দোহাজারী কক্সবাজার রেললাইন, পরিকল্পনায় গলদ!
টানা আট দিনের বর্ষণে ক্ষতিগ্রস্ত দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন
দোহাজারী-কক্সবাজার নতুন রেললাইন অপরিকল্পিতভাবে নির্মাণের ফলে চট্টগ্রামের অঞ্চলে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে দাবি স্থানীয়দের। তাদের মতে, পাহাড়ি এলাকায় প্রচুর ছড়া, খাল ও জলপ্রপাত আছে। অতিবৃষ্টি বা ঢলের সময় এগুলোর পানি দ্রুত বের হওয়ার জন্য রেলপথে কালভার্টের সংখ্যা বাড়ানো প্রয়োজন। কিন্তু এই রেলপথ পর্যন্ত ব্রিজ ও কালভার্ট ছিল না বলে দাবি তাদের।
রেল কর্তৃপক্ষের মতে, প্রকল্প নেওয়ার আগে যথাযথ সমীক্ষার মাধ্যমে রেলপথটি নির্মাণ করা হয়েছে। প্রকল্পের বিভিন্ন এলাকায় পানি নিষ্কাশনের ২৪৪টি কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছে। ১০০ বছরের বন্যার বিষয়টিও হিসেবে রাখা হয়েছিল। যে অংশে রেললাইন ডুবেছে, সেখানে প্রায় ২০ ফুট উঁচুতে লাইন করা হয়। তবে এবার অস্বাভাবিক বৃষ্টি হয়েছে বলে রেললাইন ডুবে গেছে।
তবে পাহাড়ি এলাকায় রেল ও সড়ক উড়াল পথে নির্মাণের পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের। তাদের মতে, বাংলাদেশ প্লাবনভূমির দেশ। এখানে পানি নিষ্কাশনের যথেষ্ট ব্যবস্থা রাখতে হয়। কিন্তু তা না করে বাঁধ দিয়ে রাস্তা ও রেলপথ নির্মাণ করা হচ্ছে। সমন্বিত পরিকল্পনার অভাবে এই সমস্যা তৈরি হচ্ছে বলে জানান তারা। এ বিষয়ে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. সামছুল হক জনকণ্ঠকে বলেন, ‘বাংলাদেশের প্লাবন ভূমির অবকাঠামোর উন্নয়ন হওয়া উচিত খুঁটির ওপর (এলিভেটেড)। কারণ বাংলাদেশের ভারি বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢল আগেও হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এর পরিমাণ এখনো আরও বাড়বে। তাই পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা থাকতে হবে। কিন্তু আমাদের দেশে বাঁধের ওপর রাস্তা নির্মাণ করা হয়। এটা সম্পূর্ণ ভুল।
এ ছাড়া পাহাড়ি এলাকায় সড়ক ও রেল হতে হবে উড়াল। কারণ পাহাড়ি ঢল যাতে দ্রুত নেমে যেতে পারে। আমাদের দেশে প্রকল্পের ফিজিবিলিটি স্টাডি হয় শুধু আইওয়াশ। আর পরিকল্পনা কমিশন তা না দেখেই পাস করে দেয়। তাই সমন্বিত পরিকল্পনার অভাবে এটা হচ্ছে। দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইনে ছোট ছোট কালভার্ট রাখা হয়েছে। কিন্তু তা পানি নিষ্কাশনের জন্য পর্যাপ্ত নয়। এই অঞ্চল দিয়ে পাহাড়ি এলাকার ঢল দ্রুত নেমে এসে সাগরে গিয়ে পড়ে। পানি নিষ্কাশনের পথে রেললাইনের মাধ্যমে বাঁধ দেওয়ায় পানি নামতে পারেনি।’
আখাউড়া-আগরতলা রেলপথের কথা উল্লেখ অধ্যাপক ড. মো. সামছুল হক বলেন, ‘আখাউড়া-আগরতলা রেলপথটি বাংলাদেশ ও ভারত যৌথভাবে নির্মাণ করা হচ্ছে। এখানে ভারতের আগরতলার ৫ কিলোমিটার অংশ নির্মাণ করা হয়েছে খুঁটির ওপর (এলিভেটেড)। আর বাংলাদেশের অংশ সাড়ে ৮ কিলোমিটার নির্মাণ করা হয়েছে বাঁধের ওপর। আখাউড়া-আগরতলা রেলপথের পুরোটাই পাহাড়ি এলাকা। এখানে পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টি প্রবণ এলাকা। তাই সব চিন্তা করে ভারত ঠিকেই উড়াল রেলপথ নির্মাণ করেছে। কিন্তু আমার তা করতে পারি নাই। এটা আমাদের অসমন্বিত পরিকল্পনার বাস্তবায়ন।’ তাই বাংলাদেশের প্লাবনভূমিতে অবকাঠামো নির্মাণ করতে হলে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থার উড়াল বা এলিভেটেড করার পরামর্শ দেন তিনি।
জানা গেছে, চট্টগ্রামের সম্প্রতি ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যায় নির্মাণাধীন দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথের প্রায় এক কিলোমিটার অংশের পাথর, ইটের খোয়া ও মাটি ধসে গেছে। এতে রেলপথের বিভিন্ন স্থানে রেললাইন দেবে গেছে। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা তৈরি হয়েছে চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার কেঁওচিয়া ইউনিয়নের তেমুহনী এলাকায়। এই অংশে প্রায় ৪৫০ মিটার রেললাইন তছনছ হয়ে গেছে। দূর থেকে দেখলে মনে হয় রেলপথটি আঁকাবাঁকা হয়েছে গেছে বলে স্থানীয়রা জানান। অথচ রেলপথটি আগামী মাসে উদ্বোধনের কথা ছিল। বন্যার কারণে নির্মাণাধীন রেলপথের প্রায় ৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে, যা মেরামত করতে এক থেকে দেড় মাস সময় লাগবে। এর ফলে উদ্বোধনের সময় আরও পিছিয়ে যেতে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।
ছোট কালভার্ট পানি নিষ্কাশনের জন্য যথেষ্ট নয় ॥ স্থানীয় সূত্র জানায়, চট্টগ্রামে সাম্প্রতিক এমন ভয়াবহ বন্যা হয়নি। রেললাইনের কারণে পানি নিষ্কাশনের পথ আটকে যাওয়ায় দক্ষিণ চট্টগ্রামের চন্দনাইশ, সাতকানিয়া ও লোহাগাড়া উপজেলার অন্তত ১৫ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তলিয়ে গেছে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক এবং উপজেলার সংযোগ সড়কগুলোর সব ক’টি। শত বছরের মধ্যে এমন ভয়াবহ বন্যা তারা দেখেননি। চট্টগ্রামের দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পকে সমতট, পাহাড় ও বিল ঘেঁষে নির্মিত এ প্রকল্পে পর্যাপ্ত ব্রিজ, কালভার্ট না থাকায় বন্যার পানি সরতে পারেনি। ওই এলাকায় বন্যা নতুন কিছু নয়। এর আগেও বহুবার বন্যা হয়েছে। তবে ক্ষয়ক্ষতি-বিপর্যয় এতটা হয়নি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, যেখানে রেললাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেগুলো ছিল ফসলি বিল। প্রতি বছর পাহাড়ি অঞ্চল থেকে ভাটি এলাকা সাতকানিয়া, দোহাজারী, চন্দনাইশ উপজেলায় পানির ঢল নামে, যে পানি বিল দিয়ে প্রবাহিত হয়। কিন্তু নতুন বসানো রেললাইনে পানি চলাচলের জন্য পর্যাপ্ত কালভার্ট তৈরি না করায় বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। গত কয়েক দশকে এ বছরের মতো বন্যার মুখোমুখি তারা হয়নি। এর আগে ১৯৯৭, ২০১৯ সালে বন্যা হলেও এ বছর পানি তাও ছাড়িয়ে গেছে। এবার বৃষ্টির পানি নামতে না পারায়ই এই দুর্ভোগ বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
কেঁওচিয়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা দুর্জয় রায়হান বলেন, ‘বান্দরবানের পাহাড়ি ঢল পূর্ব দিক থেকে পশ্চিম দিকে আসে। যে পরিমাণ পানি এসেছে, রেললাইনের কারণে তা যেতে পারছে না। এ কারণে পূর্ব দিকে পানি জমে আছে।’ এই ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের তেমুহুনি এলাকার বাসিন্দা সাদেক হোসেন বলেন, ‘২০১৯ সালেও বন্যা হয়েছিল। সেবার আমার ঘরের উঠানে পানি হলেও ঘরে ঢোকেনি। কিন্তু এ বছর ঘরে কোমর সমান পানি। বন্যার পানি নামে পূর্ব দিক থেকে। ওই দিকেই আমাদের বাড়ি। কিন্তু এবার পানি রেললাইনের কারণে পানি নামতে পারেনি।’
স্থানীয়রা জানান, পাহাড়ি এলাকায় প্রচুর ছড়া, খাল ও জলপ্রপাত আছে। অতিবৃষ্টি বা ঢলের সময় এগুলোর পানি দ্রুত বের হওয়ার জন্য রেলপথে কালভার্টের সংখ্যা বাড়ানো প্রয়োজন। স্থানীয়দের দাবির মুখে প্রকল্প এলাকায় মোট ২৪৪টি কালভার্ট স্থাপন করা হয়। তবে এ সংখ্যাও যথেষ্ট নয়। এ ছাড়া কালভার্টের দৈর্ঘ্য পাঁচ থেকে ৪৫ মিটার। এত ছোট কালভার্ট পানি নিষ্কাশনের জন্য যথেষ্ট নয়। অপরিকল্পিতভাবে দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন নির্মাণের কারণে বন্যা পরিস্থিতি এত ভয়াবহ হয়েছে। মানুষ কষ্ট পেয়েছে। ক্ষয়ক্ষতি বেড়েছে। রেললাইনটি বেড়িবাঁধের মতো উঁচু করে নির্মাণ করা হয়েছে, যে কারণে পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়। পর্যাপ্ত কালভার্ট-ব্রিজ রাখা হয়নি। এ কারণে বন্যা পরিস্থিতি খারাপ হয়েছে।
তবে রেল কর্তৃপক্ষের দাবি ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার কেঁওচিয়া ইউনিয়নের তেমুহনী এলাকায় নির্মাণাধীন রেলপথের ৪৫০ মিটার অংশে পাথর ও ইটের খোয়া সরে গেছে। এর ফলে কিছু কিছু এলাকায় রেলপথ দেবে গেছে। দুই-তিন সপ্তাহের মধ্যে রেলপথটি পুরোপুরি ঠিক হয়ে যাবে বলে প্রকল্পের সংশ্লিষ্টরা জানান।
এ বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক মো. মফিজুর রহমান জনকণ্ঠকে বলেন, পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টি সৃষ্ট বন্যায় সাতকানিয়া তেমুহনী এলাকায় এক-দেড় কিলোমিটার অংশে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৪৫০ মিটার রেলপথে মাটি ও পাথর সরে যওয়ার কারণে বসে গেছে। এটা ঠিক করতে দুই-তিন সপ্তাহ লাগবে। পানি নিষ্কাশনের জন্য যথেষ্ট ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কালভার্টের সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে। যদি রেললাইনের কারণে বন্যা হতো, তা হলে এক পাশে পানি থাকত, অন্য পাশে থাকত না। কিন্তু এবার তো দুই পাশে সমান সমান পানি ছিল। তবে সকল কাজ শেষ করে আগামী অক্টোবরে রেলপথটি উদ্বোধন করা যাবে বলে জানান তিনি।
১৮ হাজার কোটি টাকার ব্যয়ের রেলপথ ॥ প্রকল্প সূত্র জানায়, ট্রান্স এশিয়ান আন্তর্জাতিক রেলপথের অংশ হিসেবে দোহাজারী-রামু-কক্সবাজার-ঘুমধুম ১২৮ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পটি নেওয়া হয়। ২০১১ সালের ৩ এপ্রিল প্রকল্পটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০১৬ সালের ২৭ এপ্রিল প্রকল্পটি ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্প হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। পুরো প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল ১৮ হাজার ৩৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। এর মধ্যে এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ঋণ দিচ্ছে ১৩ হাজার ১১৫ কোটি টাকা। বাকি চার হাজার ৯১৯ কোটি সরকারের তহবিল থেকে ব্যয় করা হবে। এ পর্যন্ত প্রকল্পের ৮৮ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।
প্রকল্পটির কাজ ২০১০ সালের ১ জুলাই শুরু হয়। প্রথম পর্যায়ে ২০২২ সালের ৩০ জুন শেষ হওয়ার কথা ছিল। এখন তা ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। প্রকল্পটি দুটি অংশে ভাগ করে নির্মাণ করা হচ্ছে। এতে দোহাজারী থেকে চকরিয়া পর্যন্ত প্রথম অংশে যৌথভাবে কাজ করছে চায়নার সিআরইসি ও বাংলাদেশের তমা কনস্ট্রাকশন কোম্পানি। এ ছাড়া চকরিয়া থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত দ্বিতীয় অংশের কাজ যৌথভাবে করছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান চায়নার সিসিইসিসি ও বাংলাদেশের ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড।
প্রকল্পটির আওতায় দোহাজারী থেকে রামু ৮৮ কিলোমিটার, রামু থেকে কক্সবাজার ১২ কিলোমিটার এবং রামু থেকে ঘুমধুম পর্যন্ত ২৮ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ করা হচ্ছে। কিন্তু মিয়ানমারের সঙ্গে রোহিঙ্গা সমস্যার কারণে রামু থেকে ঘুমধুম সীমান্ত পর্যন্ত ২৮ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ হচ্ছে না। তাই প্রকল্পের দোহাজারী, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, হারবাং, চকরিয়া, ডুলাহাজারা, ইসলামাবাদ, রামু ও কক্সবাজার পর্যন্ত নয়টি স্টেশন নির্মাণ করা হবে। এ ছাড়া এক হাজার ৩৯১ কিলোমিটার ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে বলে রেলওয়ে সূত্র জানায়।
রেলপথটি নির্মাণে প্রথম পরিকল্পনা ব্রিটিশ আমলে ॥ রেলওয়ে সূত্র জানায়, ১৮৯০ সালে ব্রিটিশ আমলে প্রথম পরিকল্পনা নেওয়া হয় এই রেলপথ নির্মাণে। চট্টগ্রাম ও মিয়ানমারের আকিয়াব বন্দরের মধ্যে রেল যোগাযোগ স্থাপনের পর্যন্ত প্রায় সোয়াশ’ বছর আগে প্রথম আগ্রহ প্রকাশ করেছিল তৎকালীন ব্রিটিশ কলোনি মিয়ানমার।
১৮৯০ সালে মিয়ানমার রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ চট্টগ্রাম থেকে রামু ও কক্সবাজার হয়ে রেলপথ নির্মাণের জন্য সমীক্ষা চালানোর উদ্যোগ নেয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ১৯০৮-০৯ সালে মিয়ানমার রেলওয়ে সমীক্ষাও চালায়। এরপর ১৯১৭ থেকে ১৯১৯ সাল পর্যন্ত চট্টগ্রাম-দোহাজারী-রামু হয়ে আকিয়াব পর্যন্ত আবারও সমীক্ষা চালানো হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে প্রকল্পের কাজও শুরু হয়। তখন চট্টগ্রাম থেকে দোহাজারী পর্যন্ত ৫০ কিলোমিটারের মতো রেলপথ নির্মাণ করা হয়। কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে বাকি রেলপথ নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ভারত, পাকিস্তান ও মিয়ানমার তিনটি পৃথক রাষ্ট্র হিসেবে স্বাধীনতা লাভ করে। কিন্তু রেলপথ আর হয়নি।
জাপান রেলওয়ে টেকনিক্যাল সার্ভিস (জেআরটিএস) ১৯৭১ সালে এ পথে ট্রাফিক সম্ভাবনা সমীক্ষা করার উদ্যোগ নেয়। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ায় তা আর সম্ভব হয়নি। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর আবার উদ্যোগ নেওয়া হয় প্রকল্পটি নির্মাণে। তৎকালীন সরকারের অনুরোধে ১৯৭৬-৭৭ সালে আবার সমীক্ষা করে জেআরটিএস। পরে ১৯৯২ সালে এসকাপ কমিশন অধিবেশনে তিনটি ইউরো-এশিয়া রেল নেটওয়ার্ক স্থাপনের উদ্যোগ নেয়। এর একটি রুট বাংলাদেশ হয়ে মিয়ানমার যাওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। এরপর এই রুট নিয়ে আর তেমন আলোচনা করা হয়নি। তবে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর আঞ্চলিক সহযোগিতার অংশ হিসেবে আবারও এ রেলপথটি নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এরপর ২০১০ সালে দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু থেকে মিয়ানমারের কাছে ঘুমধুম পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প নেওয়া হয়।