Trending

দেশে মাদকাসক্ত দেড় কোটি

♦ ভারত ও মিয়ানমার থেকে আসছে ভয়ংকর সব মাদক ♦ ঝোঁক বেশি তরুণদের, ৮০ ভাগেরই বয়স ১৮ থেকে ৩৫ বছর

আন্তর্জাতিক মাদক চোরাচালানের রুট গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গেল, গোল্ডেন ওয়েজ, গোল্ডেন ভিলেজ ও গোল্ডেন ক্রিসেন্টের প্রভাবে বাংলাদেশ রীতিমতো ঝুঁকিপূর্ণ দেশ। কারণ ভারত ও মিয়ানমার থেকে ভয়ংকর সব মাদকের অনুপ্রবেশ ঘটছে বাংলাদেশে। জল, স্থল ও আকাশ পথে স্রোতের মতো মাদক আসছে। আবার নিত্যনতুন মাদকের প্রতি মাদকসেবী তরুণদেরও ঝোঁক বেশি থাকে। ফলে শহর-নগর, পাড়া-মহল্লা সবখানেই তৈরি হয়েছে মাদকব্যবসায়ীদের বিস্তৃত নেটওয়ার্ক। ফেনসিডিল, ইয়াবা, কোকেন কিংবা ক্রিস্টাল মেথ-আইস, কুশ, খাট, ডিওবিসহ সব ধরনের মাদকই মিলছে দেশজুড়ে। চাইলে মিলছে হোম ডেলিভারিও। সারা দেশে আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এই মাদক। আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে মাদকাসক্তের সংখ্যাও।

সরকারিভাবে মাদকসেবীর সংখ্যা না থাকলেও বেসরকারি সংস্থা মাদকদ্রব্য ও নেশা নিরোধ সংস্থার (মানস) হিসেবে দেশে বর্তমানে মাদকাসক্তের সংখ্যা প্রায় দেড় কোটি। এর মধ্যে ১ কোটি মাদকাসক্ত এবং বাকি ৫০ লাখ মাঝেমধ্যে মাদক সেবন করে। বেড়েছে নারী মাদকসেবীর সংখ্যাও। তরুণরা সবচেয়ে বেশি মাদকের ঝুঁকিতে রয়েছে। ৮০ শতাংশ মাদক ব্যবহারকারীর বয়স ১৮ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে। মাদক চোরাচালান এবং পরিবহনের কাজে শিশু ও মহিলাদের ব্যবহার করা হচ্ছে যা খুবই ভয়ংকর।

বলা হয়েছে, দেশের মোট জনসংখ্যার ৮.৭৫ শতাংশ মাদকসেবী। গড়ে প্রতি ১২ জনে একজন মাদকসেবী। একেকজন বছরে ৫৬ হাজার টাকা মাদকের পেছনে খরচ করে। সে হিসেবে বছরে ১ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা খরচ হচ্ছে মাদকের পেছনে।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের বার্ষিক প্রতিবেদন বলছে, ২০২২ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত এই তিন বছরে মাদকাসক্ত হয়ে সরকারি ও বেসরকারি মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রে গেছেন ১ লাখ ১০ হাজার ৬৭৫ জন মাদকসেবী। এ সময়ে রিহ্যাবে চিকিৎসা নেওয়া নারী মাদকাসক্ত বেড়েছে ৫ গুণ। আর ১৫ ও তার কম বয়সি মাদকাসক্ত বেড়ে হয়েছে তিন গুণ। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাব ও কোস্টগার্ডসহ সব আইন প্রয়োগকারী সংস্থার উদ্ধারকৃত মাদক, আসামি ও মামলার পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ১১ লাখ ৫২ হাজার ৫৯৫টি মামলায় ১৪ লাখ ৬২ হাজার ৭৮৯ জন আসামি গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩৮ কোটি ৭৮ লাখ ৫১ হাজার ৩৯৫ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, ১ কোটি ৩২ লাখ ৮১ হাজার ৫৪৮ বোতল ফেনসিডিল, ৩২ লাখ ৮ হাজার ৪২৭ বোতল বিদেশি মদ জব্দ করা হয়েছে।

মানসের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. অরূপ রতন চৌধুরী বলেন, দেশে মোট মাদকসেবী প্রায় দেড় কোটি। এর মধ্যে এক কোটি মাদকাসক্ত। মোট মাদকসেবীর ৮০ শতাংশ পুরুষ, আর ২০ শতাংশ নারী। মাদকাসক্তের ৮০ ভাগ অপরাধের সঙ্গে যুক্ত। সড়কে দুর্ঘটনা কবলিত যানবাহনের ৩০ ভাগ চালকই মাদকসেবী। দিনদিন নারীদের মধ্যে এ প্রবণতা বাড়ছে। এ ছাড়া নতুন নতুন মাদকেও আসক্তি বাড়ছে। বর্তমানে মাদকের দিকে কারও নজর নেই। ফলে মাদক মাফিয়া চক্র সুযোগ পেয়ে দেশব্যাপী মাদক ছড়িয়ে দিয়ে রমরমা ব্যবসা করছে। মাদক হলো সব অপরাধের জনক। খুন, ধর্ষণ, পারিবারিক কলহ থেকে শুরু করে ছিনতাইয়ের মতো ঘটনার বেশির ভাগ ঘটছে মাদকের কারণে। বাংলাদেশ অর্গানিক প্রোডাক্ট ম্যানুফ্যাকচারার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আবদুস সালাম জানান, দেশে সরকারিভাবে মাদকাসক্তদের কোনো পরিসংখ্যান নেই। তবে আমাদের পর্যালোচনায় দেশে মাদক সেবীর সংখ্যা প্রায় ২ কোটি। দেশে দৈনিক নেশা এবং মাদকে অপচয় প্রায় ১৫০ কোটি টাকা। মাদক ক্রয়ে বছরে পাচার হচ্ছে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
Toto Slot
slot gacor
slot gacor
slot toto
Bacan4d Login
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot bacan4d
bacan4d togel
bacan4d game
slot gacor
bacan4d login
bacantoto 4d
toto gacor
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
slot77 gacor
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
bacansports
slot toto
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor