Bangladesh

দেশের শ্রম ও মানবাধিকার নিয়ে ইইউর উদ্বেগ

জিএসপি অব্যাহত রাখতে অঙ্গীকার বাস্তবায়নের তাগিদ

বাংলাদেশের শ্রম ও মানবাধিকার নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। একই সঙ্গে সংস্থাটি শ্রম নিরাপত্তার মান উন্নয়নের কথাও বলেছে। তারা বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যে জেনারেলাইজ সিস্টেম অব প্রিফারেন্স (জিএসপি) অব্যাহত রাখতে শ্রম অধিকার প্রতিষ্ঠায় অঙ্গীকারের বাস্তবায়নের হার আরো বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছে। পাশাপাশি শ্রম ও মানবাধিকারের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সংস্কার করতে বলেছে।

এভরিথিং বাট আর্মস (ইবিএ) বাণিজ্য ব্যবস্থার অধীনে বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি মূল্যায়ন করতে ১২ থেকে ১৬ নভেম্বর ঢাকা সফর করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পর্যবেক্ষক মিশন। বাংলাদেশ সফর করে ২১ নভেম্বর ইউরোপীয় কমিশনে তারা প্রতিবেদন দেয়। প্রতিবেদনে বাংলাদেশ ছাড়াও কম্বোডিয়া ও মিয়ানমার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। 

বাংলাদেশ শ্রম আইনের আরো সংশোধনীর বিষয়ে সরকারের প্রতিশ্রুতিকে স্বাগত জানায় ইইউ।

জিএসপি পেতে জাতীয় কর্মপরিকল্পনার অধীনে সম্মত সময়সূচিতে লক্ষ্য অর্জনে বিলম্ব হওয়ায় দ্রুত প্রয়োজনীয় সংস্কারের তাগিদ দেওয়া হয়েছে

প্রতিবেদনে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে শ্রম ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা নিয়ে মূল উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। বাংলাদেশে জিএসপি অব্যাহত রাখতে শ্রম ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় আরো জোর দিতে বলা হয়েছে। মানবাধিকারের ক্ষেত্রে ইবিএর মূল সনদগুলো মেনে চলার বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে। নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকারবিষয়ক আন্তর্জাতিক চুক্তি (আইসিসিপিআর) বাস্তবায়ন, মত প্রকাশের স্বাধীনতা, সমাবেশ ও সংগঠিত হওয়ার স্বাধীনতার সুরক্ষা এবং নাগরিক সমাজের দায়িত্ব পালনের সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। একই সঙ্গে নির্যাতনের অভিযোগ, অন্যায় আচরণ, বিচারবহির্ভূত হত্যা ও গুমের বিষয়ে তদন্তের আহ্বান জানানো হয়।

শ্রম অধিকার চর্চার বিষয়ে বলা হয়, বাংলাদেশকে শ্রমনীতি বাস্তবায়নে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ মান নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি শ্রম খাতে জাতীয় কর্মপরিকল্পনা (এনএপি) পুরোপুরি বাস্তবায়নের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।

এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার বাণিজ্যসচিব তপন কান্তি ঘোষ তাঁর দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, শ্রম অধিকার উন্নয়নে আইএলও এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে কাজ করছে সরকার। আর তাই বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা আরোপের মতো কোনো পরিস্থিতি বাংলাদেশে নেই।

বিষয়টি নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কোনো চাপ অনুভব করছে না। শ্রম অধিকার ও মানবাধিকার নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন যে নতুন মেমোরেন্ডাম বা স্মারক প্রকাশ করেছে, তার সঙ্গে বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচনের কোনো সম্পর্ক নেই। এর আওতায় নিষেধাজ্ঞা আরোপের যে নীতি আছে, তা নিয়েও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কোনো চাপ অনুভব করছে না।

এই বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে চিঠি পাওয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বাইডেন প্রশাসনের মেমোরেন্ডামের সঙ্গে বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কোনো সম্পর্ক নেই। আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সুপারিশ ও উদ্বেগের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে পরিস্থিতি উত্তরণে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। আমরা পুরো বিষয়টি পর্যালোচনা করছি।’

তিনি আরো বলেন, ২০১৩ সালের রানা প্লাজা ধসের আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কিছু পণ্যের জিএসপি পাওয়া যেত। রানা প্লাজা ধসের পর সেটি বন্ধ হয়ে যায়। যে সুবিধা পাওয়া যেত তা খুবই সীমিত। এখন সেখানে উচ্চ শুল্ক দিয়েই পণ্য রপ্তানি হচ্ছে। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন শুল্কমুক্ত সুবিধা দিচ্ছে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button