক্রি হচ্ছে সেগুলোর প্রায় প্রতিটিই নকল পণ্য; যা জনস্বাস্থ্যের ওপর ব্যাপক ঝুঁকি তৈরি করছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) এ এইচ এম সফিকুজ্জামান।
আজ মঙ্গলবার (৪ জুন) অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের নতুন সভাকক্ষে মিডিয়া ফেলোশিপ বিষয়ক এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশে নিম্নমানের বিউটি প্রোডাক্টস, স্কিন কেয়ার পণ্য তৈরি হচ্ছে। ঢাকায় অভিযান চালানোর ফলে, অসাধু চক্র ঢাকার বাইরে চলে যাচ্ছে। সেখান থেকে নকল পণ্য তৈরি করে সারা দেশে ছড়িয়ে দিচ্ছে। এসব নিম্নমানের পণ্যে ক্যান্সার সৃষ্টির উপাদান লেড, ক্রোমিয়াম ব্যবহার করা হচ্ছে। আমরা দেখেছি, দেশের প্রায় প্রতিটি কসমেটিক পণ্যই নকল। এসব নকল কসমেটিক পণ্য বিপণন এসিড ছুঁড়ে মারার মতো অপরাধ।
তিনি বলেন, ‘সুপারশপগুলো অথেনটিক সোর্স থেকে পণ্য সংগ্রহ করে। যেহেতু তারা বড় ব্যবসা করে, সুনাম রক্ষার্থে নকল পণ্য রাখা তাদের জন্য হুমকি। যে কারণে সেখানে দামের তারতম্য আছে। সেসব পণ্যকেও শতভাগ নিরাপদ বলাটা সেনসিটিভ।
দেশে ইকোনমিক গ্রোথ হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সৌন্দর্য্য চর্চায় আমরা এগিয়েছি। মেয়েদের পাশাপাশি ছেলেরাও এখন কসমেটিক পণ্য ব্যবহার করছে। ছেলেদেরও পার্লার আছে। আমাদের গার্মেন্টস কর্মীরাও সৌন্দর্য্য চর্চার জন্য বাজেট রাখেন। কিন্তু বিউটি পার্লারগুলোও লাগেজ পার্টির কাছ থেকে প্রোডাক্ট নিচ্ছে। স্মার্ট বাংলাদেশে যদি নকল পণ্যে ভরে যায় তাহলে সেটা মানা সম্ভব না।’
চোরাই পণ্যের জন্য অতিরিক্ত শুল্কারোপ দায়ী বলে মনে করেন ভোক্তার ডিজি। তিনি বলেন, ‘দেশে প্রায় ১ বিলিয়ন ডলারের কসমেটিক্স মার্কেট রয়েছে। ভোক্তা আইনের ৫৪ ধারায় ব্যবসায়ীদের প্রোটেকশন দেয়ার কথা বলা আছে। নকল পণ্যের দৌরাত্ম্যে আসল পণ্য তৈরিকারকরা ব্যবসা করতে পারছেন না। বর্তমানে কসমেটিক পণ্যে ১২৮% ডিউটি আরোপ করা আছে। যেকারণে অবৈধ চোরাই পণ্য দেশে ঢুকছে। সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে।’
দেশীয় ইন্ডাস্ট্রিকে বাঁচাতে আমদানি নিরুৎসাহিত করার তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, এলডিসি উত্তরণের পর প্রোডাক্ট ডাইভার্সিফিকেশন হিসেবে কসমেটিক পণ্য রফতানিযোগ্য খাত হতে পারে।
এসময় গণমাধ্যমকর্মীদের প্রতিবেদন তৈরির মাধ্যমে অসাধু ব্যবসায়ীদের চিহ্নিত করে মার্কেটে স্থিতিশীলতা ফেরাতে ও জনসচেতনতা তৈরি করার আহ্বান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে ভোক্তা—অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর ও অ্যাসোসিয়েশন অব স্কিনকেয়ার অ্যান্ড বিউটি প্রোডাক্টস ম্যানুফ্যাকচার্স অ্যান্ড ইমপোর্টার্স অব বাংলাদেশের (এএসবিএমইবি) যৌথ উদ্যোগে মিডিয়া ফেলোশিপের জন্য ৩১ জন সংবাদকর্মীর নাম ঘোষণা করা হয়।
তিন মাসব্যাপী এই ফেলোশিপে নির্বাচিত সংবাদকর্মীরা বিভিন্ন সেমিনার, ওয়ার্কশপ এবং কেস স্টাডিতে অংশ নেবেন এবং এসবের ভিত্তিতে জনসচেতনতা বাড়াতে প্রতিবেদন প্রকাশ করবেন।